Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শনিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২২

উত্তর সম্পাদকীয় : অস্তিত্বের সংকটে পয়লা বৈশাখ

Holy-Boishakh-in-the-crisis-of-existence

অস্তিত্বের সংকটে পয়লা বৈশাখ 

অজয় মজুমদার 

বাংলাটা এখন বাংলায় নেই। ১ বৈশাখ একটা বিশেষ দিন। বাংলা নববর্ষের শুরু৷ কিন্তু এই নববর্ষ ধরে কোনও কাজই হয় না৷ দুশো বছরের ইংরেজ শাসনের সময়টা আমরা আজও ভুলতে পারছি না৷ সেইজন্যই ইংরেজি ক্যালেন্ডার মতে সব কিছু চলে৷ পৃথিবীটা এখন একটা গ্লোবাল ভিলেজ। সবার সুখে, সবার দুঃখে কাতর হওয়াটা স্বাভাবিক ঘটনা৷ একটি ছয় বছরের শিশু মায়ের কবরের সামনে দাঁড়িয়ে৷ 

যুদ্ধ বা বোমা-গুলিতে নয়, খাদ্যাভাব এবং প্রবল মানসিক যন্ত্রণায় মৃত্যু হয়েছে মায়ের৷ রাশিয়ার আক্রমণ এখনোও অব্যাহত। ইউক্রেনের ক্ষয়ক্ষতি সীমাহীন৷ কি হবে ১ বৈশাখ কিংবা ফার্স্ট জানুয়ারি পালন করে!‌ মানবতার বোধই তৈরি হল না৷ চলছে আমাদের দেশে ক্রমবর্ধমান মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা৷ মানবাধিকারের মূল্যবোধের সঙ্গে জড়িত কিছু দিক লংঘন করছে কিছু সরকার, পুলিশ এবং জেলের কর্মকর্তারা৷ আমরা চুপচাপ৷ কমিশনের কোনও রিপোর্টই ঠিকঠাক প্রকাশিত হয় না৷ 

সম্প্রতি বিহারের গোটা একখানা লোহার ব্রিজ দুষ্কৃতীরা কেটে নিয়ে পালালো৷ বহু মানুষের কর্মসংস্থানকে বদলে একের পর এক মূর্তি বসিয়ে বাহবা নেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে৷ এদিকে, শ্রীলংকার সাধারণ মানুষ কলম্বোর রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন৷ সেদেশে অভাব খাদ্য ও জ্বালানির৷ 

আবার, দক্ষিণ এশিয়ায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য হাম্বান টোটা বন্দরটি কব্জা করেছে চিন। উদ্দেশ্য ভারতকে চাপে ফেলা৷ ঝড় বাদলে আঁধার রাতে কেউ যদি পথে আলো না ধরে, তাহলে এমনি ফস করে দেশলাই ধরিয়ে আপন বুকের পাঁজড় জ্বালিয়ে নিয়ে রাস্তার মধ্যেই একলা একলা জ্বলে পুড়ে যেতে হবে৷ রবীন্দ্রনাথ ঠিক এমন বিধান দেননি।

এদিকে, সমস্যা নতুনভাবে মাথাচাড়া দিচ্ছে৷ ইউক্রেনের ইভান কিভ শহরের কিশোরী ও তরুণীর চুল কেটে ফেলেছে তাঁদের শরীরের আবেদন খানিকটা কমাবার জন্য৷ রুশ সেনাদের ধর্ষণ থেকে বাঁচাবার জন্য। ইউক্রেন যুদ্ধে পরিজন হারানো, শেষ সম্বলটুকু হারানো মানুষদের সংকটের কথা ভেবে উদ্বাস্তুদের পাশে অনেকে দাঁড়িয়েছেন।

একদিকে যুদ্ধ, আরেকদিকে নৈতিকতার পতন৷ মানব সভ্যতা শেষ পর্যন্ত কোথায়? এ এক বর্বরোচিত সংস্কৃতির বাতাবরনে আবৃত। শেষ পর্যন্ত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কি একটি অতিমারি ডেকে আনতে পারে? মার্কিন প্রশাসন সেইরকমই সন্দেহ করে। ইউক্রেনে প্রচুর জৈব অস্ত্র মজুত আছে৷ 

সামান্য অসতর্ক হলেই বিপদ ঘনিয়ে আসবে, আসতে পারে৷ ইউক্রেনে ২০০৫ সাল থেকে মার্কিন ডিফেন্স থ্রেট রিডাকশন এজেন্সির আওতাভুক্ত৷ মার্কিন সহায়তায় ইউক্রেনের গবেষণাগারগুলি জৈব অস্ত্র তৈরির কারখানায় পরিণত হয়। সে জৈব অস্ত্র রাশিয়াতে পড়লেই বিপদ| 

আমেরিকা বিশ্বের একমাত্র দেশ, যাদের ভিন্ন ভিন্ন গোত্রের করোনা ভাইরাসের পাঁচটি ভ্যারাইটি আছে৷ ইরান, ইতালি, চিনের ভাঁড়াড়ে আছে একটি৷ পৃথিবী আজ অজানা অসুখে আক্রান্ত৷ ১ বৈশাখ বা বাংলা নববর্ষ বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গে একটু ভিন্নভাবে অনুষ্ঠিত হয়৷ 

বাঙালিরা ঐতিহাসিক বাংলা হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে নদীতে স্নান করেন| তারপর মা লক্ষ্মী, গণেশের পূজার্চনা করেন। ব্যবসার ক্ষেত্রে নতুন বছরের নতুন খাতা চালু হয়। এই দিনটি ছুটির দিন হিসেবে পালিত হয়। বাংলাদেশ, পশ্চিমবঙ্গ এবং ত্রিপুরাতে এই দিনকে মানবতা–সংস্কৃতির ঐতিহ্য হিসেবে আয়োজন করা হয়।

তবুও আমরা এক সংকটঘন অবস্থায় পৌঁছে গিয়েছি৷ সেখানে অপসংস্কৃতিতে ভরে গেছে দেশ৷ বিচার ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে৷ প্রশাসন বিচার ব্যবস্থাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না৷ দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা তলানীতে পৌঁছে গেছে। সেখানে ১ বৈশাখের অস্তিত্ব সংকট হচ্ছে৷ যে অর্থ যুদ্ধে এবং জীবাণু অস্ত্র তৈরীতে খরচ হচ্ছে, সেই অর্থ মানুষের কল্যাণের জন্য খরচ করলে পৃথিবী দারিদ্র্যমুক্ত হতো, এ কথা সহজে বলা যায়৷ 

তাই সুস্থ সাংস্কৃতিক চেতনা আগে প্রশাসনিক মানুষদের মধ্যেই আসতে হবে| তবেই তো পৃথিবীর শান্তি আসবে৷ পয়লা বৈশাখ কিংবা ফার্স্ট জানুয়ারি, কোনও কিছুই বাস্তবায়িত হবে না, যদি না পৃথিবীতে শান্তি আসে। সুতরাং, আমরা শান্তির খোঁজে ভাবি, শান্তির প্রত্যাশা করি এবং শান্তির জন্য প্রার্থনা করি৷‌‌‌



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন