Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শুক্রবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৩

মেট্রো রেল গঙ্গার নিচে দিয়ে চলার জন্য প্রস্তুত

 

Metro-rail-under-the-Ganges

সমকালীন প্রতিবেদন : ‌পশ্চিমবঙ্গ তথা গোটা দেশের মুকুটে যুক্ত হতে চলেছে এক নতুন পালক। গঙ্গার তলদেশে এই প্রথম চালু হতে চলেছে মেট্রো রেল। ৯ এপ্রিল এই মহড়া নির্ধারিত হয়েছে। কলকাতার পূর্ব-পশ্চিম মেট্রো ভারতের দুটি যমজ শহর কলকাতা এবং হাওড়াকে সংযোগকারী গঙ্গা নদীর নিচে দিয়ে একটি পরীক্ষা চালাতে চলেছে। মহড়া সফল হলে, এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত হবে এবং গঙ্গা ও সমগ্র দেশে মেট্রো সংযোগের এক অনন্য নজির স্থাপন করবে।

আমরা অনেকেই জানি যে, কলকাতার নতুন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো হাওড়া এবং কলকাতার সংযোগ ঘটাতে চলেছে। মেট্রোর এই রুটে কলকাতার অংশের স্টেশনগুলি বেশিরভাগ চালু হয়ে গেলেও গঙ্গার নিচে সম্পূর্ণরূপে কাজ শেষ না হওয়ায় হাওড়ার দিকের মেট্রো পরিষেবা চালু করা সম্ভব হয়নি এখনও। 

তবে আর বেশি দেরি নয়, আগামী ৯ এপ্রিল ট্রায়াল রান সুষ্ঠুভাবে মিটে গেলে খুব শীঘ্রই গঙ্গার নিচ থেকে শিয়ালদা থেকে হাওড়া মেট্রো পরিষেবা সম্পূর্ণরূপে চালু হয়ে যাবে। শিয়ালদা স্টেশন থেকে হাওড়া পর্যন্ত মেট্রোর এই পরিষেবা সম্পূর্ণরূপে চালু হয়ে গেলে কলকাতার রাস্তায় যানজটের সমস্যা অনেকটাই কেটে যাবে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা। 

শিয়ালদা স্টেশন থেকে কোন কাজে হাওড়া যেতে গেলে যেখানে রাস্তায় জ্যামে পড়ার কারণে কখনো কখনো দেড় ঘন্টা থেকে দু'ঘণ্টাও সময় লেগে যায়, সেখানে এই মেট্রো পরিষেবার কারণে তা অনেকাংশেই কমে যাবে। স্বাভাবিকভাবেই এই রুটে মেট্রো চলাচলের দিকে তাকিয়ে রয়েছে গোটা রাজ্য তথা গোটা দেশ। মেট্রো টানেলটি জলের স্তর থেকে ১৩ মিটার নিচে অবস্থিত। নদীর তলটি ১৩ মিটার গভীর হওয়ায় বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু মেট্রো কর্তৃপক্ষের প্রচেষ্টা এবং বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের প্রয়োগ এই প্রকল্পটির বাস্তবায়ন সম্ভব করেছে।

৯ এপ্রিল রিহার্সালের পর আরও প্রায় ৬ মাস পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলবে। যাত্রীদের সঙ্গে মেট্রো চলাচলের চূড়ান্ত অনুমোদন রেলওয়ে নিরাপত্তা কমিশনারের উপর নির্ভর করবে। অনুমোদন পেলেই হাওড়া এবং কলকাতার মধ্যে মেট্রো সংযোগ শুরু হবে। রিহার্সাল পরিচালনার প্রক্রিয়ার মধ্যেই সল্টলেক ডিপো থেকে শিয়ালদা পর্যন্ত একটি রেক নিয়ে যাওয়া এবং তারপরে শিয়ালদা থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত যান্ত্রিকভাবে টোয়িং করা হবে। কারণ, বউবাজারে যানজটের কারণে বৈদ্যুতিক লাইন কাটা হয়নি। মেট্রো যাত্রা মহাকরণ, হাওড়া স্টেশন এবং গঙ্গার তলদেশ দিয়ে হাওড়া ময়দানে যাবে।

গঙ্গার তলদেশে প্রথম মেট্রো রেলের এই ঐতিহাসিক মুহূর্তটির সাক্ষী থাকার জন্য অধীর আগ্রহে আছেন দুই শহরের মানুষেরাই। নতুন এই মেট্রোর রুট কলকাতা ও হাওড়ার মধ্যে সংযোগের একটি নতুন যুগ নিয়ে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা উভয় শহরের মানুষের জন্যেই উপকৃত হবে এবং দেশের বাকি অংশের জন্য একটি উদাহরণ স্থাপন করবে।

এই প্রকল্পের সফল সমাপ্তি ভারতের মেট্রো পরিবহনের ইতিহাসে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হবে। সুতরাং, ৯ এপ্রিলকে একটি ঐতিহাসিক দিন হিসাবে চিহ্নিত করা যেতে পারে, যখন গঙ্গার তলদেশে পূর্ব-পশ্চিম মেট্রোর প্রথম মহড়া হবে। মেট্রো কর্তৃপক্ষ এই প্রকল্পের সাফল্য নিশ্চিত করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করছে। 

এটি সত্যিই প্রকৌশল এবং উদ্ভাবনের একটি অসাধারণ কৃতিত্ব। কলকাতা, যাকে কিনা 'আনন্দের শহর' বা 'সিটি অফ জয়' বলা হয়ে থাকে, সেই শহরেরই গর্বের নদী গঙ্গার তলদেশে ভারতবর্ষের প্রথম এমন মেট্রো রেল, যা কিনা নদীর তলদেশ দিয়ে যাতায়াত করবে, তা বানিয়ে ইতিহাস তৈরি করতে প্রস্তুত।

সমগ্র জাতি অধীর আগ্রহে ৯ এপ্রিল গঙ্গার তলদেশে প্রথম মেট্রো রেলের সফল সমাপ্তির অপেক্ষায় রয়েছে। এটি কলকাতা, হাওড়া এবং সমগ্র দেশের জন্য একটি গর্বের মুহূর্ত হবে। ভারতের পরিবহন ইতিহাসে এই যাত্রাটি একটি নতুন অধ্যায় চিহ্নিত করছে। প্রকৃতপক্ষে, দুই শহরের প্রতিটি মানুষের কাছে এটি উদযাপন করার একটি মুহূর্ত।

ভারতীয় রেল এবং মেট্রো কর্তৃপক্ষ, যাত্রীদের সুরক্ষা নিয়ে কোনওরকম কৃপণতা করবে না। ফলে আরও পরীক্ষা এবং অনুমোদনের পরেই কলকাতা এবং হাওড়ার মধ্যে মেট্রো সংযোগ বানিজ্যিকভাবে শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা এই অঞ্চলে পরিবহনের একটি নতুন যুগের সূচনা করবে৷ এখন সকলে মিলে এই ঐতিহাসিক পদক্ষেপের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে হবে।




‌‌

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন