সমকালীন প্রতিবেদন : ১৫ বছর ধরে নিখোঁজ থাকা এক নেপালি ব্যক্তিকে নেপালি দূতাবাসের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হল। সৌজন্যে হ্যাম রেডিও। ৫২ বছর বয়সের ওই ব্যক্তির নাম জান বাহাদুর। বাড়ি নেপালের সরলাই জেলার লালভিটি এলাকায়।
মাউন্ট এভারেস্টের পাদদেশ থেকে চড়াই উৎরাই পথ পার করে সীমান্ত পেরিয়ে ১৫ বছর আগে এদেশে ঢুকেছিলেন বাহাদুর। দার্জিলিং, শিলিগুড়ি হয়ে পাহাড় থেকে সমতল বাংলার শেষ সীমান্ত ভারতের বাংলাদেশ লাগোয়া হিঙ্গলগঞ্জের সুন্দরবনে চলে এসেছিলেন।
১৫ বছর আগের একটি দিনে নেপালের কাঠমন্ডুতে চিকিৎসকেরা কাছে গিয়েছিলেন বাহাদুর। সেখান থেকে আর বাড়ি ফেরা হয়নি। গত প্রায় সাত মাস ধরে তার আশ্রয়স্থল হয়ে ওঠে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার হিঙ্গলগঞ্জ সুন্দরবনের বিভিন্ন প্রান্ত।
মানসিক ভারসাম্যহীন এই ব্যক্তিকে প্রথমে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা দেখতে পান। সমাজসেবী সুশান্ত ঘোষ হ্যাম রেডিওর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। রাজ্য সম্পাদক অম্বরিশ নাগবিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ হয় তাঁর। এরপর হ্যাম রেডিও তাদের নেট ওয়ার্কের মাধ্যমে ওই ব্যক্তির পরিবারের সন্ধান চালাতে শুরু করে।
এদিকে, দীর্ঘ সাত মাস তাকে সেবা করে সুস্থ করে তোলেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা। এরপরই স্মৃতি ফিরতে থাকে ওই ব্যক্তির। নিজের নাম, পরিবারের কথা বলতে সক্ষম হন তিনি। কিভাবে তিনি নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন সেকথাও জনান।
জানা গেছে, পরিবারে তার স্ত্রী পূর্ণিমা বাহাদুর এবং দুই পুত্র সন্তান রয়েছে। এরপর হ্যাম রেডিওর মাধ্যমে যোগাযোগ শুরু হয় নেপালি দূতাবাসের সঙ্গে। সেখান থেকে ভারতীয় দূতাবাস পুরো বিষয়টা জানার পর দুই দেশের দূতাবাসের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সিদ্ধান্ত হয় যে, ওই ব্যক্তিকে নেপালি দূতাবাসের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নেপালি দূতাবাসের পদস্থ আধিকারিক সতীশ থাপা শনিবার হিঙ্গলগঞ্জে উপস্থিত হয়ে ওই ব্যক্তিকে নিয়ে প্রথমে কলকাতায় তাদের দূতাবাসে যান। সেখান থেকে ওই ব্যক্তিকে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে নিয়ে যাওয়া হবে। তারপর তাকে তার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন