Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই, ২০২৫

‘দাগি’ চাকরিপ্রার্থীদের ফের ধাক্কা, নিয়োগ পরীক্ষায় বসার পথ বন্ধ করল হাইকোর্ট

SSC-Recruitment

সমকালীন প্রতিবেদন : স্কুল সার্ভিস কমিশনের দুর্নীতি-কাণ্ডে ‘চিহ্নিত অযোগ্য’ বা ‘দাগি’ চাকরিপ্রার্থীদের ফের বড় ধাক্কা। তাঁদের নিয়োগ পরীক্ষায় বসার সুযোগ বাতিল করে দিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চও। বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্য সরকার ও এসএসসির আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়। ফলে, আগের সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ই বহাল থাকল। সেই অনুযায়ী, কোনও ‘দাগি’ প্রার্থী নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না।

চলতি বছর ৩০ মে, ২০২৫ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে এসএসসি। এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি নিয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। মামলাকারীদের অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করেই এসএসসি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে এবং তাতে ‘দাগি’ প্রার্থীদেরও আবেদন করতে দেওয়া হয়েছে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের সিঙ্গল বেঞ্চ জানায়, ‘যাঁদের নিয়োগ বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছে এবং যাঁরা অযোগ্য বলে চিহ্নিত, তাঁরা এই নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না। যদি কেউ ইতিমধ্যেই আবেদন করে থাকেন, তবে সেই আবেদনপত্র বাতিল করতে হবে।’

এই রায়ের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার ও এসএসসি যৌথভাবে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করে। তাঁদের দাবি ছিল, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কোথাও বলা হয়নি যে ‘অযোগ্য’ প্রার্থীরা ভবিষ্যতের কোনও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বসতে পারবেন না। বরং তাঁদের নিয়োগ বাতিল এবং বেতন ফেরতের নির্দেশই যথেষ্ট শাস্তি।

রাজ্য সরকারের যুক্তি ছিল, ‘একই অপরাধে কাউকে দু’বার শাস্তি দেওয়া যায় না।’ কিন্তু বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি স্মিতা দাস দে-র ডিভিশন বেঞ্চ এই যুক্তি মানেনি। আদালতের মন্তব্য, ‘কমিশনের কাছ থেকে এই ধরনের ব্যাখ্যা গ্রহণযোগ্য নয়।’ সেই সঙ্গে সিঙ্গল বেঞ্চের সিদ্ধান্তই বহাল রাখা হয়। আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, নিয়োগ প্রক্রিয়া সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই সম্পন্ন করতে হবে। সেই নির্দেশ অনুযায়ী, ‘দাগি’ বা চিহ্নিত অযোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়াই বাধ্যতামূলক। আদালতের এই রায় থেকেই স্পষ্ট—কে যোগ্য, আর কে অযোগ্য, তা নিয়ে আর কোনও ধোঁয়াশা থাকছে না।

যদিও নিয়োগ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তির আরও কিছু বিষয় নিয়ে আদালতে শুনানি স্থির হয়েছে ১৭ জুলাই। সেদিন বিজ্ঞপ্তির অন্যান্য বিতর্কিত দিকগুলি নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানা গিয়েছে। এই রায়ের ফলে, রাজ্য সরকার এবং এসএসসি—উভয়ের নিয়োগ নীতি এবং বিচারব্যবস্থার প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি প্রশ্নের মুখে পড়েছে। একই সঙ্গে চাকরি হারানো হাজার হাজার প্রার্থীর ভবিষ্যৎ আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়ল। বিশ্লেষকদের মতে, আদালতের কড়া অবস্থান একদিকে যেমন বিচারব্যবস্থার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করছে, অন্যদিকে তেমনই নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশাসনের দায়িত্বহীনতা ও দুর্বলতা স্পষ্ট করে দিচ্ছে।‌






কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন