সমকালীন প্রতিবেদন : বর্ষার খিচুড়ি, সঙ্গে ইলিশ ভাজা থাকবে না। তা কি হয়? এটা খুব সত্যি বর্ষাকালে খাওয়ার পাতে ইলিশ এর পদ ছাড়া যেন সবটা অসম্পূর্ণ। বিশেষ করে যে ইলিশের এতো উপকারিতা। কিন্তু বর্ষার ইলিশ হার্টে কি ঘটাচ্ছে জানেন? হাড় পেশি থেকে মস্তিষ্ক, ইলিশ উপকারী নাকি অপকারী? আসলে কিভাবে এবং কতটা খাওয়া উচিৎ ইলিশ? এই সব প্রশ্নের উত্তর নিয়েই আমাদের আজকের প্রতিবেদন।
অসুখ বিসুখ ঠেকিয়ে রাখে এই মাছ। স্বাস্থ্য রাখে ভালো। পুষ্টিবিদদের মতে, ইলিশ মাছে থাকে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ক্যালশিয়াম-সহ বেশ কিছু খনিজ। অবশ্যই এই মাছ শরীরের পক্ষে উপকারী। হার্ট এবং মস্তিষ্ক ভাল রাখতে সাহায্য করে মাছটি। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকার জন্যই এই মাছ পায়ের নখ থেকে মাথার চুল পর্যন্ত ভাল রাখে।
হার্ট : ইলিশ মাছে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ একেবারেই কম। অন্য দিকে, প্রচুর মাত্রায় ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। যা রক্তচাপের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ফলে হৃদ্যন্ত্রও সুস্থ থাকে।
মস্তিষ্ক : মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে ইলিশ। মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজ করে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। ইলিশ মাছ খেলে বয়সকালে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা কমে। শিশুদের মস্তিষ্কের গঠনে সাহায্য করে এতে থাকা ডিএইচএ। অ্যালঝাইমার্সের মতো অসুখ প্রতিরোধেও এই মাছ দারুণ।
তাছাড়া ইলিশ হাড় মজবুত রাখতে সাহায্য করে। আবার এতে থাকা ভাল মানের প্রোটিন পেশি সবল রাখার জন্যও জরুরি। ইলিশে মেলে ভিটামিন এ। দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখতে এই ভিটামিনের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
কিন্তু খাবেন কিভাবে? ঝোলে-ঝালে-অম্বলে খেলেই কি মিলবে পুষ্টিগুণ? বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, পুষ্টিগুণ পেতে হলে কিন্তু উচ্চ তাপমাত্রায় কড়া করে মাছ ভাজা যাবে না। এতে মাছের গুণাগুণ নষ্ট হবে। তা ছাড়া এই মাছে উচ্চমাত্রায় ফ্যাট এবং তেল থাকার জন্য কারও কারও ইলিশ খেলেই অম্বল হয়। লঙ্কা, সর্ষে বাটা দিয়ে ঝাল বা ঝোল সেই সমস্যায় ইন্ধন জোগাতে পারে। বরং এর স্বাস্থ্যগুণ পেতে হলে অল্প তেল-মশলায় মাছটি কম আঁচে ভাপিয়ে খাওয়া ভাল। এই মাছের সঙ্গে সব্জি, ভাত এসব দিয়েও খেতে পারেন।
তবে কোনো জিনিসই বেশি ভালো নয়। তাই কদিন খাবেন ইলিশ? সপ্তাহে এক বা দু’দিন ১ থেকে ২ পিস ইলিশ মাছ খাওয়া যেতে পারে। লিভার-কিডনির বা বিশেষ কোনও সমস্যা থাকলেও ইলিশ মাছ খাওয়া বারণ হতে পারে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের সম্মতি নেওয়া জরুরি।
তবে জেনে রাখুন, সকলের জন্য কিন্তু এই মাছ ভাল নয়। এতে ফ্যাটের মাত্রা বেশি। ফলে ওজন কমাতে চাইলে এই মাছ মেপে খাওয়া দরকার। যাঁদের ফ্যাট জাতীয় খাবার খাওয়া বারণ, তাঁদের ক্ষেত্রে এই মাছ বেশি চলবে না। কোলেস্টেরল খুব বেশি থাকলেও ইলিশ খাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া খুবই জরুরি বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন