সমকালীন প্রতিবেদন : পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার রাজুয়া গ্রামে ভয়াবহ বোমা বিস্ফোরণের চার দিন পর ঘটনাস্থলে গিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত চালাল রাজ্য পুলিশের বম্ব স্কোয়াড ও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের দল। সোমবার সকালে তাঁরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে টানা তিন ঘণ্টা ধরে বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেন। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয় একটি ছিন্নভিন্ন বুড়ো আঙুল—যা এখন এই বিস্ফোরণের মূল সূত্র।
পুলিশ ও ফরেনসিক সূত্রে জানা গেছে, উদ্ধার হওয়া এই বুড়ো আঙুলটি সম্ভবত বিস্ফোরণে নিহত ব্যক্তি বরকত কারিগরের। তিনি বীরভূম জেলার নানুর থানার সিয়ালা গ্রামের বাসিন্দা বলে সন্দেহ। যদিও ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমেই তাঁর পরিচয় চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এই আঙুল শুধু দেহ সনাক্তকরণের ক্ষেত্রেই নয়, বিস্ফোরণের তীব্রতা, দেহের অবস্থান এবং বিস্ফোরণের ধরণ বিশ্লেষণেও সাহায্য করবে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
এছাড়াও, ফরেনসিক দল ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরকের বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করেছে। কোন ধরনের মসলা ব্যবহৃত হয়েছিল, তা বিশ্লেষণ করে বোঝার চেষ্টা চলছে। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, এতে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন দেশি মসলা ব্যবহার করা হয়ে থাকতে পারে। তবে চূড়ান্ত তথ্য মিলবে রাসায়নিক পরীক্ষার পরই।
এদিকে এই বিস্ফোরণের প্রকৃতি নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েই গেছে। এটি নিছক দুর্ঘটনা, না কি কোনো গোপন নাশকতা—তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগ। স্থানীয়দের বক্তব্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাতে বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপে ওঠে গোটা গ্রাম। রাতভর আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, দেহের বিভিন্ন অংশ বিস্ফোরণস্থল থেকে ছিটকে দূরে গিয়ে পড়ে।
এই মুহূর্তে রাজুয়া গ্রামজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি। বিস্ফোরণ ঘিরে ছড়িয়েছে তীব্র চাঞ্চল্য। রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশ ও বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থাগুলি ঘটনার তদন্তে নেমেছে। স্থানীয় রাজনৈতিক পরিবেশ এবং অতীত রেকর্ডও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।
ফরেনসিক বিশ্লেষণের রিপোর্ট হাতে আসার পরেই বিস্ফোরণের প্রকৃতি, উদ্দেশ্য এবং জড়িতদের নিয়ে আরও স্পষ্ট ছবি পাওয়া যাবে বলেই মনে করছে পুলিশ। আপাতত বুড়ো আঙুলই এখন এই কেসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সূত্র।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন