সমকালীন প্রতিবেদন : পঞ্চায়েত স্তরে রাজ্য সরকারের সজল ধারা প্রকল্প মূলত গ্রামীণ এলাকায় বিশুদ্ধ পানীয় জল সরবরাহের উদ্দেশ্যে চালু হলেও, সেই প্রকল্পের জল পুর এলাকায় বেআইনিভাবে বিক্রির অভিযোগ ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল বনগাঁয়। মঙ্গলবার সকালে বনগাঁ পুরসভার মধ্যে জল বিক্রি করতে আসা এক ব্যক্তিকে হাতেনাতে ধরে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় জল ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গোপালনগর পঞ্চায়েত এলাকা থেকে সজল ধারা প্রকল্পের জল এনে তা বনগাঁ পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে বিক্রি করা হচ্ছিল দীর্ঘদিন ধরে। এদিন এক জলবাহী গাড়ি নিয়ে ওই জল বিক্রি করতে এলে জল ব্যবসায়ীরা ওই ব্যক্তিকে ঘিরে ধরে। অভিযোগ, এই জল কোনও আইএসআই বা স্বাস্থ্য পরীক্ষিত নয়। অথচ শহরের সাধারণ মানুষ না বুঝে তা কিনে ব্যবহার করছেন, যা স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়াতে পারে।
স্থানীয় এক জল ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সানি অধিকারীর দাবি, "আমরা পুর এলাকার বাসিন্দাদের কাছে সরকার নির্ধারিত নিয়মে জল পৌঁছে দিই। কিন্তু পঞ্চায়েত এলাকার এই জল একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী বেআইনিভাবে এখানে এনে বিক্রি করছে। এই বেনামী জলের কোনও আইএসআই, পিএসআই নম্বর নেই। এতে শুধু ব্যবসায়িক ক্ষতি হচ্ছে না, সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যেরও মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।"
আটক হওয়া ব্যক্তি জানিয়েছেন, "আমি গোপালনগরের বাসিন্দা মানবেন্দ্র দেবনাথের গাড়ির চালক। উনি জল নিয়ে যেতে বলেছিলেন, তাই এনেছি। এই জল কোথা থেকে এসেছে বা এখানে আনা বেআইনি কিনা, সে সম্পর্কে আমার কিছু জানা নেই।" ঘটনার খবর পেয়ে বনগাঁ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ওই জলবাহী গাড়িটিকে আটক করে।
এই ঘটনার পর থেকেই প্রশ্ন উঠেছে—কীভাবে সরকারি প্রকল্পের জল নিয়ম ভেঙে পুর এলাকায় বেচাকেনা হচ্ছে? কোথাও কি প্রশাসনিক গাফিলতি রয়েছে? জল এমন একটি মৌলিক অধিকার ও প্রয়োজন, যা নিয়ে কোনওভাবেই অনিয়ম সহ্য করা যায় না। সজল ধারা প্রকল্পের মতো জনকল্যাণমূলক উদ্যোগের অপব্যবহার রোধে প্রশাসনের আরও কঠোর হওয়া উচিত—এমনটাই মনে করছেন সচেতন নাগরিকেরা।
বনগাঁর জল ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, প্রথমবারের জন্য এদিন শেষপর্যন্ত জলের গাড়ির চালককে বুঝিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এরপরেও যদি সে বা অন্য কেউ ফের বনগাঁ শহরে ঢুকে এই ধরনের নকল জল বিক্রি করার চেষ্টা করে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন