সমকালীন প্রতিবেদন : রহস্যঘেরা এক মৃত্যুকে ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হল বনগাঁয়। রবিবার গভীর রাতে শ্মশানে দাহ করতে আনা এক ব্যক্তির মৃতদেহ দেখে সন্দেহ জাগে পুরসভার কর্মীদের মনে। এরপরই বিষয়টি জানানো হয় পুলিশকে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে বনগাঁ থানার পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার রাত প্রায় বারোটা নাগাদ বনগাঁর শ্মশান ঘাটে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাগদা থানার অন্তর্গত বঁাশঘাটা এলাকার বাসিন্দা মহাদেব মণ্ডল নামে এক ব্যক্তির মৃতদেহ শ্মশানে নিয়ে আসা হয় দাহ করার উদ্দেশ্যে। তবে মৃতদেহটি দেখেই সন্দেহ হয় শ্মশানে কর্মরত পুরসভার কর্মীদের। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার সময় তাদের বক্তব্যে অসঙ্গতি লক্ষ্য করেন পুরকর্মীরা। তাতেই সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়।
পুরকর্মীরা বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে পুরপ্রধানকে জানান এবং তাঁর নির্দেশে খবর দেওয়া হয় বনগাঁ থানায়। রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুলিশ পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। প্রাথমিক তদন্তের পর মৃতদেহটি দাহ না করে বনগাঁ মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য।
মৃত ব্যক্তির পরিবারের দাবি, “মহাদেববাবুর তিন ছেলে ভিন রাজ্যে কাজ করেন। তিনি একাই বাড়িতে থাকতেন। রবিবার সকালে প্রতিবেশী একজন দেখতে পান, তিনি ঘরে শুয়ে আছেন। ডাকাডাকিতে সাড়া না পাওয়ায় আমরা ধরে নিই উনি মারা গিয়েছেন। এরপর স্থানীয় এক চিকিৎসকের থেকে মৃত্যুর সনদ নিয়ে আসি এবং ছেলেরা না আসায় বরফ দিয়ে দেহটি সংরক্ষণ করে রাখি।”
অন্যদিকে, শ্মশানঘাটে কর্মরত পুরসভার কর্মী অজয় বিশ্বাস জানান, “দেহটি দেখে আমাদের সন্দেহ হয়। কাছে গিয়ে দেখি শরীরে একাধিক ক্ষতচিহ্ন রয়েছে এবং দেহে পচন ধরেছে। আমাদের মনে হয় এটি স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। তাই আমরা কর্তৃপক্ষকে জানাই এবং পরে পুলিশ এসে মৃতদেহটি ময়নাতদন্তে পাঠায়।”
পুলিশ সূত্রে খবর, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা মিলবে। আপাতত অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে বনগাঁ থানার পুলিশ। স্থানীয় মহলে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্বাভাবিক মৃত্যু নাকি এর পেছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে— সেই প্রশ্নের উত্তর দেবে ময়নাতদন্তের রিপোর্টই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন