Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শুক্রবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২১

দুর্গাপুজো ‌ও বিজয়া

Durgapujo-and-Bijaya

দুর্গাপুজো ‌ও বিজয়া

পীযূষ হালদার

এবার আসা যাক বিজয়ার কথায়। জগদীশ্বরী যখন ঘরের মেয়ে হয়ে পিত্রালয় থেকে রওনা দেন স্বামীর ঘরের উদ্দেশ্যে, তখন নেমে আসে এক শূন্যতা। বিদায়বেলায় আর আড়ম্বরের মেজাজ থাকে না। ঘটা ছেড়ে একেবারে ঘরোয়া সেই আয়োজনে বাঙালি গৃহস্থের স্বকীয় আন্তরিকতার ঘনঘটা। কোথাও কোথাও ঘরের মেয়ে উমা পান্তা ভাত, কচু শাক, মাছ খেয়ে রওনা দেন কৈলাসের পথে, একেবারে লৌকিক ঢঙে। 


বিজয়া আসলে বিজয় উৎসব পালন করা। মহিষাসুর নিধনের পরে স্বর্গের দেবতারা বিজয় উৎসব পালন করেছিলেন। রাজা নবকৃষ্ণ ভেবেছিলেন, সিরাজদৌলার পরাজয় মানে হিন্দুদের জয়। তাই তার প্রতিমা বিসর্জনের পর্ব ছিল একেবারে অন্যরকম। ঢাকি, ঢুলি, ব্যান্ডপার্টি আর আলোর রোশনাই নিয়ে বের হতো মস্ত শোভাযাত্রা। 


আমাদের ছোটবেলার প্রতিমা নিরঞ্জন ও বিজয়া দশমীর দেখা ছবি এখন কেবল স্মৃতিতে। সিঁদুর খেলার পর দেবীকে শেষ প্রণাম করে আঁচলে চোখ আড়াল করে মা, কাকিমারা বাড়ী ফিরতেন। বিকেলের জন্য লুচি, ঘুগনি, নারকেল নাড়ু বানিয়ে রেখে আমাদের নিয়ে ছুটতেন ইছামতীর ধারে প্রতিমা নিরঞ্জন দেখতে। 


তখন ছিল ইছামতীর উপরে ভাসমান সেতু। ভাসমান সেতু খুলে প্রশস্ত ইছামতীর বুকে নিরঞ্জন দেখতে বনগাঁ শহরের মানুষ রাস্তার দু'ধারে কাতারে কাতারে দাঁড়িয়ে থাকতেন। এখন শহরে কার্নিভালের পর একটা নির্দিষ্ট ঘাটে এসে প্রতিমা নিরঞ্জন হয়। আগের সেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিজয়ার প্রণামও এখন আর চোখে পড়ে না। 


তবে বাড়ির বিজয় উৎসব এখন ছড়িয়ে পড়েছে পাড়ায়। বেশ কয়েকদিন ধরে চলে এই বিজয়া সম্মিলনী। এখন সব অংশের মানুষই এই বিজয়াতে অংশগ্রহণ করেন। অনেক কিছু হারিয়ে একটুখানি পরম পাওয়া 'এই মহামানবের মিলনতীর্থ এই ভারতবর্ষে।' 'আসছে বছর আবার হবে' এই মধুর শ্রবণে ফের স্বপ্ন বুনতে বসি। 




         ‌

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন