সমকালীন প্রতিবেদন : ঘরের মাঠে আবারও বিপর্যয়ের মুখে ভারত। ২০২৪ সালে নিউজিল্যান্ডের কাছে সিরিজ হারের পর যে অস্বস্তিকর রেকর্ড তৈরি হয়েছিল, এক বছর পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেও সেই ছবিই যেন পুনরাবৃত্তি। প্রথমে কলকাতায় পরাজয়, আর এবার গুয়াহাটি টেস্টেও কোণঠাসা টিম ইন্ডিয়া। দীর্ঘদিন ধরে দেশে দাপটের সঙ্গে টেস্ট খেলা ভারতীয় দলের ধারাবাহিকতাই এবার ভাঙার পথে।
প্রথমে ব্যাট করে গুয়াহাটির পিচে দক্ষিণ আফ্রিকা টানা দু’দিন উইকেটে থেকে তুলেছিল ৪৮৯ রান। ম্যাচের দ্বিতীয় দিনের শেষে কুলদীপ যাদব জানিয়েছিলেন, পিচ পুরোপুরি সমতল। বোলারদের সাহায্য মেলেনি, ম্যাচ মূলত নির্ভর করছে ফিল্ডিংয়ের ওপর। কিন্তু সেই পাটা পিচেই তৃতীয় দিনে মুখ থুবড়ে পড়ল ভারতের ব্যাটিং অর্ডার।
ওপেনার জয়সওয়াল ও রাহুলের ৬৫ রানের জুটি শুরুতে আশা জাগালেও, এরপর একে একে ব্যাটারদের ভুল শট নির্বাচনের খেসারত দিতে হয়। ১২০ রান ওঠার আগেই ছয় উইকেট হারিয়ে বড়সড় চাপে পড়ে দল। ৯৭ বলে ৫৮ করা জয়সওয়াল ও ২২ রানে আউট হওয়া রাহুলের বিদায়ের পর মধ্যক্রম সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে।
সাই সুদর্শন স্পিনারদের বিরুদ্ধে অস্থির হয়ে মিডউইকেটে ক্যাচ দেন। পরে ধ্রুব জুরেল, অধিনায়ক ঋষভ পন্থ ও রবীন্দ্র জাডেজাও কোনও প্রতিরোধ গড়তে পারেননি। বিশেষ করে পন্থের আউট– অযথা আগ্রাসী শট খেলতে গিয়ে কিপারের হাতে ক্যাচ– দর্শকদের হতাশাকে আরও বাড়িয়ে তোলে।
এই ব্যাটিং বিপর্যয়ের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনার ঝড় ওঠে। এক্স-এ ট্রেন্ড করছে #SackGautamGambhir। বহু সমর্থক দলের প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীরকে অপসারণের দাবি তুলেছেন। অভিযোগ, টেস্ট দলে অভিজ্ঞ রঞ্জি পারফরমারদের বদলে আইপিএল-নির্ভর তরুণদের জায়গা দেওয়া হচ্ছে, যা দলের ভারসাম্য নষ্ট করেছে।
কেউ লিখেছেন, “রঞ্জি ক্রিকেটে ধারাবাহিক পারফরমাররা বাইরে, আর আইপিএল মুখ এত সহজে সুযোগ পাচ্ছেন– এটা টেস্ট ক্রিকেটকে দুর্বল করছে।” সমালোচকরা আরও বলছেন, দলের কৌশলগত পরিকল্পনার ঘাটতি স্পষ্ট।
বোলারদের ব্যবহার, ব্যাটারদের শট নির্বাচন, এমনকি নেতৃত্বও প্রশ্নের মুখে। ভারতের মতো শক্তিশালী দলের ঘরের মাঠে ব্যর্থতা তাই শুধু ক্রিকেট নয়, গোটা ব্যবস্থাপনাকেই নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে। এমন পরিস্থিতিতে সিরিজের ভাগ্য যেমন অনিশ্চিত, তেমনই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে দলের কোচিং স্টাফের ভবিষ্যৎ নিয়েও।









কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন