সমকালীন প্রতিবেদন : শুক্রবার ফের বাংলায় এসে কলকাতার যোগাযোগ ব্যবস্থায় নতুন অধ্যায়ের সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একসঙ্গে তিনটি মেট্রো রুটের উদ্বোধন করেন তিনি। নোয়াপাড়া–জয় হিন্দ বিমানবন্দর, শিয়ালদহ–এসপ্ল্যানেড এবং বেলেঘাটা–হেমন্ত মুখোপাধ্যায় পর্যন্ত তিনটি রুট চালু হওয়ায় শহরের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে যাতায়াত এখন আরও দ্রুত ও সহজ হয়ে উঠবে।
উদ্বোধনের দিনে যশোর রোডের দু’ধারে ছিল মানুষের ঢল। ধীর গতিতে এগোতে থাকা প্রধানমন্ত্রীর কনভয়ের দিকে হাত নেড়ে অভিবাদন জানান উপস্থিত জনতা। বিকেলে সেন্ট্রাল জেল মাঠে বিজেপির সঙ্কল্প সভায় যোগ দেন মোদী। সেখানে উপচে পড়া ভিড় কর্মী–সমর্থকদের উচ্ছ্বাসে উৎসবের আবহ তৈরি করে। বহু কর্মীর গায়ে দেখা গিয়েছে সাদা গেঞ্জি, যাতে ‘অপারেশন সিঁদুর’–এর উল্লেখ মুদ্রিত ছিল।
সরকারি মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী মোট ৫,২০০ কোটি টাকার একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এর মধ্যে কলকাতার তিনটি মেট্রো রুট ছাড়াও রয়েছে হাওড়া মেট্রো স্টেশনের সাবওয়ে, কোনা এক্সপ্রেসওয়ের ছয় লেন ও বন্দরের উন্নয়ন।
সভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর। তিনি বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বেই দেশ আজ বিকশিত ভারতের পথে এগোচ্ছে।’’ রেলের প্রতিমন্ত্রী রবনীত সিং বিট্টু জানান, ভবিষ্যতে কলকাতার মেট্রো নেটওয়ার্ক আরও ২২ কিলোমিটার বাড়ানো হবে। এদিনই শহরে মেট্রো রুটের সম্প্রসারণ ঘটল আরও ১১ কিলোমিটার।
প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘‘আবারও বাংলার উন্নয়নের কাজে অংশ নিতে পেরে গর্বিত। মেট্রোর সম্প্রসারণে মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে।’’ তিনি উল্লেখ করেন, ২০১৪ সালে সারা দেশে মেট্রো রুট ছিল মাত্র ২৫০ কিলোমিটার, বর্তমানে তা এক হাজার কিলোমিটারের বেশি। হাওড়া–শিয়ালদহ দেশের বৃহত্তম রেল স্টেশনগুলির মধ্যে অন্যতম, এবার সেটিও মেট্রোর সঙ্গে যুক্ত হল।
এই মেট্রো সংযোগের ফলে আগে যেখানে দেড় ঘণ্টা লাগত, সেখানে কয়েক মিনিটেই এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনে পৌঁছানো সম্ভব হবে। তিনি আরও জানান, কলকাতা বিমানবন্দরকে মেট্রোর সঙ্গে যুক্ত করায় যাতায়াত সহজ হবে। পাশাপাশি ৬ লেনের কোনা এক্সপ্রেসওয়ে চালু হলে কলকাতার সঙ্গে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের যোগাযোগ আরও মসৃণ হয়ে উঠবে।
তবে সরকারি অনুষ্ঠানে রাজ্য রাজনীতির নজরকাড়া অনুপস্থিতি ছিল প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। কলকাতার যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে উচ্ছ্বাস লক্ষ করা গিয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন