Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শুক্রবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২২

শিল্পসৃষ্টিতে নজির গড়লো এক খুদে

A-precedent-in-art-creation

সম্পদ দে : আমাদের চারপাশে এমন প্রচুর প্রতিভা থাকে যা আমাদেরকে প্রায়ই চমকে দেয়। তবে সেইসঙ্গে এমন অনেক প্রতিভাও থাকে যা কিনা সহজে সকলের সামনে আসার সুযোগ পায় না। আর তেমনি একটা প্রতিভার নাম হলো বিজয় দেবনাথ। কেবলমাত্র ৯০ টি দেশলাই কাঠি দিয়ে লালকেল্লা বানিয়ে সে সবাইকে চমকে দিয়েছে।

পূর্ব ভারতের ত্রিপুরার ছেলে বিজয়। ছোট থেকেই আঁকা এবং হস্তশিল্পের কাজের প্রতি টান তার। কেবল লালকেল্লা নয়, এর আগেও দেশলাই কাঠি দিয়ে তাজমহল, কুতুব মিনারের মতো স্থাপত্যের মডেল তৈরি করেছে সে।

তবে পরিবারে আর্থিক অনটনের দরুন শিল্পের উপরে কোনও প্রথাগত প্রশিক্ষণ নেওয়া হয়নি ছোট বিজয়ের। সে যাতে নিজের স্বপ্নের দিকে এগিয়ে যেতে পারে, তাই এই বিষয়ে সরকারি সাহায্যের দিকে তাকিয়ে তার গোটা পরিবার।

ভারতের পূর্বাঞ্চলের ছোট্ট একটি পাহাড়ি রাজ্য ত্রিপুরা। সেখানকারই আগরতলার পূর্ব চাঁনমারি এলাকায় বাবা লক্ষণ দেবনাথ ও মা জয়ন্তী দেবনাথ এর সঙ্গে থাকে তাদের একমাত্র ছেলে বিজয় দেবনাথ। বিজয়ের বাবা লক্ষণ দেবনাথের রাস্তার পাশে একটি মাংসের দোকান। 

পরিবারে আর্থিক অনটন লেগেই থাকে সবসময়। এমন পরিস্থিতিতেও পড়াশোনার মাঝে বিজয় নিজের হস্তশিল্প নিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যায়। বিজয় নিজেদের ঘরের সাধারণ বিভিন্ন জিনিসপত্র দিয়ে নানান রকম শিল্পকলা তৈরি করত। ঘরের চাল ও ডাল দিয়ে জগন্নাথের ছবি আঁকত সে। বিজয়ের হবি বলা যায় এটাকে। 

প্রথম প্রথম হালকা ভাবে শুরু করলেও পরে যত সময় গেছে, ততই নিজের শিল্পের কাজকে আরও নিখুঁত বানিয়েছে সে। এমনকি বাড়ির বিভিন্ন সবজি, ফল ও ফুল দিয়ে ফুটিয়ে তুলেছে দেশের বিভিন্ন মনীষীদের ছবি।

এখনও পর্যন্ত নয় নয় করেও প্রায় ২০০ টির উপরে বিভিন্ন সৃষ্টিশীল কাজ করে ফেলেছে সে। বিজয়ের এক একটা চোখ ধাঁধানো কাজ দেখে রীতিমত অবাক তার এলাকা তথা গোটা ত্রিপুরাবাসী। ৯০ টি দেশলাই কাঠি দিয়ে লালকেল্লা ও ১৩০ টি দেশলাই কাঠি একের উপর আরেকটি লাগিয়ে তৈরি করা ত্রিপুরেশ্বরী মায়ের মন্দিরের মতো অনেক শৈল্পিক কাজ রয়েছে বিজয়ের ঝুলিতে।

একদম ছোট থেকেই বিজয়ের স্বপ্ন ছিল, সে একদিন গোটা ত্রিপুরাবাসী ও সর্বোপরি গোটা দেশবাসীর নাম গর্বিত করতে পারবে নিজের শিল্পকলার দ্বারা। ইতিমধ্যেই বিজয়ের দ্বারা তৈরি তার হাতের কাজ দেখলেই বলা যায়, সে যদি এইভাবেই পরিশ্রম করতে থাকে এবং শিখতে থাকে, তবে সেই দিন বেশি দূরে নয়, যেদিন তার এই স্বপ্নটি সত্যি হতে বাধ্য।

তবে রাস্তার পাশে মাংস বিক্রি করে আর কতটুকুই বা রোজগার হয় তাদের পরিবারের। যেখানে বিজয় নিজের স্বপ্নপূরণ করার কথা চিন্তা করছে, সেখানে ঠিক উল্টোদিকে তার বাবা-মায়ের চিন্তা তারা কিভাবে বিজয়ের স্বপ্নকে পূরণ করতে পারবে। কারণ, যত চেষ্টাই করা হোক না কেন, শিল্পকলা নিয়ে বিজয়কে সামনে এগোতে গেলে প্রথাগত প্রশিক্ষণ নিতেই হবে।

এই বিষয়ে সরকারি সাহায্য পেলে আগামী দিনে আরও সুন্দরভাবে বিজয় নিজের এই সৃষ্টিশীল কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারতো বলে তার পরিবারের ধারণা। এখন কেবল দেখার পালা, ত্রিপুরা সরকার বিজয় ও তার পরিবারের পাশে দাঁড়ায় কিনা।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন