Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শনিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২৩

হাড় বৃদ্ধিতে অবহেলায় শিশুর শারীরিক সমস্যা হতে পারে

 

In-the-growth-of-the-child-bones

সমকালীন প্রতিবেদন : ছোটবেলা থেকেই আমাদের প্রায় প্রত্যেককেই এই কথাটি শুনতে হয় যে, 'বড় হয়ে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে'। যদি ওই কথাটি, জীবনে সফল হাওয়াকে বোঝায়। তবুও বাস্তবিক জীবনে শারীরিকভাবে নিজের পায়ে দাঁড়াতে গেলে শারীরিক শক্তি এবং বলের প্রয়োজন। আর সেই শারীরিক বল পাওয়া যায়, শক্তপোক্ত হাড়ের গঠন থেকে। তবে বিশ্বের প্রচুর শিশুকেই পুষ্টির অভাবে হাড়ের গঠন না হওয়ায় বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগতে হয় আজও। 

বহু ক্ষেত্রে ছোটবেলায় ধরা না পড়লেও বড় হওয়ার পরে দেহের হাড়জনিত বিভিন্ন সমস্যায় পড়ে অনেকে। সেই জন্য যাতে এই পরিস্থিতিতে কাউকে না পড়তে হয়, সেইজন্য বাচ্চা বয়স থেকেই শিশুর হাড়ের বৃদ্ধিতে এবং হাড় যাতে শক্ত হয়, সেই দিকে নজর দিতে হবে।

প্রতিটি মানুষকেই কখনও না কখনও প্রতিকূল পরিবেশের সঙ্গে মোকাবিলা করতে হয়। আর সেই প্রতিকূলতাকে পার করতে গেলে দেহে শক্ত হাড়ের প্রয়োজন। তবে শুধুমাত্র শক্ত হাড় হলেই হবে না, হাড়ের বৃদ্ধিতে নজর দিতে হবে। কারণ, শরীরের বৃদ্ধি সম্পূর্ণ নির্ভর করে হাড়ের বৃদ্ধির উপরে। 

শিশুর বাবা মাকে কয়েকটি জিনিস মাথায় রাখতে হবে তাদের শিশুর শারীরিকভাবে এবং সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার জন্য। যেকোনও শরীরে হাড়ের সুস্থতা নির্ভর করে নির্দিষ্ট কয়েকটি বিষয়ের উপর। সেই দিকগুলিতে খেয়াল রাখলেই সম্ভব একটি সুস্থ শারীরিক মানুষ গড়ে তোলা। 

তবে সেই সঙ্গে এটাও মনে রাখতে হবে যে, ১৭ থেকে ১৮ বছর বয়স পর্যন্তই হারের বৃদ্ধি ঘটে দ্রুত পরিমাণে। তারপর থেকেই হাড়ের বৃদ্ধি ধীরে ধীরে কমে যায়। ফলে কোনওমতেই অবহেলা না করে যা করার তা ১৮ বছর বয়সের ভিতরেই করে ফেলতে হবে।

দেহে হাড়ের সুস্থতা নির্ভর করে প্রধানত চারটি বিষয়ের উপরে। সেই চারটি দিকে খেয়াল রাখলেই এড়ানো যেতে পারে হাড়ের সুস্থতার উপরে তৈরি হওয়া সমস্ত বিপদ। বিষয়গুলি হলো যথাক্রমে—

১| ক্যালসিয়াম।

২| ভিটামিন-ডি।

৩| ম্যাগনেসিয়াম ও ভিটামিন-কে।

৪| শরীর চর্চা এবং খেলাধুলা।

এই প্রধান চারটি বিষয়ে কিভাবে হাড়ের উপকার করে তা বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

১| ক্যালসিয়াম—

ক্যালসিয়াম হলো শরীরে হাড়ের গঠনের জন্য সবথেকে জরুরি উপাদান। ক্যালসিয়াম ছাড়া হাড়ের গঠন সম্পূর্ণ অসম্ভব। সেই জন্য ছোট থেকেই শিশুকে ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার খাওয়ানোর উপর জোর দিতে হবে। খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে দুগ্ধজাত দ্রব্য। যেমন, দুধ, ঘি, ছানা, দই ইত্যাদি। এছাড়াও পালং শাক, ফুলকপি, বাঁধাকপি, কমলালেবু, আপেল ইত্যাদির মতো প্রচুর শাকসবজি এবং ফলমূল রাখতে হবে।

২| ভিটামিন-ডি— 

ভিটামিন-ডি শারীরিক সুস্থতা এবং বেড়ে ওঠার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। ভিটামিন-ডি এর সব থেকে বড় উৎস হচ্ছে সূর্য। তাই প্রতিটি বাচ্চাকেই দিনের মধ্যে বেশ খানিকক্ষণ, বিশেষত ঠান্ডার সময় সূর্যের আলোয় খেলতে দেওয়ার সুযোগ করে দিন। এছাড়াও, ভিটামিন-ডি যুক্ত খাবারও খাওয়ানো দরকার। যার মধ্যে দুধ, ডিম, মাশরুম অন্যতম।

৩| ম্যাগনেসিয়াম ও ভিটামিন-কে—

ম্যাগনেসিয়াম যেমন শরীরকে শক্তিশালী করে তোলে, তেমনি ভিটামিন-কে শরীরে হাড়ের ক্ষয়কে রোধ করে। তাই ম্যাগনেসিয়াম ও ভিটামিন-কে যুক্ত খাবার কোনওমতেই বাদ দেওয়া যাবে না শিশুর খাদ্য তালিকা থেকে। প্রতিদিনই কিছু পরিমাণ সবুজ সবজি এবং বিভিন্ন ফল খাওয়াতে থাকতে হবে।

৪| শেষ ও অন্যতম প্রধান দিক হল শরীর চর্চা ও খেলাধুলা— 

কোনও শিশুকে যতই পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো হোক না কেন, তাকে শরীর চর্চা বা মাঠে খেলাধুলা করতে না দিলে কোনওমতেই শরীরের গঠন সম্পন্ন হবে না তার। আজকালকার বাচ্চারা আসক্ত হয়ে পড়ছে মোবাইল গেমে। সেক্ষেত্রে এটি বাবা-মায়ের দায়িত্ব তার বাচ্চাকে নিয়ে বিকেলে খেলতে যাওয়া এবং প্রতিদিন ব্যায়াম ও শরীরচর্চায় উদ্বুদ্ধ করা। 

লিস্টে না থাকলেও আরেকটি দিক প্রতিটি অভিভাবককেই মাথায় রাখতে হবে অবশ্যই। ছোট থেকে প্রতিটি বাচ্চাকে মনে করে পার্শ্ববর্তী স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে অবশ্যই পোলিও ড্রপ খাওয়াতে হবে। পোলিও ড্রপ একটি বাচ্চার জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

তো শেষ পর্যন্ত প্রতিটি মাতাপিতা তার সন্তানদের জন্য যদি এই কয়েকটি বিধি মেনে চলেন, তাহলে তাদেরকে আর নিজের সন্তানের হাড়ের গ্রোথ এবং স্বাস্থ্য নিয়ে ভাবতে হবে না। তাদের সন্তান তৈরি হবে একজন পূর্ণাঙ্গ সুস্বাস্থ্য মানুষ।



‌‌

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন