সমকালীন প্রতিবেদন : উত্তর ২৪ পরগনার বাগদায় ইংরাজি মাধ্যম সরকারি বিদ্যালয় চালু করার ব্যাপারে নতুন করে উদ্যোগগ্রহণ করল জেলা প্রশাসন। জেলা শাসকের নির্দেশে বৃহস্পতিবার এব্যাপারে জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক এলাকা পরিদর্শনে আসেন। গোটা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে তিনি জেলা শাসককে রিপোর্ট দেবেন।
বাগদা বিধানসভা এলাকাটিতে তপশিলি সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস বেশি। এই বিধানসভা এলাকার তৎকালীন তৃণমূল বিধায়ক তথা রাজ্যের অনগ্রসর শ্রেণীকল্যান দপ্তরের তৎকালীন মন্ত্রী উপেন বিশ্বাসের উদ্যোগে বাগদা এলাকায় একটি ইংরাজি মাধ্যম স্কুল চালু করার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়।
ঠিক হয়, অনগ্রসর শ্রেণীকল্যান দপ্তরের উদ্যোগে বাগদা এলাকায় একটি ইংরাজি মাধ্যম আবাসিক বিদ্যালয় তৈরি করা হবে। এই সরকারি বিদ্যালয়ে তপশিলি জাতির ছাত্রীরা পড়াশোনার সুযোগ পাবে। এখানে থেকে বিনা পয়সার ইংরাজি মাধ্যমে পড়াশোনা করার সুযোগ পাবে তারা।
মূলত তপশিলি জাতিভুক্ত ছাত্রীদের উন্নয়নে এই উদ্যোগগ্রহণ করা হয়েছিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী সরকারি অর্থে বাগদার কুমোরখোলা এলাকায় এই প্রকল্পের জন্য স্কুল ভবন, ছাত্রী এবং শিক্ষক–শিক্ষিকাদের জন্য আবাসন ইত্যাদি তৈরি করার কাজও শেষ হয়।
নবনির্মিত এই স্কুলের নাম দেওয়া হয় 'ড: বি আর আম্বেদকর রেসিডেন্সিয়াল স্কুল'। স্কুল গ্রাউন্ডে প্রবেশের মুখে সুদৃশ্য তোরণও তৈরি করা হয়। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, কয়েক লক্ষ সরকারি অর্থ ব্যয় করে এই স্কুল ভবন তৈরি করা হলেও, তা কাজে লাগানো হয় নি। চালু হয় নি স্কুল।
দীর্ঘদিন ধরে পরে থাকায় ভবনের চারপাশে জঙ্গলে ভরে গেছে। গেট খোলা থাকায় সেখানে চড়ে বেরায় গরু। স্থানীয় ছেলেদের খেলারও একটি জায়গা তৈরি হয়ে গেছে। এতো উদ্যোগ নিয়ে সরকারি অর্থ খরচ করে তা কাজে না লাগায় ক্ষোভ বাড়তে থাকে স্থানীয় মানুষদের মধ্যে।
অবশেষে এব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। জেলা শাসকের নির্দেশে বৃহস্পতিবার স্কুল ভবন এবং গোটা এলাকা পরিদর্শন করেন জেলার প্রকল্প আধিকারিক অমর্ত্য চক্রবর্তী। সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিনিধিরা।
জেলার প্রকল্প আধিকারিক অমর্ত্য চক্রবর্তী এব্যাপারে জানান, জেলা শাসকের নির্দেশে তিনি স্কুলটি পরিদর্শনে এসেছেন। গোটা পরিস্থিতি দেখে তিনি জেলা শাসককে একটি রিপোর্ট দেবেন। এরপর জেলা প্রশাসন যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নেবেন।
বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি গোপা রায় জানান, মন্ত্রী উপেন বিশ্বাসের উদ্যোগে বাগদায় একটি ইংরাজি মাধ্যম স্কুল চালু করার জন্য ভবন তৈরি করা হয়েছিল। বিশেষ কারণে সেটি এতোদিন চালু করা সম্ভব হয়নি। আশা করা যাচ্ছে, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে খুব দ্রুত স্কুলটি চালু করা সম্ভব হবে।
এদিকে বিজেপির অভিযোগ, সরকারি তহবিল থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে স্কুল ভবন তৈরি করেও তা দীর্ঘদিন ধরে ফেলে রাখা হয়েছিল। কয়েক মাস পরেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে স্কুলটি চালু করার ব্যাপারে টনক নড়েছে জেলা প্রশাসনের।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন