Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০২৫

বাগদায় ফের ‘বাবা’ সাজিয়ে ভোটার তালিকায় বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীর নাম তোলার অভিযোগ

 

Name-on-voter-list

সমকালীন প্রতিবেদন : ভুয়ো পরিচয় দিয়ে ভোটার তালিকায় নাম তোলার অভিযোগ ঘিরে ফের উত্তপ্ত উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা। এবার রামনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার এক যুবকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। স্থানীয় বিজেপি নেতা সান্ত মিস্ত্রির দাবি, অভিযুক্ত ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক, যে টাকা দিয়ে এক ভারতীয়কে ‘বাবা’ সাজিয়ে ভোটার তালিকায় নিজের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে।

অভিযুক্ত রকি মন্ডল পেশায় একজন পরিযায়ী শ্রমিক। অভিযোগ, সে মূলত বাংলাদেশের নাগরিক। দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে ভারতে বসবাস করছিল। সান্ত মিস্ত্রির দাবি, রামনগর গ্রামে বসবাসকারী আয়েব মন্ডল নামে এক ব্যক্তিকে ‘পিতা’ হিসাবে দেখিয়ে রকি মন্ডল ১০৯ নম্বর পার্টের ভোটার তালিকায় নিজের নাম তোলে।

বিষয়টি সামনে আসতেই সান্ত মিস্ত্রি এব্যাপারে জেলা প্রশাসকের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ব্লক আধিকারিকের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। তিনি বলেন, "এই ঘটনা শুধু বেআইনি নয়, আমাদের দেশের সার্বভৌমত্বের উপর আঘাত। এক বাংলাদেশিকে ভোটার বানিয়ে দেওয়া দেশের নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক। আমরা চাই, অবিলম্বে তদন্ত করে দোষীর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”

ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও। কীভাবে এক অনুপ্রবেশকারী নাম, ঠিকানা ও পরিচয়পত্র জোগাড় করে ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করল, তা নিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছে রাজনৈতিক মহলও। স্থানীয়দের একাংশের বক্তব্য, আধার কার্ড, রেশন কার্ড কিংবা ভোটার কার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ নথি জোগাড় করা এখন যেন অনেক সহজ হয়ে উঠেছে, বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এইসব অঞ্চলে।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির দাবি, সীমান্ত এলাকায় তৃণমূল সরকারের প্রশ্রয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা জাল নথিপত্রের মাধ্যমে ভারতীয় নাগরিকত্ব পাচ্ছে। যদিও এই অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব। তাদের পালটা বক্তব্য, “বিজেপি নিজের রাজনৈতিক ব্যর্থতা ঢাকতে বারবার অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়টি তুলে ধরছে। যদি কেউ অপরাধ করে থাকে, তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক, তাতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই।”

ঘটনার জেরে বাগদা ব্লকের প্রশাসনিক মহলে আলোড়ন তৈরি হয়েছে। জেলা নির্বাচন দফতর সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তবে সংশ্লিষ্ট নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে। পুলিশ জানিয়েছে, লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। অবৈধ অনুপ্রবেশ এবং জাল পরিচয়পত্র তৈরির কোনও অভিযোগ প্রমাণিত হলে, আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রশাসনের কাছে। এই ঘটনা আবারও স্পষ্ট করে দিল, সীমান্ত এলাকার পরিচয় যাচাই ব্যবস্থায় এখনও বড়সড় ফাঁক রয়ে গেছে। প্রশাসনের সক্রিয় হস্তক্ষেপ ছাড়া এই ধরনের বেআইনি প্রবণতা রুখে দেওয়া সম্ভব নয়–মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল। এখন দেখার, তদন্তে আদৌ সত্যতা উঠে আসে কিনা এবং তৎপরতা দেখায় কি না প্রশাসন।‌



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন