সমকালীন প্রতিবেদন : ভারত–বাংলাদেশ সীমান্তের কয়েকশো কিলোমিটার এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া এখনো না উঠতে পারায় উদ্বেগ প্রকাশ করল কলকাতা হাইকোর্ট। জমি অধিগ্রহণে রাজ্যের উদ্যোগ না থাকায় ফেন্সিংয়ের কাজ থমকে রয়েছে– এমন অভিযোগের ভিত্তিতেই একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি চলছিল হাইকোর্টে। সেই মামলায় ফের কড়া সুরে রাজ্যের কাছে দ্রুত পদক্ষেপের নির্দেশ দিল ডিভিশন বেঞ্চ।
গত ১৩ নভেম্বর ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি সুজয় পাল ও বিচারপতি পার্থসারথী সেনের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের কাছে একটি বিস্তারিত হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমা পার হয়ে গেলেও রাজ্য সেই রিপোর্ট জমা দিতে না পারায় শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ফের মামলাটি ওঠে ডিভিশন বেঞ্চে। এ দিন আবারও সময় চেয়ে নিল রাজ্য।
মামলাকারীর পক্ষের আইনজীবীর অভিযোগ, “রাজ্য ইতিমধ্যেই একাধিকবার সময় নিয়েছে। ফলে সীমান্ত নিরাপত্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিলম্ব বাড়ছে।” আদালত এ দিন রাজ্যকে আরও এক সপ্তাহ সময় দিল সংক্ষিপ্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য। তবে সেই সঙ্গে হুঁশিয়ারিও দিল, যদি রিপোর্টে ইতিবাচক অগ্রগতির ইঙ্গিত না পাওয়া যায়, তাহলে মামলাটি নিয়ে টানা শুনানি চালানো হবে।
ডিভিশন বেঞ্চের স্পষ্ট বক্তব্য, “আমরা রাজ্যের থেকে ইতিবাচক রিপোর্ট চেয়েছিলাম। আন্তর্জাতিক সীমান্তে কাঁটাতার দেওয়ার বিষয়টি দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে জড়িত। তাই এই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে অতিরিক্ত সময় দেওয়া সম্ভব নয়।”
এ দিন শুনানিতে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটার জেনারেল আদালতে নথি পেশ করে জানান, সীমান্তে ফেন্সিংয়ের জন্য কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট ইতিমধ্যেই অনুমোদন দিয়েছে এবং জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজনীয় অর্থও রাজ্য সরকারকে পাঠানো হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, “কেন্দ্রীয় অর্থ বরাদ্দের পরেও রাজ্যের তরফে কোনও অগ্রগতির তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।”
জনস্বার্থ মামলায় অভিযোগ ছিল, পশ্চিমবঙ্গ–বাংলাদেশ সীমান্তের উল্লেখযোগ্য অংশে এখনো কাঁটাতারের বেড়া হয়নি। আর সেই সুযোগেই চলছে অনুপ্রবেশ, গরু ও মালপত্র চোরাচালানসহ নানা অপরাধমূলক কার্যকলাপ। জমি অধিগ্রহণে রাজ্যের অনীহা বা দেরির ফলেই ফেন্সিংয়ের কাজ এগোচ্ছে না– এমনটাই দাবি মামলাকারীর।
সীমান্ত নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে আদালতের পরিষ্কার নির্দেশ, আগামী শুনানির আগে অবশ্যই রাজ্যকে কার্যকর অগ্রগতির রিপোর্ট পেশ করতে হবে। এখন রাজ্যের সেই রিপোর্টেই নির্ভর করছে মামলার পরবর্তী দিকনির্দেশ।









কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন