সমকালীন প্রতিবেদন : টেস্ট দলের নেতৃত্ব হাতে এসেছিল মাস কয়েক আগেই। এবার আরও বড় দায়িত্ব পেলেন শুভমান গিল। ভারতীয় ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক হিসেবেও নির্বাচিত হলেন ২৬ বছর বয়সি এই তরুণ তারকা। অভিজ্ঞ রোহিত শর্মাকে সরিয়ে দেশের ওয়ানডে দলের নেতৃত্বে আনা হয়েছে তাঁকে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের স্পষ্ট বার্তা, ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত। এবং সেই ভবিষ্যতের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ।
গিলও শুরু থেকেই সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে এগোতে চাইছেন। অধিনায়ক হিসেবে প্রথম প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “ওয়ানডে ফরম্যাটে ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দেওয়া আমার কাছে গর্বের। এমন একটি দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া, যারা ক্রিকেটে এত সাফল্য পেয়েছে, সত্যিই সম্মানের। আশা করি আমার নেতৃত্বে দলকে আরও সাফল্য এনে দিতে পারব।”
আগামী ১৯ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। এরপর একের পর এক শক্তিশালী প্রতিপক্ষ — দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ডের মতো দলগুলির বিরুদ্ধে লড়াই অপেক্ষা করছে ভারতের। গিল জানাচ্ছেন, এই সিরিজগুলিই হয়ে উঠবে বিশ্বকাপ প্রস্তুতির মূল মঞ্চ।
তাঁর কথায়, “বিশ্বকাপের আগে আমাদের হাতে থাকবে প্রায় ২০টা ওয়ানডে ম্যাচ। প্রত্যেকটি ম্যাচই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, মূল লক্ষ্য হল দক্ষিণ আফ্রিকায় ২০২৭ সালের বিশ্বকাপ। দলের প্রতিটি খেলোয়াড় সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য সেরাটা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। আমরা প্রতিটি ম্যাচ জিততে চাই এবং শেষ পর্যন্ত বিশ্বকাপ ট্রফিটাও ঘরে তুলতে চাই।”
এই স্বপ্ন কিন্তু নতুন নয়। এর আগে একই স্বপ্ন দেখেছিলেন রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলির মতো অভিজ্ঞ তারকারা। ২০২৩ সালের বিশ্বকাপ ঘরের মাঠে প্রায় নিখুঁত ভাবে শুরু করেও শেষ পর্যন্ত অধরা থেকে যায় সেই স্বপ্ন। ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের কষ্ট আজও ভুলতে পারেনি ভারতীয় ক্রিকেট।
রোহিত শর্মা এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “বিশ্বকাপ জেতাই চূড়ান্ত লক্ষ্য। যে কোনও তরুণ ক্রিকেটার এই স্বপ্ন নিয়েই বড় হয়।” কিন্তু অধিনায়ক হিসেবে তিনি সেই লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হন। ঠিক সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে গিলের উপর প্রত্যাশার চাপ অনেকটাই বেশি। কারণ, তাঁকে আনা হয়েছে এমন এক অধিনায়কের জায়গায় যিনি সফল ছিলেন। ফলে প্রশ্ন উঠতেই পারে — রোহিতকে সরিয়ে এনে যদি বিশ্বকাপ না-জেতা যায়, তবে লাভ কী হল?
সেই প্রশ্নের জবাব দিতে হলে ২০২৭ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে। কিন্তু একটা বিষয় নিশ্চিত — শুভমান গিলের নেতৃত্বে ভারতীয় ক্রিকেট নতুন এক অধ্যায় শুরু করেছে। সেই অধ্যায়ের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা হবে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে, যেখানে গিলের কাঁধেই থাকবে দেশের কোটি কোটি ক্রিকেটপ্রেমীর স্বপ্ন পূরণের দায়িত্ব।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন