Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী, ২০২৩

কানাডা পৃথিবীর সর্বাধিক শিক্ষিত দেশ

 

Most-educated-country

সম্পদ দে : পৃথিবীর সর্বাধিক শিক্ষিত দেশ কোনটা, তাই নিয়ে প্রায়শই একটি তালিকা প্রকাশিত হতে থাকে এবং প্রতিবছরই আমরা দেখতে পাই যে এই তালিকার শীর্ষে রয়েছে আমেরিকা বা ব্রিটেন। তবে এই বছর সেই তালিকায় হয়েছে বেশ খানিকটা রদবদল। আমেরিকা বা ব্রিটেনের মতো দেশকে পেছনে ফেলে এবছর পৃথিবীর সর্বাধিক শিক্ষিত দেশ হিসেবে ১ নম্বরে উঠে এসেছে কানাডা। 

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কানাডার ৫৯.৯৬ শতাংশ মানুষ শিক্ষিত। যদিও মাথায় রাখতে হবে, এই পরিসংখ্যান স্বাক্ষর হিসেবে নয়, ধরা হয়েছে কলেজ বা ইউনিভার্সিটিতে পড়ছেন, এমন মানুষদেরকে নিয়ে। গোটা পৃথিবীজুড়ে সারা বছরই শিক্ষা সম্পর্কিত বিভিন্ন গবেষণা নিয়মিত চলতেই থাকে। 

আর সেগুলির মধ্যেই অর্গানাইজেশন ফর ইকনমিক কো-অপারেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট এর দ্বারা প্রকাশিত শিক্ষা রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, কানাডা বিশ্বের সব থেকে শিক্ষিত দেশ। রিপোর্ট অনুযায়ী, কানাডায় শিক্ষিত মানুষের পরিমাণ ৫৯.৯৬ শতাংশ। সেইসঙ্গে কানাডার ঠিক পরেই বিশ্বের দ্বিতীয় সব থেকে শিক্ষিত মানুষের স্থান অধিকার করে নিয়েছে জাপান। 

জাপানের প্রায় ৫২.৬৮ শতাংশ মানুষ শিক্ষিত বলে দেখা যাচ্ছে। দ্বিতীয় স্থানে জাপানকে দেখে একদমই অবাক হচ্ছেন না বিশ্ববাসী। কারণ, জাপানের প্রথম থেকেই যথেষ্ট সুখ্যাতি রয়েছে তাদের কাজের প্রতি এবং শিক্ষার প্রতি একাগ্রতাকে নিয়ে। জাপান তাদের শিক্ষা এবং টেকনোলজিকে নিয়ে এতটাই এগিয়ে গেছে যে, বিশ্বের সবথেকে স্মার্ট এবং টেকনোলজিক্যাল দেশ জাপানকেই বলা হয়ে থাকে। 

জাপানের পরে তালিকার তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে লুক্সেমবার্গ। লুক্সেমবার্গ হলো একটি ছোট ইউরোপীয় দেশ। লুক্সেমবার্গের ঠিক পরেই চতুর্থ স্থানে সাউথ কোরিয়া এবং পঞ্চম স্থানে রয়েছে ইসরাইল। এই তালিকা প্রকাশের পর রীতিমতো বিস্মিত গোটা বিশ্ববাসী। কারণ, তালিকার প্রথম ৫ টি দেশের মধ্যেও নেই আমেরিকা বা ব্রিটেনের মতো দেশ। সাধারণত সবাই আশা করেছিলেন, প্রথম ৫ দেশের মধ্যে ব্রিটেন এবং আমেরিকা অবশ্যই থাকবে। 

তবে পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, আমেরিকা এবং ব্রিটেনের মতো এত উন্নত দেশের জায়গা রয়েছে তালিকার একেবারে ৬ এবং ৮ নম্বরে। আর মাঝখানের ৭ নম্বর জায়গাটি অধিকার করেছে আয়ারল্যান্ড। তালিকার ১ নম্বরে কানাডা থাকলেও তাকে দেখে অবাক হওয়ার মতো কিছু হয়নি, কারণ গোটা বিশ্বে যেসমস্ত দেশগুলি শিক্ষার দিক থেকে দ্রুত হারে এগিয়ে যাচ্ছে তাদের মধ্যে কানাডা অন্যতম। 

তবে শুধুমাত্র কানাডাই নয়, এই তালিকার প্রথম দিকের বেশিরভাগ সমস্ত দেশগুলিতেই শিক্ষার মান এবং কৌশল যথেষ্ট উন্নত। যার কারণেই বেশি শতাংশ মানুষের শিক্ষার হার বেশি এই দেশগুলিতে। তবে বিভিন্ন দেশের শিক্ষার খবর জানলেও আমরা সবাই অত্যন্ত উদগ্রীব হয়ে আছি ভারতের অবস্থান জানার জন্য। তবে জেনে খারাপ লাগতে পারে। 

কারণ, ভারত এই তালিকায় বেশ পিছিয়ে আছে। পৃথিবীর শিক্ষিত প্রথম দশটি দেশের মধ্যে জায়গা করে নিতে পারেনি ভারত। এর থেকেই বেশ পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত ভারতে শিক্ষার হার যথেষ্ট কম। অর্গানাইজেশন ফর ইকনমিক কো-অপারেশন এন্ড ডেভেলপমেন্ট এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতীয় মোট জনসংখ্যার কেবলমাত্র ২০.৪ শতাংশ মানুষই কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা ভোকেশনাল কোর্সে ভর্তি হওয়ার পর কোর্স শেষ করতে পারে। 

ভারতের বিভিন্ন রাজ্যও এখনও পর্যন্ত শিক্ষার দিক থেকে যথেষ্ট পিছিয়ে। তবে সেক্ষেত্রে তুলনা করলে দেখা যায়, ভারতের কেরালা রাজ্যে শিক্ষিত মানুষের হার অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় অনেক বেশি। তাহলে এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী অন্যান্য সমস্ত দেশগুলিতে কি ভারতের থেকেও বেশি সংখ্যায় শিক্ষিত মানুষ আছে? আজ্ঞে না। আমাদেরকে ভালোভাবে বুঝতে হবে যে, এই পরিসংখ্যানটি সম্পূর্ন দেশের মোট জনসংখ্যার শতাংশের উপর নির্ণয় করে বানানো হয়েছে। 

অর্থাৎ কানাডার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ শিক্ষিত। আর ভারতের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২০-২১ শতাংশ মানুষ শিক্ষিত। এইভাবে হিসাব করতে গেলে পরিমাণের দিক থেকে যেহেতু ভারতের জনসংখ্যা যথেষ্ট বেশি, সেইজন্য ভারত তালিকার প্রথম দিককার দেশ যেমন, কানাডা বা জাপানের মতো দেশগুলির থেকেও অনেক এগিয়ে। তবে মোট জনসংখ্যার শতাংশের ওপর হিসাব করতে গেলে ভারত এখনও অন্যান্য সমস্ত দেশগুলি থেকে বেশ পিছিয়ে আছে।

যদিও ভারতে সরকারিভাবে বলা হয়েছে, ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থাকে যথেষ্ট উন্নত করা হবে এবং শিক্ষার মানকে বাড়ানো হবে। তবে তার পরেও শুধু দেখার পালা, শিক্ষার হারের এই তালিকায় আমাদের ভারতবর্ষ কবে প্রথম দশের মধ্যে আসতে পারে।






‌‌‌‌

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন