সমকালীন প্রতিবেদন : নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে দক্ষিণ আন্দামান সাগর ও দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরের আবহাওয়ায় বড়সড় পরিবর্তনের পূর্বাভাস দিল মৌসম ভবন। মালাক্কা প্রণালী সংলগ্ন ঘূর্ণাবর্ত থেকে যে নিম্নচাপটি তৈরি হয়েছিল, তা দ্রুত শক্তি বাড়াচ্ছে। আজকের মধ্যেই সিস্টেমটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে এবং পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় তা আরও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। যদি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয়, তার নাম হবে ‘সেনিয়ার’, যার অর্থ ‘সিংহ’; নামটি ঠিক করেছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহী। পূর্বাভাস অনুযায়ী, মাসের শেষে এই ঘূর্ণিঝড় বিশাখাপত্তনম উপকূলে স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে।
ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলেও পশ্চিমবঙ্গের উপর তাত্ক্ষণিক বড় কোনও প্রভাব পড়বে না। তবে বাতাসের গতিবেগে সামান্য পরিবর্তন দেখা দিতে পারে বলে মনে করছে হাওয়া অফিস। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে আন্দামান–নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে, যেখানে ইতিমধ্যেই ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি করা হয়েছে। প্রবল বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার আশঙ্কায় উপকূলীয় অঞ্চলে সমুদ্র অশান্ত থাকবে, ফলে পর্যটক ও মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর, আন্দামান সাগর ও কোমোরিন এলাকার অবস্থাও আগামী কয়েক দিন খারাপই থাকবে।
এদিকে দক্ষিণবঙ্গের আবহাওয়া এখন তুলনামূলক শান্ত। রাতের তাপমাত্রা কিছুটা নেমেছে—কলকাতায় নেমে এসেছে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, এবং জেলার বহু জায়গায় পারদ ১৪ ডিগ্রির ঘরে ঘোরাফেরা করছে। যদিও এখনই প্রকৃত শীত নেমে আসছে না, তবুও ভোরবেলায় হালকা ঠান্ডার অনুভূতি মিলছে। দিনের বেলা সূর্য বেরোলে সেই শীত ভাব কেটে যাচ্ছে। আগামী কয়েক দিনে তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি ওঠানামা করলেও আবহাওয়ার ধরন মোটামুটি শুষ্কই থাকবে।
রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় কুয়াশা বাড়ার ইঙ্গিত মিলেছে। উত্তরবঙ্গে দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি এবং দক্ষিণবঙ্গের উপকূলবর্তী অঞ্চলে আগামী তিন-চার দিন ভোরের দিকে হালকা কুয়াশা দেখা যেতে পারে। দার্জিলিংয়ের তাপমাত্রা ইতিমধ্যেই ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে নেমে গেছে, যদিও সেখানে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।
কলকাতার আজকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৬.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বোচ্চ ২৭.১ ডিগ্রি। সকালবেলার সামান্য কুয়াশা বা ধোঁয়াশা কেটে গিয়ে দিনের দ্বিতীয়ার্ধে আকাশ পরিষ্কার থাকবে। শহরের আর্দ্রতা ৪৫ থেকে ৯১ শতাংশের মধ্যে ওঠানামা করছে। আগামী পাঁচ দিনে মহানগরের আবহাওয়ায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।
একইসঙ্গে দক্ষিণ ভারত এবং দ্বীপপুঞ্জের বেশ কিছু এলাকায় ভারী বর্ষণের সতর্কতা জারি রেখেছে আবহাওয়া দফতর। কেরল, মাহে, তামিলনাড়ু, লাক্ষাদ্বীপ ও কোমোরিন উপকূলে প্রবল বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। কিছু অঞ্চলে ঝড়ের গতি ঘণ্টায় ৬০–৬৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছতে পারে।








কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন