লক্ষ্মণ সাঁতরা : সংস্কারের অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কবি, সমাজ সংস্কারক অক্ষয়কুমার দত্তের বাড়ি। হাওড়ার বালী থানা ও বালী পুরসভা ভবন থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে এই ভগ্নপ্রায় ভবনটির অবস্থান। দেওয়ানগাজি রোডের প্রারম্ভে, গ্র্যান্ডট্রাঙ্ক রোডের ধারে ও ভাগীরথী নদীর তীরে অবস্থিত এই ঐতিহাসিক ভবন।
আজ থেকে প্রায় দুশো বছর আগে এই বাড়ির গুরুত্ব ছিল অপরিসীম। এখানেই থাকতেন বিশিষ্ট কবি ও সমাজসেবী অক্ষয় কুমার দত্ত। জন্মসূত্রে তিনি এখানকার বাসিন্দা ছিলেন না। ১৮২০ খ্রিস্টাব্দের ১৫ জুলাই বর্ধমান জেলার চুপি গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা পিতাম্বর দত্ত ও পুত্র রজনীনাথ দত্তের তেমন খ্যাতি না থাকলেও নাতি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত ছিলেন বাংলা সাহিত্যের বিখ্যাত কবি।
ঊনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে তিনি ব্রাহ্ম সমাজের সঙ্গে যুক্ত হন। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত তত্ত্ববোধিনি সভার একজন সভ্য ছিলেন অক্ষয় দত্ত। পরবর্তীতে তত্ত্ববোধিনি পাঠশালার শিক্ষকও ছিলেন তিনি। ১৮৫১ থেকে তিনি 'religion' সহ পর পর বেশ কয়েকটি বই লেখেন। তাঁর বিখ্যাত 'চারুপথ' এর প্রথম ও দ্বিতীয় খন্ড যথাক্রমে ১৮৫৩ ও ১৮৫৪ সালে প্রকাশিত হয়। তবে তৃতীয় ও শেষ খন্ড রচিত হয় ১৮৫৯ সালে।
সমাজসংস্কার, সমাজসেবায় ও বাংলা সাহিত্যে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। ১৮৮৬ সালের ১৮ মে বালীর এই বাড়িতেই এই মহামনীষীর জীবনাবসান হয়। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সামনের কল্যানেশ্বরী মন্দির, পাশের বেলুড় মঠ এবং ওপারের দক্ষিণেশ্বর মন্দির দর্শনে আসেন। এই ঐতিহাসিক ভবন সংস্কার করে পর্যটকদের জন্য এর বন্ধদ্বার উদঘাটন করলে এই জেলার গরিমা আরও বৃদ্ধি পাবে, এমনই মনে করেন স্থানীয়রা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন