Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

সোমবার, ৮ মে, ২০২৩

উপগ্রহের ধ্বংসাবশেষ আছড়ে পড়তে পারে পৃথিবীর উপর

 

Satellite-debris

সমকালীন প্রতিবেদন : ‌সাম্প্রতিক কিছু খবরে জানা গিয়েছে, পৃথিবীর দিকে ক্রমশ ধেয়ে আসছে মহাকাশে থাকা উপগ্রহের ধ্বংসাবশেষ। আর এই নিয়েই উদ্বেগ প্রকাশ করছেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। পৃথিবীর কক্ষপথে দুটি উপগ্রহের সংঘর্ষের কারণে এই সমস্যাটির সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে কয়েক টন ধ্বংসাবশেষ এখন আমাদের গ্রহের দিকে ধেয়ে আসছে।

ব্রিটেনের একজন শীর্ষ বিজ্ঞানী ডঃ ইমোজেন ন্যাপারের মতে, বর্তমানে পৃথিবীর কক্ষপথে প্রায় ৯০০০ উপগ্রহ রয়েছে এবং ২০৩০ সাল নাগাদ এই সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৬০ হাজার হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। মহাকাশে এতগুলি উপগ্রহ থাকায় সংঘর্ষের সম্ভাবনাও থাকবে আগের চেয়ে বেশি।  তবে বর্তমানে দুটি স্যাটেলাইটের সাম্প্রতিক সংঘর্ষ এখন একটি বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করেছে। কারণ, কয়েক ট্রিলিয়ন ধ্বংসাবশেষ আমাদের গ্রহের দিকেই আসছে।

ভবিষ্যতেও অন্য কোনও কৃত্রিম উপগ্রহের সঙ্গে এই স্পেস জাঙ্কের প্রভাবে বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটতে পারে। এর কারণ হল, সংঘর্ষের সময় উপগ্রহগুলি ভেঙে চুরমার হয়ে যায় এবং প্রচুর ধ্বংসাবশেষ তৈরি করে, যা পরে পৃথিবীতে ফিরে আসে।  অতএব, মহাকাশের ধ্বংসাবশেষের সমস্যা মোকাবেলা করা এবং সেই সঙ্গেই আমাদের গ্রহেরও আরো কোনো ক্ষতি প্রতিরোধ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন বর্তমানে পরিচ্ছন্নতার উদ্দেশ্যে মহাকাশের ধ্বংসাবশেষ পৃথিবীর দিকে পাঠিয়ে এই সমস্যাটি সমাধানের দিকে কাজ করছে। তবে আমাদের মনে হতেই পারে, মহাকাশ থাকতে এই আবর্জনাগুলি পৃথিবীতেই কেন পাঠাতে হবে? 

আসলে এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কারণ, বিভিন্ন উপগ্রহের ধ্বংসাবশেষ মহাকাশেই ঘুরতে থাকলে ভবিষ্যতে অন্যান্য কোনও উপগ্রহের সঙ্গে তার ধাক্কা লেগে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। সেইজন্যই এই আবর্জনাগুলি মহাকাশেই পৃথিবীর চারিদিকে রেখে দেওয়া সম্ভব নয়। 

তবে, এই সমাধানটি শুধুমাত্র একটি অস্থায়ী সমাধান। সমস্যার মূল কারণটি এইভাবে সমাধান করা সম্ভব নয়।মহাকাশের ধ্বংসাবশেষের ক্রমবর্ধমান পরিমাণ একটি বিশ্বব্যাপী সমস্যা, যার উপর জরুরীভিত্তিতে আলোচনা প্রয়োজন। বিশ্বব্যাপী মহাকাশ সংস্থা ও বিভিন্ন দেশের সরকার এরজন্য একত্রিত হ‌য়ে এই সমস্যার একটি ব্যাপক সমাধান তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ৷  

এর মধ্যে উন্নত স্পেস ক্লিনআপ প্রযুক্তির বিকাশ, কক্ষপথে উপগ্রহের সংখ্যা সীমিত করার জন্য উপায় তৈরি করা এবং দীর্ঘমেয়াদী মহাকাশ অনুশীলনে বিনিয়োগ অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। বিজ্ঞানের অগ্রগতির জন্য আমাদেরকে মহাকাশে বিভিন্ন উপগ্রহ পাঠাতে থাকতেই হবে। 

আমাদেরকে এটাও মাথায় রাখতে হবে যে, সেই মহাকাশযান এবং উপগ্রহগুলি একটানা একটা সময় নিজেদের কার্যক্ষমতা হারাবে। সেই সময় তাদেরকে হয় কক্ষপথেই অক্ষমভাবে ফেলে রাখতে হবে অথবা আমাদের পৃথিবীতেই আবার ফেরত আনতে হবে।

তবে দুই ক্ষেত্রেই কোথাও না কোথাও সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। মহাকাশে পৃথিবীর কক্ষপথে ছেড়ে দিলে তা অন্যান্য উপগ্রহের সঙ্গে সংঘর্ষের সম্ভাবনা তৈরি করবে। আবার পৃথিবীতে ফেরত আনতে গেলে তা যেখানে-সেখানে অবতরণ করানো সম্ভব নয়। 

মহাকাশ থেকে কোনো অক্ষম উপগ্রহ অথবা মহাকাশযান পৃথিবীতে ফেরত আনতে গেলে তাকে মহাসাগরের একটি নির্জন বিন্দুতে নিয়ে এসে ফেলা হয়, যাকে বলা হয়ে থাকে 'পয়েন্ট নিমো'। আর এর কারণেও পৃথিবীর সমুদ্রে আবর্জনার পরিমাণ বাড়তে থাকবে। যার কারণে হবে সমুদ্র দূষণ। ফলে যেখানে এই মুহূর্তে কয়েক টন আবর্জনা পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে, সেখানে কিভাবে এই আবর্জনা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব, তাই নিয়েও চিন্তার মধ্যে রয়েছেন দেশ-বিদেশের মহাকাশ বিজ্ঞানী থেকে শুরু করে সরকার কর্তৃপক্ষ।




‌‌

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন