সমকালীন প্রতিবেদন : টানা দশ দিন ধরে জলমগ্ন অবস্থায় রয়েছে বনগাঁ ব্লকের আকাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কামদেবপুর বেদপাড়া এলাকা। জল নামেনি, মেলেনি ত্রাণ—চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন অন্তত ৭৩টি পরিবার। ঘরবাড়িতে জল ঢুকে পড়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন বহু মানুষ। অথচ এই অবস্থায় প্রশাসনের তরফে কোনও সাহায্য পৌঁছয়নি বলেই অভিযোগ স্থানীয়দের।
বাড়ি ঘর জলে ডুবে থাকায় রান্নাবান্না বন্ধ, স্কুলে যাওয়া বন্ধ শিশুদের, কাজ হারিয়ে রোজগার বন্ধ শ্রমজীবী মানুষের—এই দশা এখন গোটা বেদপাড়া এলাকার। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সমস্যা নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে বারবার গিয়ে দরবার করা হলেও কোনও সদুত্তর মেলেনি। উলটে দুর্ব্যবহার এবং এড়িয়ে যাওয়ার মনোভাব পেয়েছেন তাঁরা। এক বাসিন্দার কথায়, “জলে ঘর ডুবে আছে, ছোট ছোট বাচ্চারা কষ্টে আছে। কিন্তু প্রধান বলছেন ওঁর কিছু করার নেই।”
স্থানীয়দের দাবি, বিগত বছরগুলিতেও বর্ষার সময় একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কিন্তু পঞ্চায়েত কিংবা ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও স্থায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বিক্ষুব্ধ বাসিন্দারা জানিয়েছেন, যদি দ্রুত ত্রাণ না পৌঁছায় এবং জল বের করে দেওয়ার কোনও ব্যবস্থা না করা হয়, তাহলে তাঁরা রাস্তা অবরোধ-সহ বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন।
বেদপাড়ার এক প্রবীণ বাসিন্দার কথায়, “জলে মাছ ধরে খাওয়ার দিন নয় এটা। এখন নোংরা জল, সাপ-বিচ্ছু ঢুকে পড়ছে ঘরে। ছেলেমেয়েদের অসুস্থ হতে বেশি সময় লাগবে না। প্রশাসনকে বাধ্য করতেই হবে ব্যবস্থা নিতে।” স্থানীয়রা জানিয়েছেন, জলবন্দি ৭৩টি পরিবারের জন্য পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে মাত্র ২০ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে। এই সামান্য পরিমাণ চাল এক একটি পরিবারপিছু দেওয়া বাস্তবে সম্ভব? প্রশ্ন ভুক্তভোগীদের।
এব্যাপারে আকাইপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পূরবী সরকার জানিয়েছেন, যে এলাকায় জল জমার কথা বলা হচ্ছে, সেখানকার মানুষেরা নিজেদের বাড়ি ছেড়ে কেউ ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেন নি। যদি কেউ জলের সমস্যার কারণে ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেন, তাহলে তাদের জন্য অবশ্যই ত্রাণের ব্যবস্থা করা হবে। যদিও স্থানীয়দের অনেকেরই দাবি, বেশ কয়েকটি পরিবার নিজেদের বাড়ি ছেড়ে আকাইপুর রেল স্টেশনে আশ্রয় নিয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন