Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

রবিবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৩

১৪ দিন পর কি পৃথিবীতে ফিরে আসবে চন্দ্রযান-৩?

Chandrayaan-3-will-return-to-Earth?

সম্পদ দে : ‌২৩ আগস্ট দিনটি সমস্ত ভারতীয়দের জন্য সব সময় একটি গর্বের দিন হয়ে থাকবে। কারণ, এই দিনই ভারত হয়ে উঠেছে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করা প্রথম দেশ। তবে, ভারতের এই মিশন চন্দ্রযান-৩ এর আয়ু কিন্তু মাত্র ১৪ দিন। এমনটাই কি বাস্তব ? এই ১৪ দিন বাদে চিরকালের মতো বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে প্রজ্ঞান ও বিক্রমের সঙ্গে ইসরোর যোগাযোগ ?‌ প্রশ্ন উঠছে সেই বিষয় নিয়ে। 

আসলে পৃথিবী থেকে চাঁদ পর্যন্ত পৌঁছানোর জন্য জ্বালানির প্রয়োজন হলেও চাঁদে পৌঁছে কাজ করতে গেলে লাগবে সূর্যের আলো। আর আমরা জানি যে, চাঁদের দিন এবং রাত্রি আমাদের পৃথিবীর মতো নয়। চাঁদের একদিন পৃথিবীর ১৪ দিনের সমান। 

আর সেই জন্যই ইসরো ২৩ তারিখ সন্ধে ৬টা বেজে ৪ মিনিটে ল্যান্ডার বিক্রমকে চাঁদে অবতরণ করিয়েছে। কারণ, ১৪ দিনের দীর্ঘ রাত্রি শেষে ওই সময় চাঁদে নতুন সূর্যোদয় হচ্ছিল। ফলে অবতরণ শেষে একটানা ১৪ দিন কাজ করার জন্য যথেষ্ট সূর্যের আলো পাবে বিক্রম ও প্রজ্ঞান। তবে এই ১৪ দিনের শেষেই আসবে সেই ভয়ংকর শীতল রাত, যা হয়তো কেড়ে নেবে চন্দ্রযান-৩ এর শক্তি।

ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞানের কাছে আছে আর মাত্র কয়েকটা দিন। এরপরই হয়ে যাবে চাঁদের দীর্ঘ ১৪ দিনের ভয়ংকর রাত। এই সময় এক ফোটাও সূর্যের রশ্মি প্রবেশ করবে না ওই এলাকাতে। ফলে সেই সময় ওখানকার তাপমাত্রা হয়ে উঠবে মাইনাস ৩০০ ডিগ্রী ফারেনহাইটের থেকেও কম। আর এত দিন, এত কম তাপমাত্রায় থাকার ফলে খারাপ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বিক্রম ও প্রজ্ঞানের যন্ত্রপাতির।

তবে এর মাঝেও সামান্য আসার আলো রয়েছে। দীর্ঘ ১৪ দিনের অন্ধকার শেষে আবারও সূর্যের আলো চাঁদের উপর পড়লে ল্যান্ডার ও রোভার সেই আলো থেকে শক্তি যুগিয়ে আবারও বেঁচে উঠলেও উঠতে পারে। যদিও এই সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীন। তবুও ইসরোর বিজ্ঞানীদের মধ্যে এইটুকু আশাই বেঁচে রয়েছে ব্যাপকভাবে।

কিন্তু এই ১৪ দিনে কি কি কাজ রয়েছে চন্দ্রযান-৩ এর খাতায় ? ল্যান্ডার বিক্রম তার ভেতরে থাকা চারটি পেলোড রম্ভা, চ্যাস্ট, অ্যারে ও ইলসা-র সাহায্যে চাঁদের মাটিতে থাকা খনিজ পদার্থ, চাঁদের ভূমিকম্প, চাঁদে সত্যি সত্যিই জল আছে কিনা– এই সমস্ত কিছুই পরীক্ষা করে দেখবে। সেই সঙ্গে আরো দেখবে যে, ভবিষ্যতে মানুষ চাইলে চাঁদে বসবাস করতে পারবে কিনা এবং চাঁদ থেকে পৃথিবীর প্রকৃত দূরত্ব কতটা।

তবে ইসরোর কাজ কিন্তু এখানেই শেষ নয়। প্ল্যানিং অনুযায়ী আর কিছুদিনের মধ্যেই আদিত্য এল 1 মিশনের মাধ্যমে সূর্যের দিকে ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্টে একটি কক্ষপথে রকেট পাঠাতে চলেছে ইসরোর বিজ্ঞানীরা। সূর্যের তাপমাত্রা, তাতে চলা বিশাল বড় বড় ঝড় এবং এর বাইরের স্তর সম্পর্কে গবেষণা করবে আদিত্য এল 1. তারপরে শুক্র‌গ্রহের উদ্দেশ্যেও একটি স্যাটেলাইট পাঠানোর কথা আছে ইসরোর।

এমনকি ভবিষ্যতে ইসরোর সবথেকে বড় মিশন গগনযানও হতে চলেছে খুব শীঘ্রই। যার মাধ্যমে ইসরো তিনজন মানুষকে মহাকাশে পাঠাতে চলেছে। এমনকি খবর অনুযায়ী এই তিনজন মহাকাশচারীর জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে ভারতীয় বায়ুসেনার তিনজন পাইলটকে, যাদের ট্রেনিং ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে। 

এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা, ভারতকে মহাকাশের উচ্চতা ছাড়িয়েও এগিয়ে যেতে দেখার জন্য। এর পাশাপাশি, নির্দিষ্ট সময়সীমার পর ল্যান্ডার বিক্রম এবং রোভার প্রজ্ঞানের ভবিষ্যৎ কি হয়, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে গোটা বিশ্ব।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন