সমকালীন প্রতিবেদন : ভারতের মহাকাশ গবেষণা জগতের মুকুটে যুক্ত হতে চলেছে এক নতুন পালক। আগামী ১৫ নভেম্বর মহাকাশে উৎক্ষেপণ হতে চলেছে দেশের প্রথম বেসরকারি রকেট বিক্রম-এস! এই খবর জানিয়েছে হায়দ্রাবাদে স্থাপিত এই স্টার্টআপ কোম্পানি স্কাইরুট এরোস্পেস।
সারা বিশ্বে খুব কম সংখ্যক দেশই এমন আছে, যেখানে বেসরকারি কোম্পানির দ্বারা মহাকাশ গবেষণা করা হয়। এবার সেই দেশগুলির তালিকায় প্রবেশ করল ভারতও। ১৫ নভেম্বর অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটায় ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর লঞ্চপ্যাড থেকেই উৎক্ষেপণ করা হবে দেশের প্রথম বেসরকারি মহাকাশযান বিক্রম-এস।
এখন থেকে প্রায় চার বছর আগে ২০১৮ সালে স্থাপিত হয় এই স্টার্টআপ কোম্পানি স্কাইরুট এরোস্পেস। ইসরোরই দুজন বিজ্ঞানী পবন কুমার চন্দনা ও নাগা ভারত ডাকা মিলে প্রতিষ্ঠিত করেন এই স্টার্টআপ। প্রতিষ্ঠার মাত্র চার বছরের মধ্যেই তারা উৎক্ষেপণ করতে চলেছেন তাঁদের তৈরি প্রথম রকেট বিক্রম।
ইসরোর প্রথম চেয়ারম্যান ও ভারতের মহাকাশ প্রোগ্রামের জনক নামে পরিচিত বিক্রম সারাভাইকে শ্রদ্ধা জানানোর জন্যই তাদের রকেটের নাম বিক্রম রাখা হয়েছে। সংস্থার সিইও পবন কুমার চন্দনা সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, ১৫ তারিখ সকাল সাড়ে এগারোটার সময় তাঁরা তাঁদের মহাকাশযানকে উৎক্ষেপণ করবেন।
আর এই উৎক্ষেপণের মাধ্যমেই স্কাইরুট এরোস্পেস হয়ে যাবে মহাকাশে রকেট পাঠানোর ক্ষেত্রে ভারতের প্রথম বেসরকারি কোম্পানি। স্কাইরুট এরোস্পেস তাদের এই মিশনের নাম রেখেছে 'প্রারম্ভ', যার মানে হল শুরু করা। এই নাম রাখার কারণ হলো, এটি তাদের প্রথম মহাকাশযাত্রা।
সংস্থার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তথা চিফ অপারেটিং অফিসার নাগা ভারত ডাকা রকেট সম্পর্কে জানান যে, বিক্রম-এস হলো একটি এক পর্যায়ের সাব অরবিটাল লঞ্চ ভেইকেল। এই রকেট মোট তিনটি পেলোড বহন করবে। যার মধ্যে দুইটি ভারতীয় ও একটি বিদেশি। এর মধ্যে একটি আড়াই কেজির পেলোডও রয়েছে, যেটি পড়ুয়াদের দ্বারা নির্মিত।
সিইও পবন কুমার চন্দনা আরও জানান, ইসরো ও ইন-স্পেস অর্থাৎ ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল স্পেস প্রমোশন অ্যান্ড অথরাইজেশন সেন্টার এর সহযোগিতার কারণেই স্কাইরুট তাদের বিক্রম-এস রকেট এর মিশনটিকে এত কম সময়ের মধ্যে সম্পুর্ন করতে পেরেছে।
এক রিপোর্টে জানা যাচ্ছে, আগামী ২০২৫ সালের মধ্যেই সারা বিশ্বের প্রায় ষাট হাজার এর কাছাকাছি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হবে। স্কাইরুট এরোস্পেসের এই মিশন সফল হলে তারাও নেমে পড়বে বাড়তে থাকা স্যাটেলাইট লঞ্চের গ্লোবাল ডিমান্ডকে হাতের মুঠোয় আনতে।
২০২০ সালে সরকারের পক্ষ থেকে মহাকাশ গবেষণার জন্য বেসরকারি কোম্পানিদেরকে অনুমতি দেওয়ার পর থেকে যে গতিতে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণার চাহিদা ও গুণমান বাড়ছে, তা দেখে মহাকাশ বিজ্ঞানীদের আশা, খুব শীঘ্রই ভারত মহাকাশ গবেষণায় অন্যান্য দেশগুলিকে টক্কর দিতে চলেছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন