Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শুক্রবার, ১৯ আগস্ট, ২০২২

বিস্ফোরক দিয়ে গুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে টুইন টাওয়ার

Twin-Towers

দেবাশীষ গোস্বামী : ‌অবশেষে ভেঙে ফেলা হচ্ছে দুই বহুতলকে। আগামী ২৮ আগস্ট ভেঙে ফেলা হবে উত্তরপ্রদেশের নয়ডার ৯৩ এ সেক্টরে অবস্থিত ৪০ তলা বিশিষ্ট যমজ টাওয়ারটি। টাওয়ার বলতে বহুতল আবাসন। এই টাওয়ার দুটির মধ্যে একটির উচ্চতা ১০৩ মিটার, অপরটির ৯৭ মিটার। দুটি আবাসনের মোট নির্মিত এলাকা হলো ৭ লক্ষ ৫০ হাজার বর্গ ফুট। 

গ্রেটার নয়ডা এক্সপ্রেসওয়ের পাশে অবস্থিত এই বহুতল আবাসন দুটির নাম এপেক্স এবং সিয়ানে। সেখানে মোট ৯১৫ টি আবাসন রয়েছে। ২০১২ সালে সুপার টেক কোম্পানি এই টাওয়ারগুলির নির্মাণ কাজ শুরু করে। ইতিমধ্যেই ৬৩৩ আবাসন বুকিংও হয়ে গিয়েছিল। ২ বিএইচকে এবং ৩ বিএইচকে মাপের এক একটি আবাসনের মূল্য নির্ধারক করা হয়েছিল যথাক্রমে ১ কোটি ৫৭ লক্ষ এবং ১ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা। 

২০১৪ সালে নয়ডার স্থানীয় বাসিন্দারা এই নির্মাণের বিরুদ্ধে এলাহাবাদ হাইকোর্টে মামলা করে বলেন, এই নির্মাণের ফলে এলাকার বাস্তুতন্ত্র বিঘ্নিত হবে। এর পরিপেক্ষিতে এলাহাবাদ হাইকোর্ট একটি বিশেষজ্ঞ কমিটিকে দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে রায় দেয় যে, সত্যিই এই নির্মাণটি অবৈধ এবং এতে নির্মাণআইন ভঙ্গ করা হয়েছে (Violation of Building Norms)। 

দুটি ভবনের মাঝে ২০ মিটারের ব্যবধান রাখার কথা থাকলেও, সেইস্থলে মাত্র ৯ মিটার ব্যবধান রাখে নির্মান সংস্থা। এমন অনেক নিয়ম মানা হয়নি বলে অভিযোগ। সব দিক খতিয়ে দেখে অবশেষে আদালত এই বিল্ডিং দুটি ভেঙে ফেলার পক্ষে রায় দান করে। 

এরপর বিষয়টি উচ্চ আদালত অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্টে দাখিল করা হয়। সেখানেও সুপ্রিম কোর্ট গত বছর অর্থাৎ ৩১ আগস্ট, ২০২১ সালে একই সিদ্ধান্ত বজায় রাখে। সুপ্রিম কোর্ট নয়ডা কর্তৃপক্ষকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই বিল্ডিং দুটি ভেঙে ফেলার আদেশ দেয়। বহুতল এই ভবন দুটি ভেঙে ফেলার মূল কাজ এখনও শুরু হয় নি। 

তবে এখন থেকে দেওয়ালগুলি ড্রিল করে সেখানে বড় বড় গর্ত তৈরি করার কাজ শুরু হয়েছে। এই গর্তগুলির মধ্যেই বিস্ফোরক রেখে ভবন ধ্বংসের কাজ করা হবে। মূল কাজ যখন শুরু হবে, তখন বহু কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই জোড়া ভবন ৭ থেকে ৮ মিনিটের মধ্যে ধূলিস্মাৎ হয়ে যাবে। 

ভবন ধ্বংসের মূল কাজ শেষ হবার পর যাতে ধ্বংসস্তুপের ধুলোবালি আশপাশের মানুষকে ক্ষতি না করে, তারজন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। পাশাপাশি, এলাকার মানুষকে এব্যাপারে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। 

যদিও নয়ডা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, তারা এই প্ল্যানটি পাশ করার জন্য আইআইটি, রুরকি সহ বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করার পরই এর ছাড়পত্র দিয়েছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট তাদের সিদ্ধান্তে অনড় থাকে। এরপর নয়ডা কর্তৃপক্ষ এডিফিক ইঞ্জিনিয়ারিং নামে একটি কোম্পানিকে এই টাওয়ার দুটি ভেঙে ফেলার দায়িত্ব দেয়। ভেঙে ফেলার সময়সীমা ঠিক হয় ২২ মে, ২০২২।  

পরে সেই সময়সীমা বেড়ে হয় ২১ আগস্ট। বর্তমানে এই দিনটি আবার পরিবর্তন করে চূড়ান্ত দিন ঠিক হয়েছে ২৮ আগস্ট। এই টাওয়ার দুটি ভাঙার জন্য কোম্পানিটিকে প্রায় ৩ হাজার ৭০০ কেজি বিস্ফোরক ব্যবহার করতে হবে। কাজ সম্পন্ন করতে আরও বিস্ফোরক প্রয়োজন হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।  

তারমধ্যে ৩২৫ কেজি বিস্ফোরক আজই এসে পৌঁছেছে। কঠোর নিরাপত্তার বেষ্টনীতে সেই বিস্ফোরকগুলিকে রাখা হয়েছে। কাজ সম্পূর্ণ করতে আরও বিস্ফোরক প্রয়োজন হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বিদেশে এই ধরনের ঘটনা আগে ঘটলেও ভারতে এত বড় বিল্ডিং ভাঙার ঘটনা প্রথমবারই ঘটবে।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন