Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

মঙ্গলবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২২

স্বপ্নাদেশ অনুসারে‌ পোড়া রূপে পুজো মা দুর্গাকে

Worship-Mother-Durga-in-burnt-form

সমকালীন প্রতিবেদন : সাধারণভাবে যে রূপে আমরা মা দুর্গাকে দেখে অভ্যস্ত, তার থেকে অনেকটাই আলাদা ভট্টাচার্য বাড়ির পুজোর মা দুর্গার রূপ। এখানে পোড়া মুখে পূজিতা হন মা দুর্গা। মায়ের এমন অদ্ভুত রূপের পেছনে রয়েছে এক অনবদ্য কাহিনী।

দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার অন্যতম বনেদী বাড়ির পুজো হল ক্যানিংয়ের ভট্টাচার্য বাড়ির পুজো। এই বাড়ির দীর্ঘদিনের পুরনো এই পুজোয় মা দুর্গার রূপ ভিন্ন। এখানে দেবীর সারা শরীর তাম্র বর্ণের। আর মুখটি পোড়া। দেবী দুর্গার ডানদিকের পরিবর্তে গণেশ থাকেন বাঁদিকে।

একদা পূর্ববঙ্গের ঢাকার বিক্রমপুর বাইনখাঁড়া গ্রামে ৪৩৮ বছর আগে শুরু হয়েছিল এই পুজো। পুজোর জৌলুস কমলেও বনেদিয়ানায় খুব একটা খামতি পরে নি। মূলত জমিদার বাড়ির শোভা এবং আভিজাত্য বজায় রাখতে এই পরিবারে শুরু হয়েছিল দেবী দুর্গার আরাধনা। 

পুজো শুরুর প্রায় ২০০ বছর পর একবার পুজোর সময় এই পরিবারে এক অঘটন ঘটে। এই বাড়িতে দুর্গা মন্দিরের পাশেই ছিল দেবী মনসার মন্দির। মনসা পূজো শেষ করে পুরোহিত দুর্গা পুজো করতে যান। আর তখনই একটি কাক মনসা মন্দিরের ঘি এর প্রদীপের সলতে নিয়ে উড়ে যায়। 

কাকটি জ্বলন্ত সলতে নিয়ে দুর্গা মন্দিরের খড়ের চালে গিয়ে বসে। আর তাতেই পুড়ে যায় দুর্গা মন্দির, সঙ্গে প্রতিমাও। পরিবারের সদস্যরা ভাবেন, দেবী দুর্গা বোধহয় তাঁদের পুজো আর চাইছেন না। আর সেই ভাবনা থেকে তখন পুজো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। 

এরপর একদিন রাতে এই পরিবারের গৃহকর্তা রামকান্ত ভট্টাচার্য স্বপ্নাদেশ পান। দেবী দুর্গা তাঁকে স্বপ্নাদেশ দেন যে, তাঁর পুজো যেন কোনওভাবেই বন্ধ না হয়। তাঁর ওই পোড়া রূপেই যেন তাঁকে পুজো করা হয়। এর পর থেকেই চালু হয় দেবীর পোড়া রূপে পুজো। 

একসময় এই পুজোয় মহিষ বলি হলেও পরবর্তীতে সেই প্রথা বন্ধ করে দিয়ে ফল বলি দেওয়ার প্রথা চালু হয়। জন্মাষ্টমীতে কাঠামো পুজোর মধ্যে দিয়ে এই বাড়ির দুর্গা পুজোর সূচনা হয়। জাঁকজমক কমলেও পুজোর পুরনো সমস্ত আচার মেনে আজও পূজিত হন ভট্টাচার্য বাড়ির মা দুর্গা। 






কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন