Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

বিয়ের মাধ্যমে সমাজকে বিশেষ বার্তা দুই এইচআইভি পজেটিভের

 

A-special-message-to-society

সমকালীন প্রতিবেদন : এইচআইভি পজেটিভেরা যে সমাজে অছ্যুৎ নয়, তারাও যে আর পাঁচজন সাধারণ মানুষের মতো জীবনযাপন করতে পারেন, তারই বার্তা দিল একটি বিয়ের অনুষ্ঠান। এইচআইভি পজেটিভ দুই যুবক–যুবতীর মধ্যে বিয়ের আয়োজন করে সমাজ সচেতনতার বার্তা দেওয়া হল।

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার সোনারপুরের গোবিন্দপুরে 'আনন্দ ঘর' নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এইচআইভি পজেটিভ শিশুদের নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। যে সমস্ত বাবা–মা এইচআইভিতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান, তাদের বাচ্চাদেরকে এই হোমে রেখে বড় করা হয়। 

বছর কয়েক আগে সেভাবেই এই হোমে আশ্রয় পেয়েছিল মেদিনীপুরের সুনীতা যাদব। ছোটবেলা থেকেই বাবা-মাকে হারিয়ে এই হোমে থেকেই পড়াশোনা করে সে। 'আনন্দঘর 'হোম তাকে শৈশব থেকে কৈশোরে এবং যৌবনে পা রাখতে সাহায্য করেছে। উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে সেই ছোট্ট সুনীতা এখন সাবালিকা হয়ে 'কাফে পজিটিভ' নামে একটি কফি শপে কর্মরতা। 

সুনীতা নিজে এইচআইভি পজেটিভ হওয়ায় অ্যান্টি রেট্রোভাইরাল থেরাপি চিকিৎসা নিতে প্রতিমাসে তাঁকে মেডিকেল কলেজে যেতে হয়। আর সেখানে যেতে যেতেই একসময় আলাপ হয় সৌমিত্র গায়েন নামে উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির এক যুবকের সঙ্গে। 

ছোটবেলায় বিড়ালের কামড়ের জন্য চিকিৎসা কেন্দ্রে ইনজেকশন নিতে গিয়ে সিরিঞ্জ থেকে এইচআইভি পজিটিভে আক্রান্ত হন সৌমিত্র। পরবর্তীতে তাঁকেও চিকিৎসার জন্য মেডিকেল কলেজে যেতে হয়। আর সেখানেই সুনীতার সঙ্গে আলাপ তাঁর। প্রথম দেখাতেই একে অপরের প্রতি বিশ্বাস, ভরসা করতে শুরু করেন।

আর সেই সম্পর্ক শেষ পর্যন্ত গড়ালো বিয়েতে। রবিবার সন্ধেয় সানাইয়ের সুরে, রজনীগন্ধার মালায় ভরে ওঠা বিয়ে বাড়িতে অবশেষে চার হাত এক হল দুই এইচআইভি পজেটিভ যুবক–যুবতীর। সেই শুভক্ষণে উপস্থিত ছিলেন সংস্থার সমস্তস্তরের কর্মী, দুপক্ষের পরিজনেরা। 

আত্মীয়–পরিজনেরা বলছেন, দুজন এইচআইভি পজিটিভ মানুষ যেভাবে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা সত্যি অকল্পনীয়। আর পাঁচটা বিয়েকে যেন ছাপিয়ে গেল এদিনের বিয়ের অনুষ্ঠান। বিয়ের কার্ড ছাপানো থেকে শুরু করে অতিথি আপ্যায়ন– সবই হয়েছে নিয়ম মেনে।  

বিয়ের উদ্যোক্তারা জানালেন, সমাজে এইচআইভি মানুষদেরকে এখনও সমাজের একশ্রেণীর মানুষ বাঁকা চোখে দেখেন। আমরা সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। সঠিক চিকিৎসা দিলে এবং মানুষের ভালো ব্যবহার পেলে এইচআইভি পজিটিভরাও যে এগিয়ে যেতে পারেন, সেটাই আমরা বোঝাতে চেয়েছি। 

এইচআইভি পজেটিভেরা সমাজে কোথাও যেন কোনওরকম প্রতিবন্ধকতার স্বীকার না হন, সেটাও সমাজের প্রত্যেক মানুষকে খেয়াল রাখতে হবে। এমন পজিটিভ ভাবনাকে স্যালুট জানিয়েছেন বিয়েতে উপস্থিত সকলেই।






কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন