Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শনিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১

কোভিড তহবিল : ‌‌কিছু সঙ্গত প্রশ্ন

Covid-funds

কোভিড তহবিল : ‌‌কিছু সঙ্গত প্রশ্ন

শুভঙ্কর সাহা

সারাদেশে কোভিড মোকাবিলায় গতবছর মার্চ মাসেই তৈরি হয় পিএম কেয়ারস অর্থাৎ প্রাইম মিনিস্টার্স সিটিজেন অ্যাসিস্ট্যান্ট এন্ড রিলিফ ইন এমার্জেন্সি সিচুয়েশন ফান্ড। আপৎকালীন পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর তহবিল, মানে তাই দাঁড়ায়। কিন্তু আজ দেড় বছর পরে শুনতে হচ্ছে, এর সঙ্গে আমাদের কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও যোগ নেই, প্রধানমন্ত্রীরও কোনও যোগ নেই। এ যেন আছে অথচ নেই। মায়াবী এক ব্যাপার। সুকুমার রায়ের কথা নিশ্চয়ই সবার মনে পড়বে। ছিল বেড়াল হয়ে গেল রুমাল। 


এতদিন পর্যন্ত আমরা সবাই জেনে এসেছি, পিএম কেয়ারস-এ  অনুদান দেওয়া মানে দেশের সেবা করা। দেশের জনগণের কাজে সেই টাকা লাগানো। দিল্লি হাইকোর্টে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর হলফনামা জারি করে জানিয়ে দিলো এর সঙ্গে তাদের কোনও সম্পর্ক নেই! কি অদ্ভুত না! যে তহবিলের নামের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী কথাটি আছে, অথচ সেই তহবিলে প্রধানমন্ত্রী নাকি নেই! তার ছবি সেখানে আছে, রাষ্ট্রের প্রতীক আছে ! 


তর্কের খাতিরে যদি ধরেও নিই যে, কেন্দ্রীয় সরকার এর পরিচালনায় নেই, তাহলে তো কালকেই আরও অনেক সংস্থা বা ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর ছবি, রাষ্ট্রীয় প্রতীক চিহ্ন ব্যবহার করে লোক ঠকাতে শুরু করে দেবে। নিশ্চয়ই তখন রাষ্ট্র' হাত গুটিয়ে বসে থাকবে! প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের হলফনামা অনেকগুলো অপ্রিয় প্রশ্নকে উস্কে দিয়ে গেল। 


এই তহবিল কে বা কারা গঠন করেছিল? এই তহবিলের দেখভাল করার অধিকার কাদের? কোন অধিকারে তারা সরকারি কর্মীদের আহ্বান জানাতে পারে এই তহবিলে দান করার? কারা বিজ্ঞাপন দিল খবরের কাগজে, টিভির পর্দায়? কোটি কোটি টাকা অনুদান হিসেবে জমা পড়ল। তার হিসাব কে বা কারা দেবে? সেই হিসাব পরীক্ষাই বা করবে কারা? 


পৃথিবীর প্রায় সর্বত্রই প্রতিরক্ষা বা জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত কিছু তথ্য সাধারণের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া হয় না। কিন্তু কোভিডের মতো জাতীয় বিপর্যয় যেখানে নেমে আসে, যেখানে দেশের প্রত্যেকটি নাগরিক জড়িয়ে যান, সেখানে এমন একটি তহবিলকে নিয়ে অস্বচ্ছতা থাকবে এটা কাম্য নয়। 


একটি কল্যাণকামী রাষ্ট্রের এটা প্রাথমিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে এই সমস্ত তথ্য তার জনগণকে জানানো, তার হিসেব দেওয়া। আর তা যদি না হয়, তাহলে বুঝতে হবে আমরা স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও প্রকৃত গণতন্ত্র বা কল্যাণকামী রাষ্ট্রের ধারেকাছেও পৌঁছাতে পারিনি! বৃহত্তম গণতন্ত্রের ঠুলি চোখে চাপালেও সত্যিটাকে যে আর চেপে রাখা যাচ্ছে না!




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন