Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই, ২০২২

হারানো চাকরি ফিরে পেতে মমতা ব্যানার্জীর কাছে আকুতি

Desire-to-regain-lost-job

সমকালীন প্রতিবেদন : ১৯৯৩ সালের ২১ জুলাই। তৎকালীন রাজ্য যুব কংগ্রেস সভানেত্রী মমতা ব্যানার্জীর নেতৃত্বে মহাকরণ অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছিল। কলকাতা পুলিশে কনস্টেবল পদে কর্মরত উত্তর ২৪ পরগনার গাইঘাটা থানার ইছাপুর গ্রামের বাসিন্দা সিরাজুল হক মন্ডলের সেই সময় মহাকরণের পশ্চিমদিকের গেটে ডিউটি পরেছিল। 

দুপুর আড়াইটে নাগাদ যখন মমতা ব্যানার্জীর নেতৃত্বে যুব কংগ্রেস কর্মীরা মহাকরণের দিকে এগিয়ে আসছিলেন, পুলিশ তখন তাঁদেরকে আটকে দেয়। সেইসময় ঘটনাস্থলে হাজির হন আইপিএস অফিসার দীনেশ বাজপেয়ী। তাঁর নির্দেশে পুলিশের একাংশ লাঠি চালাতে শুরু করে। 

আর সেই লাঠির আঘাতে রক্তাক্ত হয়ে লুটিয়ে পরেন মমতা ব্যানার্জী। চোখের সামনে সেই দৃশ্য দেখে নিজের চাকরির কথা ভুলে গিয়ে ডিউটি অফিসারের কথায় মানবিক মন সাড়া দিয়ে ওঠে সিরাজুলের। আর তখনই হাতের মাস্কেটটি আইপিএস অফিসারের দিকে তাক করে সিরাজুল বলেছিলেন, এখনই এই অত্যাচার বন্ধ করুন। নাহলে গুলি চালাতে বাধ্য হবো।

এরপর অত্যাচার বন্ধ হয়। সিরাজুলের মতো কিছু মানবিক পুলিশ অফিসার এবং যুব কংগ্রেস কর্মীরা তখন মমতা ব্যানার্জীকে প্রাথমিকভাবে শুশ্রুষা করে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। সিরাজুলের সেদিনের সেই প্রতিবাদী ভূমিকায় প্রাণে বেঁচে যান আজকের মুখ্যমন্ত্রী, সেদিনের যুব কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জী।

ডিউটিরত অবস্থায় নিজের ঊর্দ্ধতন আধিকারিকের নির্দেশ অমান্য করে তার দিকেই উল্টে বন্দুক তাক করার অপরাধে এরপর চাকরি খোয়াতে হয় সিরাজুলকে। আর তারপর থেকে কর্মহীন অবস্থায় এতো বছর ধরে কাটাতে হচ্ছে তাঁকে। 

২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর মমতা ব্যানার্জী মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায় নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন সিরাজুল এবং তাঁর পরিবার। ভেবেছিলেন, এবারে হয়তো হারানো চাকরি ফিরে পাবেন। কিন্তু কোথায় কি। চাকরি তো দূরের কথা, প্রতি বছর ঘটা করে ২১ জুলাই শহীদ দিবস পালন করা হয়। কিন্তু সেই বিশেষ দিনটিতে ডাক পান না সিরাজুল। আক্ষেপের সুর তাঁর গলায়।

চাকরি হারিয়ে মা, ভাই, বোনকে নিয়ে ইছাপুরের ভগ্নপ্রায় চাঁচের বেড়ার ঘরে অতি কষ্টে দিন কাটছে সিরাজুল এবং তাঁর পরিবারের। কাঁদতে কাঁদতে মমতা ব্যানার্জীর উদ্দেশ্যে সিরাজুলের বৃদ্ধা মা রূপবান মন্ডলের আকুতি, মমতা ব্যানার্জী যেন তাঁর ছেলের হারানো ন্যায্য চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।

যে নেত্রীর জীবন বাঁচাতে সেদিন সরকারি পদস্থ আধিকারিকের উপর বন্দুক তাক করে চাকরি হারিয়েছিলেন, সেই নেত্রী যদি সিরাজুলের ন্যায্য পাওনার ব্যবস্থা করে দেন, তাহলে এই পরিবারটি বেঁচে যায়। এমনই আবেদন সিরাজুল এবং তাঁর পরিবারের।





কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন