Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৫

শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা আনতে ২০২৫ এর পরীক্ষার সব ওএমআর প্রকাশের নির্দেশ হাইকোর্টের

 

Instructions-for-publishing-OMR

সমকালীন প্রতিবেদন : ‌২০২৫ সালের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে স্কুল সার্ভিস কমিশনকে কঠোর নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি অমৃতা সিনহা বৃহস্পতিবার স্পষ্ট জানিয়ে দেন– নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির সমস্ত পরীক্ষার্থীর ওএমআর শিট প্রকাশ করতেই হবে। আদালতের নির্দিষ্ট সময়সীমা অনুযায়ী, আগামী ১০ ডিসেম্বরের মধ্যেই এসএসসির ওয়েবসাইটে সব ওএমআর আপলোড করতে হবে কমিশনকে।

এ দিন আদালতে ওঠা মামলায় বিচারপতি সরাসরি প্রশ্ন তোলেন কমিশনের ভূমিকাকে কেন্দ্র করে– “ওএমআর কেন এখনও পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি? সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে নিয়োগ চলছে। প্রথম দিন থেকেই স্বচ্ছতার পথে হাঁটা উচিত ছিল। পরে যাতে অনিয়মের অভিযোগ না ওঠে, তার জন্যই ওএমআর প্রকাশ অপরিহার্য।”

শুধু চলতি নিয়োগ প্রক্রিয়াই নয়, ২০১৬ সালের প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর যাঁরা নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ স্তরে নিয়োগপত্র পেয়েছিলেন, সেই শিক্ষকদের সম্পূর্ণ তালিকাও জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সিনহা। আদালত জানিয়েছে, ১০ ডিসেম্বরের মধ্যে এই তালিকাও প্রকাশ করতে হবে। বিচারপতির মন্তব্য, যাঁরা মেয়াদোত্তীর্ণ প্যানেলের পর নিয়োগ পেয়েছিলেন এবং আবার ২০২৫ সালের নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন, তাঁদের ভবিষ্যৎ আদালতের রায়ের উপরই নির্ভর করবে।

উল্লেখ্য, গত বুধবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল– এসএসসি-সংক্রান্ত সমস্ত মামলা শুনবে কলকাতা হাইকোর্টই। সেই নির্দেশের পর বৃহস্পতিবার বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে ওঠে শিক্ষক নিয়োগ মামলা। শুনানির মাঝেই বিচারপতি মন্তব্য করেন, “পরীক্ষার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত, আর নথি যাচাইয়ের তাড়া চলছে! স্বচ্ছ প্রক্রিয়া ছাড়া কোনো নিয়োগ গ্রহণযোগ্য নয়।”

২০১৬ সালের প্যানেল সংক্রান্ত মামলায় আদালত জানায়, নবম-দশমের প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়েছিল ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর এবং একাদশ-দ্বাদশের প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয় ২০১৯ সালের ১২ মার্চ। তার পর যাঁরা নিয়োগ পেয়েছেন, তাঁদের নামের পূর্ণাঙ্গ তালিকাও প্রকাশ করতে হবে। এসএসসি সূত্রে খবর, হাইকোর্টের নির্দেশের পর কমিশন বৃহস্পতিবারই তালিকা প্রকাশের প্রস্তুতি শুরু করেছে।

অন্য দিকে, সুপ্রিম কোর্ট আগের দিনই পর্যবেক্ষণ করেছিল নতুন নিয়োগে যেন কোনও অযোগ্য প্রার্থী না থেকে যায়। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ক্যাটাগরিতেও একই নিয়ম বহাল রাখতে হবে। এসএসসিকে ফের অযোগ্য প্রার্থীদের সম্পূর্ণ তালিকা প্রকাশের নির্দেশও দেয় সর্বোচ্চ আদালত।

পুরো পরিস্থিতি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, “স্বচ্ছ নিয়োগের ব্যাপারে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। সাত লক্ষেরও বেশি ওএমআর শিট রয়েছে। এত বিপুল তথ্য আপলোড করতে প্রযুক্তিগত কিছু সহায়তা প্রয়োজন। সহায়তা মিললেই সব ওএমআর প্রকাশ করা হবে।”

সব মিলিয়ে আদালতের একের পর এক নির্দেশে প্রশ্ন উঠছে—সুপ্রিম কোর্ট বেঁধে দেওয়া ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করা আদৌ সম্ভব হবে কি? নিয়োগ-স্বচ্ছতা নিয়ে ততক্ষণে চাপ বাড়ছে এসএসসির উপর।‌

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন