শম্পা গুপ্ত : কংগ্রেস কাউন্সিলার খুনের ঘটনায় ৬ জন সদস্যকে নিয়ে সিট গঠন করলো রাজ্য সরকার। কাউন্সিলর খুনের ঘটনার তদন্ত করবে পুলিশের এই বিশেষ দল। এদিকে, পুরুলিয়া ঝালদা কংগ্রেস কাউন্সিলর খুনের ঘটনায় পুলিশ তাঁর ভাইপো দীপক কান্দু কে গ্রেপ্তার করে আজ পুরুলিয়া আদালতে তোলে। যদিও তাতে খুশি নন মৃতের স্ত্রী এবং পরিবারের সদস্যরা।
মৃতের স্ত্রী পূর্ণিমা দেবীর অভিযোগ রয়েছে খোদ ঝালদা থানার আইসি সঞ্জিব ঘোষের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে আরও বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধেও। পুলিশ এপর্যন্ত মাত্র একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। পাশাপাশি, কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি আইসি-র বিরুদ্ধে। এতে ভরসা পাচ্ছেন না তিনি। এদিন তিনি ফের সিবিআই তদন্তের দাবী করেন।
কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু হত্যার ঘটনার পেছনে বড়সড় চক্র কাজ করেছে বলে দাবী করেছেন কংগ্রেসের জেলা সভাপতি নেপাল মাহাতো। অবিলম্বে আইসি-র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবার দাবী করেন তিনি। তিনি বলেন, 'আমাদের কাছে মূল অভিযুক্ত হচ্ছেন স্বয়ং আইসি। এনিয়ে ভাইরাল হয়েছে পুলিশের এই আধিকারিকের অডিও টেপ। স্বামীর হত্যার পর তার স্ত্রী পূর্ণিমা যে অভিযোগ পত্র ঝালদা থানায় দেন তা আই সি নিতে অস্বীকার করেন।'
এই তথ্য দিয়ে নেপালবাবু বলেন, 'আইসি-র বিরুদ্ধেই অভিযোগ থাকায় স্বাভাবিকভাবেই তিনি তা গ্রহণ করেননি। এরপর সরাসরি এ পি-র কাছে অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে। যে তদন্ত চলছে তা সুভাষ গঁরাইয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে করা হচ্ছে। সেখানে শুধু অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীদের কথা বলা হয়েছে। অথচ পূর্ণিমা কান্দু যে অভিযোগ করেছেন, তাতে নাম ধরে অভিযোগ করা হয়েছে। এখানে চালাকি করা হয়েছে।' এমনই দাবী করেন নেপালবাবু।
নেপাল মাহাতো আরও বলেন, 'যে ঘটনা হয়েছে তাতে বিশাল ষড়যন্ত্রের আভাষ পাওয়া যাচ্ছে। এই খুনের সঙ্গে ঘরোয়া বিবাদের একটা সূত্র খাড়া করার চেষ্টা করছে পুলিশ। এটি সঠিক নয়। এই খুন সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক।' এদিন সিআইডির তরফ থেকে তিন অফিসার ঝালদার আনন্দবাজারে নিহতের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে যান। বেশ কিছুক্ষণ তাঁরা পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলেন।
সাংবাদিকদের কাছে সিআইডির আধিকারিকরা কোনও মন্তব্য না করতে চাইলেও তপন কান্দুর ভাইপো মিঠুন কান্দু বলেন, সিআইডি অফিসারেরা পারিবারিক বিষয়গুলি জানতে চাইছিলেন। পরিবারের সবার সঙ্গে সম্পর্ক এবং কারোর সঙ্গে কোনও শত্রুতা আছে কিনা, তা জানতে চাইছিলেন তাঁরা।
এদিকে, এদিন গ্রেপ্তার হওয়া দীপক কান্দুকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে পুরুলিয়া জেলা আদালতে তোলা হয়। পুলিশ তার বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় মামলা দায়ের করেছে। এদিন আদালতের কাছে পুলিশ ১৪ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজত চেয়ে আবেদন করলে মুখ্য বিচার বিভাগিয় ম্যাজিস্ট্রেট রিনা তালুকদার তা মঞ্জুর করেন।
এই প্রসঙ্গে জেলা পুলিশ সুপার এস সেলভামুরুগান জানিয়েছেন, ধৃতকে জেরা করে খুনের ব্যাপারে আরও সূত্র বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেই মতোই তদন্তের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, তদন্তে অগ্রগতির জন্য ছয় সদস্যের একটি স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম গড়া হয়েছে। যার মাথায় রয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপারেশন চিন্ময় মিত্তাল। এই তদন্তকারী দলে রাখা হয়েছে ডিএসপি (ডিএনটি) অরুণাভ দাসকেও। সিআইডির সহযোগিতায় তদন্ত চালাচ্ছেন তারা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন