Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

স্ট্রেস হরমোন বেশি মাত্রায় নির্গত হলে হতে পারে বড় বিপদ

 

Stress-hormones

সমকালীন প্রতিবেদন : স্ট্রেস বাড়ছে, বাড়ছে বিপদ। বাঁচতে কি কি করবেন? আপনার অজান্তেই ঘটে যাচ্ছে না তো বড় কিছু? আপনার নিয়ন্ত্রকই হয়ে উঠছে না তো আপনার সবথেকে বড় শত্রু! চিকি‌ৎসকেরা কিন্তু এবিষয়ে বারেবারে সাবধান করছেন। কারণ, মানব শরীরে হরমোনের একটা বড় ভূমিকা রয়েছে। সে যদি বিগড়ে যায় তাহলে আপনার জন্য ডেকে আনতে পারে বড় বিপদ। 

ঘুম থেকে ওঠা থেকে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ সহ জরুরি কাজকর্ম করতে সাহায্য করে কর্টিসল হরমোন। যা স্ট্রেস হরমোন হিসেবেও পরিচিত। প্রয়োজনের তুলনায় বেশি মাত্রায় নির্গত হলে এই হরমোনই হয়ে উঠতে পারে বিপজ্জনক। আপনাকে জানান না দিয়েই এই ঘটনা ঘটতে পারে। আর এরজন্য দায়ী প্রত্যেকদিনের চলার অভ্যাস। বিশিষ্ট পুষ্টিবিদরা বলছেন, বেশকিছু কারণ থাকতে পারে এই কর্টিসেলের মাত্রা বৃদ্ধির নেপথ্যে। যারমধ্যে অন্যতম প্রাত্যহিক কিছু খাদ্যাভ্যাস, যা নিয়ে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন না করলেই বিপদ। 

এবার বুঝে নেওয়া যাক ঠিক কি কি কারণে শরীরে বেড়ে যেতে পারে কর্টিসল হরমোনের মাত্রা। ঘনঘন মোবাইল দেখার অভ্যাস বাড়িয়ে দিতে পারে মানসিক চাপ। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘন ঘন বিভিন্ন ডিভাইস চেক করার ফলে যে মানসিক চাপ বৃদ্ধি পাচ্ছে, তা বন্ধ করার পরও বজায় থাকছে। ফলে কর্টিসেলের মাত্রা এতে বাড়ছে। ক্লান্ত হচ্ছে মন, কমছে ধৈর্য। 

সকালের জলখাবার খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিলে বেড়ে যেতে পারে কর্টিসেলের মাত্রা। কারণ, সকালে এই হরমোন সর্বোচ্চ স্তরে থাকে। ফলে মানসিক ক্লান্তি, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে অস্থিরতা এবং দিনের শেষে উদ্বেগ বেড়ে যায়। তাড়াহুড়ো করে খাবার খেলেও বেড়ে যেতে পারে কর্টিসেল হরমোন। কাজ করার সময় খাবার খাওয়া হলে তা শরীরকে স্ট্রেস মোডে রাখে, ফলে এর একটা প্রভাব পড়ে হজমের ক্ষেত্রে। অতিরিক্ত মাত্রায় নিঃসরণ হয় কর্টিসেল হরমোন। এটি কেবল শরীরে পুষ্টিকে প্রভাবিত করে না, মস্তিষ্ক এরফলে অপুষ্টিতে ভুগতে থাকে।

অনেকসময়ই পারিবারিক বিবাদ বা অন্যকোনও গন্ডগোলের সময় অনেককেই খুব শান্ত থাকতে দেখা যায়। এটি পরিপক্কতার এবং বুদ্ধিমত্তার লক্ষ্মন হলেও, এরফলে অনেকক্ষেত্রে চাপা আবেগ মনের গভীরেই থেকে যায়। খুব ঘন ঘন বা বেশি মাত্রায় এটি হতে থাকলে কর্টিসেল হরমোন বাড়তে পারে যা স্নায়ুতন্ত্রকে সজাগ রাখে। ফলে বাড়তে থাকে ক্লান্তি। 

অনেকসময় কোনও কাজ নিখুঁতভাবে করার প্রয়াসও স্ট্রেস বাড়ায়। এতে কর্টিসল প্রভাবিত হতে থাকে। যার জেরে নষ্ট হয় মানসিক স্থিতিশীলতা। এছাড়াও পুষ্টিবিদরা বলছেন– মৃত্যু, দুর্ঘটনার মতো মন খারাপ করা খবর, পড়াশোনা, ঘুমের অভাব, অতিরিক্ত শরীরচর্চা, সম্পর্কের টানাপোড়েন কর্টিসলের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। এই হরমোন বেড়ে গেলে কি কি হতে পারে? 

এই হরমোনের মাত্রা বেড়ে গেলেই শরীরে জমতে পারে বাড়তি মেদ, ঘুমের সমস্যা হতে পারে, উদ্বেগ বাড়তে পারে। এমনকি মানসিক চাপের সঙ্গেও এর নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। তাহলে এখন কি করণীয়? তাও জানাচ্ছেন বিশিষ্ট পুষ্টিবিদরা। তারা বলছেন, সেক্ষেত্রে ঠিকমতো ঘুম, সঠিক শরীরচর্চা এবং আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারার প্রচেষ্টাও এক্ষেত্রে কার্যকরী হতে পারে।

তবে সবার আগে খুঁজে বের করতে হবে কোন কারণগুলি সমস্যা তৈরি করছে। খাবারের দিক থেকে সচেতনতাও কর্টিসেল হরমোনের মাত্রা ঠিক রাখতে কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারে। সেক্ষেত্রে খাবারের তালিকায় রাখতে হবে কলা, ওটস, ডার্ক চকোলেট, গ্রিন টির মতো খাবার। 

আর হরমোনের মাত্রা শরীরে বেড়ে গেলে তা কমাতে সাহায্য করবে ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড এবং জিঙ্কের মতো উপাদান। এছাড়াও খাদ্য তালিকায় সবুজ শাকপাতা, ডিম, লেবু জাতীয় ফল, তৈলাক্ত মাছ রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদরা। সব মিলিয়ে নিজেদের দিকে নজর রাখলেই সুস্থ থাকবে মন, সুস্থ থাকবে শরীর।‌

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন