Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

নেপালে অস্থিরতা : জেন জি আন্দোলনের চাপেই ইস্তফা কেপি শর্মা ওলির

 

Unrest-in-Nepal

সমকালীন প্রতিবেদন : প্রত্যাশামতোই মঙ্গলবার ইস্তফা দিলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। জেন জি প্রজন্মের দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের ঝড়ে মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সরে দাঁড়ালেন তিনি। সেনা সূত্রে খবর, ইস্তফার আগে সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগডেলের সঙ্গে ফোনে কথা বলে সেনা নামানোর আবেদন করেন ওলি। এমনকি নিরাপদে দেশত্যাগের জন্যও সেনার সহায়তা চেয়েছিলেন তিনি। সেনাপ্রধান স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ওলি পদত্যাগ করলে তবেই সেনাবাহিনী রাস্তায় নামবে। ফলে তাঁর ভবিষ্যৎ যে অনিশ্চিত, তা বুঝতে সময় লাগেনি সদ্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর।

সোমবার থেকে দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন শুরু করে নেপালের তরুণ প্রজন্ম। সরকার কঠোর দমননীতি গ্রহণ করলে প্রায় ২০ জন নিহত ও শতাধিক আহত হন। এর ফলে আন্দোলন আরও বিস্ফোরক হয়ে ওঠে। একদিকে মন্ত্রিসভায় একের পর এক পদত্যাগ, অন্যদিকে বিরোধীদের প্রবল চাপ—সব মিলিয়ে কোণঠাসা হয়ে পড়েন ওলি। সেনাপ্রধানের পরামর্শে অবশেষে মঙ্গলবার পদ ছাড়তে বাধ্য হন তিনি।

ইস্তফার পরই খবর ছড়ায়, ওলিকে এবং তাঁর মন্ত্রীদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে ভাইসেপতি মন্ত্রী আবাসন এলাকা থেকে ডজনখানেক হেলিকপ্টার রওনা হয়। তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় আগাম খবর পেয়ে সেখানে ভিড় জমায় আন্দোলনকারীরা। বিমানবন্দরের আকাশে ড্রোন, লেজার লাইট ও আতসবাজি ছুড়ে বিমান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটায় তাঁরা। ফলে নেপালের বিমানবন্দর কার্যত অচল হয়ে পড়ে। ঘনিষ্ঠ সূত্রের দাবি, বেসরকারি হিমালয় এয়ারলাইন্সের বিমানে ওলি দুবাই পালাতে পারেন। যদিও সরকারিভাবে বলা হচ্ছে, তিনি চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাচ্ছেন।

এদিকে আন্দোলনকারীদের দাবির মুখে নতুন নেতৃত্ব নিয়ে জল্পনা তীব্র হয়েছে। আলোচনায় উঠে এসেছেন কাঠমান্ডুর মেয়র বলেন্দ্র শাহ। মাত্র ৩৫ বছর বয়সেই স্বাধীন প্রার্থী হিসাবে ২০২২ সালের মেয়র নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হন তিনি। রাজনীতিতে আসার আগে জনপ্রিয় র‌্যাপার এবং সুরকার হিসাবে পরিচিত ছিলেন বলেন্দ্র। দুর্নীতি ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে গানে সরব হয়েছিলেন তিনি।

যদিও সরাসরি আন্দোলনে যোগ দেননি, তবুও দূর থেকে ছাত্র-যুবদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন বলেন্দ্র। তিনি স্পষ্ট করে দেন, “এটা জেন জি-দের আন্দোলন, আমি তাঁদের ভাবনা জানতে চাই।” সেই বক্তব্যেই আন্দোলনকারীদের আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন তিনি। ফলে এখন নেপালের অস্থায়ী দায়িত্ব তাঁর হাতে তুলে দেওয়ার দাবি উঠেছে। কয়েকটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমও বলছে, অন্তর্বর্তী বা সর্বদলীয় সরকার গঠনের আগে দেশের নেতৃত্ব সাময়িকভাবে নিতে পারেন বলেন্দ্র শাহ। নেপালের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যেই আন্দোলনকারীদের একটাই দাবি—যুব সমাজের হাতেই নতুন ভবিষ্যৎ গড়ে উঠুক।‌




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন