Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বৃহস্পতিবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২২

TOUR : জলপেস, ভ্রামরীদেবীর মন্দির এবং তিস্তা ব্যারেজ উত্তরবঙ্গের গর্ব (পর্ব–১)‌

 

Teesta-Barrage-is-the-pride-of-North-Bengal-1

তিস্তা ব্যারেজ উত্তরবঙ্গের গর্ব (পর্ব–১)                

অজয় মজুমদার

সিসামারা থেকে সকালে ব্রেকফাস্ট করে আমরা বেরিয়ে পড়লাম৷ টুসি এবং ওর মেয়ে আমাদের গাড়ি পর্যন্ত সি অফ করতে এলো৷ ওদের চোখে জল৷ টুসির আতেথিয়তায় আমরা সকলেই আপ্লুত। আমরা সবাই ওর জেঠু৷ একটা প্রানের ডাক, একটা অন্তর থেকে উঠে আসা ডাক। মনটা ভীষণ খারাপ হয়ে গেল। কথা বলার ইচ্ছে তাই উবে গেল৷ গ্রাম ছাড়িয়ে ধীরে ধীরে আমরা হাইওয়েতে উঠলাম৷ গাড়িতে সবাই চুপচাপ৷ বাইরে তাকিয়ে দেখি শালকুমার হাইস্কুল৷ বেশ কিছুক্ষণ পরে ফালাকাটা। যেন বিজ্ঞাপনে মুখ ঢেকেছে। শহরটি বেশ বড়৷ এবার আমরা এলাম ধুপগুড়ি৷ তারপর এলো ময়নাগুড়ি৷ এবার আমরা হাসলুড্যাঙ্গা টোলপ্লাজার পাশের দোকানে চা ও কেক খেলাম৷ হোটেলের পেছনে বিল। বিলে ফুটে আছে বিরল প্রজাতির লাল শালুক। বিলের একটা অংশে রয়েছে পদ্ম৷ এই অঞ্চলটা জলপাইগুড়ির মধ্যে পড়ে৷ 


আরো অনেকক্ষণ গাড়ি চলার পর আমরা পৌঁছালাম গরুমারা nature's কটেজে৷ এটি মুর্তি উত্তর ধুপঝোড়া বনানী৷ ওখানেই আমরা দুপুরের খাওয়া সারলাম। ঘরে একটু বিশ্রাম নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম৷ এলাম মুর্তি ব্রিজের কাছে। ব্রিজটি খুবই সংকুচিত৷ জলের গতি বেশ ভালই ছিল৷ অনেকে মাছ ধরছেন। তখন সন্ধে নেমেছে৷ মুর্তির ওপারেই গরুমারা অভয়ারণ্য। আর এগোনো যাবে না৷ আমরা আবার আমাদের রিসোর্টে ফিরে এলাম৷ আজ ভ্রমনের শেষ দিন। শেষের দিনে এটা অনুষ্ঠান প্রতিবারই হয়। আজকের অনুষ্ঠান আমাদের সঙ্গী সুষমা ঘোষের জন্মদিনকে ঘিরে। বেশ জমকালো অনুষ্ঠান হল। শহর থেকে এসেছিল ফুল, কমলা, কেক আরও অনেক খাদ্য সামগ্রী৷ সবাই সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখলেন সুষমাকে নিয়ে। শেষে কোরাস সংগীতের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠানের পরিসম্পাপ্তি ঘটলো৷ অনুষ্ঠানের মধ্যমনি ছিলেন রাজেন প্রধান৷ গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়ছিল রাতে শুয়ে পড়লাম তাড়াতাড়ি৷


ভোরে উঠে আবার গেলাম মুর্তিনদীর ব্রিজে। অনেকক্ষণ মাছ ধরা দেখলাম৷ জলের গম্ভীর আওয়াজ চারিদিক মুখোরিত করে রেখেছে। কিছুক্ষন বাদে ফিরে এলাম। ব্রেকফাস্ট সেরে আমরা বেরিয়ে পড়লাম৷ আজ রাতে আমাদের ট্রেন কাঞ্চনকন্যা৷ মালবাজার স্টেশন থেকে শিয়ালদা৷ প্রথমে আমরা জলপেস মন্দিরের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। এটি ময়নাগুড়িতে। শিবমন্দির এখানকার মানুষের কাছে বাবা ভোলানাথ৷ এই মন্দিরটি খুবই জাগ্রত৷ মন্দিরে আসার দেড় কিলোমিটার আগে দুর্বল সেতু আমাদের আসতে বাঁধা দিয়েছিল। কিন্তু ইচ্ছাশক্তির কাছে বাধা হার মানল। আমরা টোটো করে জলপেস মন্দিরে এসেছিলাম৷ তখন মন্দিরের ভিতরে সংস্কারের কাজ হচ্ছিল৷ আমাদের অনেকেই এই মন্দিরে পুজো দিয়ে ফিরে এলো৷ 


জলপেস মন্দির থেকে আবার টোটো করে ফিরে এলাম সেই দুর্বল সেতুর কাছে। এবার আবার আমাদের গাড়িতে এলাম৷ বেশ কিছুক্ষন গাড়ি চলার পর আমরা এলাম ভ্রামরী দেবীর মন্দিরে৷ সতী মায়ের ৫১ পীঠের একপিঠ৷ মায়ের মন্দিরে খুব একটা ভীড় নেই৷ অল্প কিছু দোকান পুজোর ডালি সাজিয়ে বসে আছে। অনেকেই ডালা কিনে পুজো দিচ্ছেন৷ ভ্রামরী মায়ের পাশের ঘরে বাবা ভোলানাথের মূর্তি পূজিত হন৷ ওখানে লোকমুখে শোনা যায় ৮৪ বছরের এক বৃদ্ধ স্বপ্নে মায়ের ৫১ পীঠের সন্ধান পান৷ তার প্রচেষ্টায় এই মন্দির। যদিও ৫১ পিঠ নিয়ে বিতর্ক আছে। বর্তমানে ভ্রামরী মায়ের মন্দির হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। 




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন