দেবাশীষ গোস্বামী : রাজ্যে এই প্রথম কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগে গড়ে উঠতে চলেছে বৃদ্ধাশ্রম। এমনই দাবি এলাকার তৃণমূল বিধায়কের। মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) জেলার নবগ্রামের খয়রাগাছিতে গড়ে উঠবে এই বৃদ্ধাশ্রম। ইতিমধ্যেই এব্যাপারে জমি চিহ্নিতকরণের পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ দল এলাকা পরিদর্শন করে গেছে। বৃদ্ধাশ্রম (Old Age Home) পরিচালনার জন্য একটি কমিটিও গড়ে তোলা হয়েছে। খুব দ্রুত নির্দিষ্ট জমিতে পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ শুরু হবে বলে জানা গেছে।
যত দিন যাচ্ছে বৃদ্ধাশ্রমের চাহিদা বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে গোটা দেশের পাশাপাশি এই রাজ্যেও বেসরকারি উদ্যোগে পরিচালিত হচ্ছে প্রচুর বৃদ্ধাশ্রম। তবে সেখানে মোটা টাকার বিনিময়ে থাকা–খাওয়ার পাশাপাশি দেখাশোনার সুযোগ পান বৃদ্ধবৃদ্ধারা। বেসরকারি সংস্থাগুলি এইধরনের বৃদ্ধাশ্রম গড়ে তুলে তার থেকে মোটা লাভ করে। ফলে সেখানে আশ্রয় পেতে গেলে মোটা টাকা গুনতে হয়। এক্ষেত্রে যাদের আর্থিক সামর্থ্য নেই, তাঁরা এই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হন। ফলে শেষ জীবনে এসে অনেক বৃদ্ধবৃদ্ধাকে যথেষ্ট কষ্টের মধ্যে দিয়ে দিন কাটাতে হয়।
আর এমনই অসহায়, দরিদ্র বৃদ্ধবৃদ্ধাদের জন্য সরকারি উদ্যোগে এবারে এই রাজ্যে গড়ে উঠতে চলেছে বৃদ্ধাশ্রম। মুর্শিদাবাদের নবগ্রামের খয়রাগাছিতে (Khayragachi) এর জন্য ৩৫ বিঘা জমি নির্দিষ্ট করা হয়েছে। নবগ্রাম (Nabagram) বিধানসভার তৃণমূল বিধায়ক কানাইচন্দ্র মন্ডল (TMC MLA Kanaichandra Mondal এব্যাপারে 'ই–সমকালীন' (E-SAMAKALIN) কে জানান, 'বেশ কয়েক মাস আগে আমি দিল্লিতে একটি কর্মসূচিতে গিয়ে প্রথম জানতে পারি যে, ভারতের অন্যান্য রাজ্যে কেন্দ্র সরকারের সহযোগিতায় বৃদ্ধাশ্রম গড়ে তোলা হয়েছে। এরপরই আমি আমাদের রাজ্য সরকারের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন দপ্তরের কাছে আবেদন জানাই। তারা সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে বৃদ্ধাশ্রম গড়ে তোলার বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে।'
জানা গেছে, এই বৃদ্ধাশ্রম গড়ে তোলা এবং তা পরিচালনার জন্য যা অর্থ ব্যয় হবে, তার ৯০ শতাংশ দেবে কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। বাকি ১০ শতাংশ দেবে রাজ্য সমাজ কল্যান দপ্তর এবং স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতি, যারা এটি পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে। রাজ্য সরকার এব্যাপারে ৩৫ বিঘা জমি দিয়েছে। পদাধিকারবলে স্থানীয় বিধায়ক কানাইচন্দ্র মন্ডল এবং স্থানীয় বিডিওকে যথাক্রমে চেয়ারম্যান এবং সেক্রেটারি করে স্থানীয় নবগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং অন্যান্য সদস্য মিলিয়ে মোট ১৩ জনের একটি কমিটি গড়ে তোলা হয়েছে। তাঁরাই গোটা বিষয়টি দেখভাল করবেন।
বিধায়ক কানাইচন্দ্র মন্ডল আরও জানান, 'আপাতত ৭৫ জন অসহায় বৃদ্ধবৃদ্ধাকে চিহ্নিতকরণ করে তাঁদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। যেহেতু প্রস্তাবিত বৃদ্ধাশ্রমের পরিকাঠামো গড়ে তুলতে একটু সময় লাগবে, তাই আপাতত ওই ৭৫ জন বৃদ্ধবৃদ্ধাকে নিয়ে পলশুন্ডা এলাকায় একটি সরকারি ভবনে বৃদ্ধাশ্রম পরিচালনার কাজ শুরু করে দেওয়া হবে। সেখানে যারা আশ্রয় পাবেন, তাঁদের থাকা, খাওয়া, চিকিৎসা সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বিনামূল্যে দেওয়া হবে। আগামীদিনে বৃদ্ধাশ্রমের নিজস্ব পরিকাঠামো তৈরি হয়ে গেলে, সেখানে ১৫০ জন অসহায় বৃদ্ধবৃদ্ধাকে রাখার ব্যবস্থা করা হবে।'
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন