দেবাশীষ গোস্বামী : অসাধ্য সাধন করতে চলেছে কলকাতার বিখ্যাত বেসরকারি হাসপাতাল মেডিকা সুপার স্পেস্যালিটি হাসপাতাল। সোমবার রাতে একটি জটিল অস্ত্রোপচার করে এক রোগীর দেহে ফুসফুস প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে কলকাতা তথা পূর্ব ভারতে এই অস্ত্রোপচারের ঘটনা বিরলতম।
দীর্ঘদিন ধরেই মেডিকা সুপার স্পেস্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি কলকাতার বাসিন্দা দীপক হালদার নামে এক ব্যক্তি। তিনি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর তাঁর ফুসফুসের একাংশ কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে। চিকিৎসকদের অভিমত, একমাত্র ফুসফুসের প্রতিস্থাপন ছাড়া তাঁকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব নয়।
এইরকম সময় সুরাটের ইউনাইটেড গ্রীন হাসপাতালে এক ব্যক্তির ব্রেন ডেথ হয়েছে বলে খবর পাওয়া যায়। ওই ব্যক্তির পরিবার তাঁর অঙ্গদান করতে প্রস্তুত বলে জানানো হয়। এই ব্যক্তির ফুসফুস কলকাতার দীপক হালদারের শরীরে প্রতিস্থাপন করার ব্যাপারে রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য দপ্তরের অনুমতি চাওয়া হয়।
রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে সে অনুমতি মেলার পর সোমবার সকালেই মেডিকা সুপার স্পেস্যালিটি হাসপাতালের একদল বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সুরাটে পৌঁছান। সেখান থেকে ওই ব্যক্তির ফুসফুসটি বিশেষ পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করে রাত দশটা নাগাদ বিশেষ বিমানে কোলকাতায় নিয়ে আসা হয়।
কলকাতা পুলিশের সহযোগিতায় গ্রিন করিডোরের সৌজন্যে দ্রুত মেডিকা হাসপাতালে পৌঁছানোর পর বিশেষ চিকিৎসক দল রাত এগারোটা নাগাদ অস্ত্রপচার করে দীপক হালদারের শরীরে ওই ফুসফুস প্রতিস্থাপন করেন। প্রায় সারা রাত ধরে এই অপারেশনে চলে। তবে এই বিরল অস্ত্রপচারের সফলতা সম্পর্কে এখনও বিশেষ কিছু জানা যায় নি।
এই ধরণের ফুসফুসের প্রতিস্থাপন ভারতবর্ষে অন্যত্র হলেও পূর্ব ভারতে এই প্রথম। কলকাতায় একমাত্র মেডিকা সুপার স্পেস্যালিটি হাসপাতাল ছাড়া সরকারি এসএসকেএম হাসপাতালের এই প্রতিস্থাপন করার অনুমতি আছে। কিন্তু প্রয়োজনমতো ফুসফুস না মেলায় এতদিন কোলকাতায় এই প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয় নি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন