Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই, ২০২৫

ভরা শ্রাবণের ধারাবাহিক বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত বাংলা, সপ্তাহজুড়ে ঝড়-বৃষ্টির সতর্কতা

 

Storm-warning

সমকালীন প্রতিবেদন : টানা বৃষ্টির জেরে ইতিমধ্যেই জলমগ্ন শহর থেকে গ্রামাঞ্চল। শ্রাবণের মাঝামাঝি সময়ে ঘূর্ণাবর্ত এবং অক্ষরেখার প্রভাবে বাংলা জুড়ে আবহাওয়ার বড়সড় রদবদল ঘটেছে। প্রবল বর্ষণে যেমন কিছুটা স্বস্তি মিলেছে তাপদাহ থেকে, তেমনই জলযন্ত্রণায় নাকাল হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।


আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, বাংলাদেশ ও গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপর একটি ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে। সেইসঙ্গে গুজরাট থেকে দক্ষিণ বাংলাদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে একটি অক্ষরেখা। এই দুইয়ের সম্মিলিত প্রভাবে আগামী কয়েকদিন রাজ্যের একাধিক জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকছে।


আজ, বৃহস্পতিবার কলকাতা সহ জেলার একাধিক শহরের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকবে। দফায় দফায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। বৃষ্টির পাশাপাশি বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ বেশি থাকার ফলে অস্বস্তিও বাড়বে। 


আজ দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়া, মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম সহ সমস্ত জেলাতেই জারি রয়েছে হলুদ সতর্কতা। বিশেষ করে মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা প্রবল। ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ৩০-৪০ কিমি।


শুক্রবারও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকছে। ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে একই গতিবেগে। তবে শুক্রবার থেকে ধীরে ধীরে কমবে বৃষ্টির তীব্রতা। আগামী সাতদিন দক্ষিণবঙ্গে বিক্ষিপ্তভাবে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি চলবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।


উত্তরবঙ্গের আবহাওয়া পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক। আজ দার্জিলিং, উত্তর দিনাজপুর ও মালদহে ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা থাকায় হলুদ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে টানা ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। শনিবার ও রবিবারের জন্য কিছু জেলায় কমলা সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস। ধারাবাহিক বৃষ্টির কারণে পাহাড়ি জেলাগুলিতে ধস নামার সম্ভাবনা বেড়েছে। ইতিমধ্যেই তিস্তা নদীর জল বিপদসীমা ছুঁয়েছে। নদীর জল ঢুকে পড়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে, যার ফলে সিকিম এবং কালিম্পংয়ের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।


আগামী সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলায়—দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার—ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় প্রস্তুত থাকতে বলেছে হাওয়া অফিস। নিচু এলাকাগুলিতে জল জমে প্লাবনের আশঙ্কা থাকছে। পাহাড়ি অঞ্চলে নতুন করে ধস নামতে পারে।


আবহাওয়া দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুন মাসে বৃষ্টির কিছুটা ঘাটতি থাকলেও, জুলাইয়ে কলকাতায় এবং দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলায় রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। চলতি সপ্তাহের টানা বৃষ্টির ফলে নদীগুলির জলস্তর ফের বৃদ্ধি পেতে পারে, যার প্রভাবে নতুন করে বন্যার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সামনের সপ্তাহজুড়ে রাজ্যের দুই বঙ্গেই আবহাওয়ার খামখেয়ালি আচরণ অব্যাহত থাকবে।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন