Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫

গাঁড়াপোতা ‌উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৮

 

Vandalism-at-school

সমকালীন প্রতিবেদন : গাঁড়াপোতা ‌উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ভাঙচুরের ঘটনায় এক বিজেপি নেতাকে গ্রেপ্তারের ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে যাওয়ায় রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তৃণমূল প্রতিবাদীদের গ্রেপ্তার করিয়েছে। অন্যদিকে তৃণমূলের বক্তব্য, রাজনৈতিক সুবিধা তোলার উদ্দেশ্যে এই ভাঙচুর চালানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, বুধবার বনগাঁ থানার গাঁড়াপোতা ‌উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ সামনে আসতেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র এলাকায়। অভিযোগ জানাজানি হতেই ছাত্রীরা সহ অভিভাবক এবং স্থানীয় বাসিন্দারা স্কুলের সামনে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। ক্রমাগত চাপা ক্ষোভ মুহূর্তেই বিস্ফোরিত হয়ে পরিস্থিতি হয়ে ওঠে অগ্নিগর্ভ। অভিযোগ, বিক্ষুব্ধ জনতার ওই ভিড়ে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর, পুলিশের উপর ইট ছোড়া এবং অশ্রাব্য গালিগালাজের ঘটনাও ঘটে।

অশান্তি ছড়ানোয় দ্রুত অভিযানে নামে বনগাঁ থানার পুলিশ। ঘটনার সময় উপস্থিত সন্দেহভাজন ৯ জনকে পুলিশ প্রথমে আটক করে। পরে তাদের মধ্যে থেকে ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগের পাশাপাশি ভাঙচুর এবং হিংসাত্মক আচরণের ঘটনায় আলাদা মামলা রুজু করে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন বিজেপি বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার মন্ডল চারের সহ-সভাপতি কল্লোল দাস। 

বাকি ধৃতদের নাম– শিব রঞ্জন ঘোষাল, সাদ্দাম মন্ডল, মৈনাক বিশ্বাস, সন্দীপ হালদার, উৎপল পাল, গৌরব বিশ্বাস, আসমত আলি মন্ডল এবং আফসানা মন্ডল। বৃহস্পতিবার ধৃতদের বনগাঁ মহকুমা আদালতে পেশ করে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় কল্লোল দাস দাবি করেন, “আমি শুধু স্লোগান দিচ্ছিলাম, তাতেই পুলিশ আমাকে তুলে নিয়ে গেছে।”

গ্রেফতারিকে কেন্দ্র করে বিজেপির পক্ষ থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তোলা হয়েছে। বিজেপি নেতা দেবদাস মন্ডল বলেন, “যারা বিক্ষোভে ছিল এবং পুলিশকে সাহায্য করছিল, তাদেরই গ্রেফতার করা হয়েছে। স্লোগান দেওয়া অপরাধ নয়। দোষীর শাস্তির দাবিতে যে কেউ স্লোগান দিতে পারে। কল্লোল দাস চাইলে হাজার বারও স্লোগান দেবেন—এতে অপরাধ কোথায়?”

অন্যদিকে শাসকদলের দাবি, পরিস্থিতিকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে উত্তপ্ত করা হয়েছিল। তৃণমূলের বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “অভিযুক্ত তো গ্রেফতার হয়েই গিয়েছিল। তার পরেও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সারাদিন ধরে নাটক করা হয়েছে, ভাঙচুর চালানো হয়েছে। যারা এই ঘটনায় যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে, এটাই নিয়ম।”

এখন স্কুলের শ্লীলতাহানি অভিযোগের তদন্ত যেমন চলছে, তেমনই ভাঙচুর-অশান্তির নেপথ্যের কারণও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক দোষারোপের পালা, যার জেরে বনগাঁয় উত্তেজনা এখনও প্রশমিত হয়নি পুরোপুরি।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন