সমকালীন প্রতিবেদন : বনগাঁর ইতিহাসে নজির সৃষ্টি হল। এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় গোটা রাজ্যের মধ্যে চতুর্থ এবং ষষ্ঠ স্থান অধিকার করল বনগাঁর কুমুদিনী উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী। তারা দুজন যথাক্রমে সমাদৃতা সেন এবং বিদিশা কুন্ডু। এমন সাফল্যে গোটা বনগাঁ সহ খুশি স্কুলের শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মী এবং ছাত্রীরা।
প্রথম থেকেই স্কুলের ক্লাসের পরীক্ষায় প্রথম হয়ে আসছে বনগাঁর রামনগর রোডের বাসিন্দা সমাদৃতা সেন। মাধ্যমিকেও ভালো ফল করবে, এমন আশা ছিল। কিন্তু রাজ্যের মধ্যে একেবারে চতুর্থ স্থান অধিকার করবে, তা স্বপ্নেও কল্পনা করে নি সমাদৃতা। এদিন টিভিতে দেখে এবং স্কুলের শিক্ষিকাদের কাছ থেকে এই সাফল্যের খবর পেয়ে বেশ অবাকই হয়েছে সে।
ঘড়ি ধরে পড়াশোনা করার অভ্যেস ছিল না সমাদৃতার। মন যতক্ষণ চাইতো, ততক্ষনই সে পড়াশোনা করতো। বাইরের টিউটরদের পাশাপাশি অঙ্কের শিক্ষিকা মা সম্পা সেন এবং ইংরাজির শিক্ষক বাবা উদয় সেনের কাছ থেকেও প্রচুর সহযোগিতা পেয়েছে সমাদৃতা।
মেয়ের এই সাফল্যে স্বাভাবিকভাবেই খুশি সমাদৃতার মা সম্পা এবং বাবা উদয় সেন। ফল প্রকাশের পর থেকেই একের পর এক শুভেচ্ছা ফোন আসতে থাকে। মেয়ের এই সাফল্য সম্পর্কে বাবা উদয় সেন মনে করেন, মেয়ে আগামীতে অনেক দূর এগোবে। আগামীদিনে মেয়ে মহাকাশ নিয়ে গবেষনার জন্য ইসরোতে যুক্ত হওয়ার স্বপ্ন দেখে।
সমাদৃতার কাছাকাছিই সফলতা পেয়েছে তারই ছোটবেলার বন্ধু এবং সহপাঠী বিদিশা কুন্ডু। সে এবারের মাধ্যমিকে ষষ্ঠ হয়েছে। বনগাঁর রেলবাজার এলাকার বাসিন্দা বিদিশার বাবা–মাও স্কুল শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত। বর্তমান সময়ে পড়ুয়ারা যেখানে মোবাইলে বেশি আসক্ত, সেখানে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে না বিদিশা।
চিকিৎসক হয়ে মানুষের, দেশের সেবা করতে চায় বিদিশা। তার প্রিয় বিষয় অঙ্ক। তাই বেশিরভাগ সময়টাই সে অঙ্কের জন্য ব্যয় করেছে। নিজে খেলাধুলা না করলেও খেলা দেখার প্রতি আগ্রহ আছে তার। এদিন সকালে প্রথম সাফল্যের খবর পেয়ে আনন্দে কেঁদে পেলে বিদিশা।
বিদিশার বাবা কিশোর কুন্ডু এবং মা ববি মিত্র মনে করেন, এই ফলাফল সামনে এগিয়ে যাওয়ার সোপানমাত্র। মেয়ে ভালোবেসে পড়াশোনা করে। তাই পড়ার জন্য আলাদা করে বলতে হয় না। বিদিশাকে পড়িয়ে আনন্দ পান তার মা। ওর মধ্যে জানার আগ্রহ আছে। পড়াশোনাটা বিদিশার কাছে বোঝা ছিল না।
স্কুলের এই জোড়া সাফল্যে খুশি কুমুদিনী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকারা। স্কুলের দুই ছাত্রী যে একেবারে চতুর্থ এবং ষষ্ঠস্থান লাভ করবে, তা ভেবে উঠতে পারেন নি স্কুলের শিক্ষিকারা। আগামীদিনে স্কুলের অন্য ছাত্রীরাও যাতে এমন সাফল্য পায়, তারজন্য উৎসাহিত করছেন শিক্ষিকারা।
সমাদৃতা এবং বিদিশার প্রাপ্ত নম্বর যথাক্রমে ৬৮৯ এবং ৬৮৭ । শুধু এই দুজনেই নয়, এবছর কুমুদিনী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে এদের প্রায় কাছাকাছি নম্বর পেয়েছে অন্তরা রায় এবং বর্তিকা ঘোষ। তাদের প্রাপ্ত নম্বর যথাক্রমে ৬৮২ এবং ৬৮১।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন