Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

রবিবার, ২৪ আগস্ট, ২০২৫

সীমান্তে বিএসএফের হাতে ধরা পড়লেন বাংলাদেশের প্রাক্তন পুলিশকর্তা

Former-Bangladeshi-police-officer

সমকালীন প্রতিবেদন : ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হলেন বাংলাদেশের রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রাক্তন সহকারী পুলিশ কমিশনার আরিফুজ্জামান আরিফ। শনিবার সন্ধেয় উত্তর ২৪ পরগনার হাকিমপুর সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করার সময় ধরা পড়েন তিনি। পরে তাঁকে স্বরূপনগর থানায় রাখা হয় এবং রবিবার বসিরহাট মহকুমা আদালতে তোলা হয়।

বাংলাদেশ পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রাক্তন এসিপি আরিফুজ্জামানের বিরুদ্ধে রয়েছে গুরুতর অভিযোগ। জুলাই আন্দোলনের সময় তিনটি হত্যা মামলা ও দুটি হত্যাচেষ্টার মামলা তাঁর বিরুদ্ধে রুজু হয়েছিল। ইউনূস সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তিনি আত্মগোপনে চলে যান। গত ১৭ আগস্ট বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাঁকে আরও ১৭ জন পুলিশ আধিকারিকের সঙ্গে একসঙ্গে সাসপেন্ড করে।

সূত্রের খবর, কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার সীমান্তবর্তী একটি গ্রামে আত্মগোপনে ছিলেন আরিফুজ্জামান। শনিবার অবৈধভাবে সীমান্ত পেরোনোর চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু ১৪৩ নম্বর ব্যাটেলিয়নের বিএসএফ জওয়ানরা টহলদারি চালানোর সময় তাঁকে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে আটক করে। তল্লাশির সময় তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয় বাংলাদেশ পুলিশের পরিচয়পত্র।

বিএসএফ প্রথমে দীর্ঘক্ষণ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এরপর রাতেই স্বরূপনগর থানার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপার হোসেন মেহেদি হাসান বলেন— “বিএসএফ জিজ্ঞাসাবাদে কিছু তথ্য পেয়েছে। আমরাও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। যে বিষয়গুলি জানা গেছে, তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আপাতত নতুন কিছু জানার বাকি নেই। তাই পুলিশি হেফাজতের আবেদন করিনি। প্রয়োজনে আদালতের নির্দেশে তাঁকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”

ধৃতের কাছ থেকে বেশ কিছু নথি ও কাগজপত্র উদ্ধার হয়েছে, যেগুলি ভারতের উচ্চপদস্থ কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এবং বাংলাদেশ হাইকমিশনের মধ্যে তথ্য আদান-প্রদান শুরু হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে আরিফুজ্জামান পুলিশকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকেই তিনি প্রাণের ভয়ে আত্মগোপনে ছিলেন। নিজের নিরাপত্তার কারণে ভারতে পালিয়ে আসার চেষ্টা করেন। তবে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের মতে, তিনি একাই ছিলেন নাকি বড় কোনও নেটওয়ার্কের অংশ, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।‌

ভারত–বাংলাদেশ সীমান্ত বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ আন্তর্জাতিক সীমান্ত। এর মধ্যে প্রায় ২,২১৭ কিলোমিটার বাংলার সঙ্গেই যুক্ত। বহুদিন ধরেই সীমান্তবর্তী এলাকায় অনুপ্রবেশ, গবাদি পশু ও মাদক পাচার, ভুয়ো নোটের লেনদেনের মতো অপরাধ ঘটে চলেছে। কিন্তু বাংলাদেশ পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিকের এভাবে সীমান্তে ধরা পড়া নজিরবিহীন বলে মনে করছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।





কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন