সমকালীন প্রতিবেদন : বাংলাদেশে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই অনুষ্ঠিত হতে চলেছে জাতীয় নির্বাচন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ খবর জানান। একই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, বিগত হাসিনা সরকারের কিছু প্রতিনিধিরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। শফিকুল বলেন, “আগের সরকারের আমলের কিছু সুবিধাভোগী নির্বাচন নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন। ওঁরা ফ্যাসিস্ট সরকারের পেইড। ওঁদের কথায় কিছু হবে না।” তিনি আরও জানান, সংবাদমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে সরকারের ইতিবাচক কর্মকাণ্ড জনগণের সামনে তুলে ধরার দায়িত্ব পালন করবে।
এদিকে নির্বাচনের আগে জোট রাজনীতিতে নড়াচড়া শুরু হয়েছে। বিএনপি ঘোষণা করেছে, শরিক দলগুলির জন্য ৪০টি আসন ছেড়ে দেওয়া হবে। সমঝোতায় এনসিপি পেতে পারে ৫টি আসন। মোট ৩০০ আসনের মধ্যে ৬৩টি আসন নিয়ে শরিকদের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানা গিয়েছে। যদিও প্রকাশ্যে প্রত্যেকে বেশি আসনের দাবি তুললেও, অন্তরালে এক বা দুই আসনের সমঝোতার দিকেই ঝুঁকছে শরিকরা। বিএনপি জানিয়েছে, ক্ষমতায় এলে জাতীয় সরকার গঠনের আগে রাজপথের সহযোদ্ধাদের যথাযথ মর্যাদা দেওয়া হবে।
তবে দলের ভেতর থেকেই স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে লড়ার ঘোষণা বিএনপি নেতাদের চিন্তায় ফেলেছে। বুধবার রাতে গাজিপুর-৩ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়তে চাওয়া এনামুল হক মোল্লাকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। ছাত্রদলের প্রাক্তন নেতা এনামুল সৌদি আরবের মক্কা শাখা বিএনপির সভাপতিও ছিল। মনোনয়ন না পেয়ে সে স্বাধীন প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা করেছিল।
এদিকে নির্বাচনের পাশাপাশি গণভোটের দাবিতেও সরব হয়েছে বাংলাদেশ জামাত-ই-ইসলামি। পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে দলটি। বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা ইউনুসের কাছে স্মারকলিপি পেশ করে জামাতের প্রতিনিধি দল। তাঁদের দাবি— নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন, রাজনৈতিক গ্রেপ্তার ও হয়রানি বন্ধ, সব দলের জন্য সমান সুযোগ এবং ধর্মীয় ও রাজনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।
জামাতের সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “দাবি মানা না হলে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।” রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন। একদিকে নির্বাচনের প্রস্তুতি, অন্যদিকে জামাতের হুঁশিয়ারি— সব মিলিয়ে ইউনুস সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ ক্রমেই বাড়ছে।







কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন