সমকালীন প্রতিবেদন : চার মাস ধরে বেতন বন্ধ, ডিউটির দিনও কমে অর্ধেকে এসে দাড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে চরম আর্থিক অনিশ্চয়তায় দিন কাটছে বনগাঁ কালীতলা পার্কিং এলাকার প্রায় শতাধিক কর্মীর। বুধবার জেলা শাসকের কাছে লিখিত আবেদন জানিয়ে নিয়মিত বেতন ও স্থায়ী চাকরির দাবিতে সরব হলেন তাঁরা।
বনগাঁ শহর দিয়ে প্রতিদিন ভিনরাজ্য থেকে শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করে বাংলাদেশে রপ্তানির উদ্দেশ্যে। পেট্রাপোল সীমান্তের পথে যানজট নিয়ন্ত্রণ ও ট্রাকগুলিকে সুশৃঙ্খলভাবে সারিবদ্ধ রাখতেই বছর কয়েক আগে তৈরি হয় বনগাঁর কালীতলা পার্কিং জোন। এখানে কর্মরত শ্রমিকরাই রপ্তানির আগে ট্রাকগুলির সিরিয়াল নম্বর এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের তদারকি করেন।
প্রথমে এই পার্কিং জোনের দায়িত্ব ছিল বনগাঁ পুরসভার হাতে। কর্মী নিয়োগ ও বেতনের দায়িত্বও ছিল পুরসভার। কিন্তু ২০২২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এই পার্কিং জোনের তদারকি হস্তান্তর করা হয় রাজ্য পরিবহন দপ্তরের হাতে। সেই সময় থেকে পরিবহন দপ্তরই কর্মীদের বেতন প্রদান করে আসছিল।
তবে অভিযোগ, গত কয়েক মাস ধরে ধীরে ধীরে কর্মীদের কাজের দিন কমানো হচ্ছে। আগে যেখানে মাসে ২৬ দিন কাজ ছিল, এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ থেকে ১৫ দিন। তার ওপর গত চার মাস ধরে এক টাকাও পাননি কর্মীরা। ফলে পরিবার নিয়ে চরম সংকটে পড়েছেন তাঁরা।
আবেদনকারী এক কর্মী অসিত সাধু বলেন, “বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে আমাদের বেতন অত্যন্ত কম। তার উপর চার মাস ধরে পেমেন্ট বন্ধ। প্রায় ১০০ জন কর্মী পরিবার নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। আমরা চাই, সরকার যেন দ্রুত হস্তক্ষেপ করে এবং আমাদের নিয়মিত বেতন ও স্থায়ী কাজের ব্যবস্থা করে।”
বনগাঁর সহকারী আঞ্চলিক পরিবহন আধিকারিক রথীন মজুমদার এসম্পর্কে জানান, “কালীতলা পার্কিং এলাকার কর্মীদের বেতন সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আমরা জেলা দপ্তরে পাঠিয়েছি। সেখান থেকে রাজ্য দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত রাজ্য দপ্তর থেকে অর্থ বরাদ্দ হয়নি। কেন বিলম্ব হচ্ছে, সেটাও স্পষ্ট নয়।”
নিয়মিত বেতন না মেলায় তাঁদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি, অর্থ না পাওয়ায় ক্ষোভও বাড়ছে কর্মীদের মধ্যে। সমস্যা মেটাতে রাজ্য পরিবহন দপ্তরের হস্তক্ষেপ চাইছে জেলা প্রশাসনও। তবে রাজ্য থেকে বেতন বাবদ অর্থ বরাদ্দ কবে আসবে, সেই দিকেই এখন তাকিয়ে রয়েছেন কালীতলা পার্কিং জোনের কর্মীরা।








কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন