Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই, ২০২৫

সিএএ-তে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন শিবির বাগদায়, শুরু রাজনৈতিক তরজা

 ‌

CAA-camp

সমকালীন প্রতিবেদন : এদের কেউ বাংলাদেশ থেকে এসেছেন ১৯৮৫ সালে, আবার কেউ এসেছেন ২০০৩ সালে। কিন্তু নানা কারণে ভারতের নাগরিক হিসেবে এখনও ভোটার কার্ড, আধার কার্ড করা হয়ে ওঠেনি। এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্র সরকার সিএএ আইন পাশ করেছে। আর সেখানে নির্দিষ্ট সময়সীমা উল্লেখ করে ভারতে বসবাসকারী সেইসব নাগরিকদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য আবেদন করার কথা বলেছে। এবার সেই সরকারি আবেদনে সাড়া দিলেন বাগদার মানুষ। 

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) অনুযায়ী নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য এবার উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা ব্লকের কনিয়াড়া ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে অনুষ্ঠিত হলো এই বিশেষ আবেদন শিবির। বিজেপির পক্ষ থেকে আয়োজিত এই শিবিরে এদিন সকাল থেকেই গ্রামবাসীদের দীর্ঘ লাইন চোখে পড়ে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সম্প্রতি দেশবাসীকে বারবার নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার আহ্বান জানিয়েছেন। সেই নির্দেশনামা মেনেই এবার মাটিতে নামল বিজেপি।

এই শিবিরের প্রধান উদ্যোক্তা বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা সৌরভ গোয়ালী। তাঁর উদ্যোগে চুয়াটিয়া বাজারে বসল এই বিশেষ ক্যাম্প। উপস্থিত ছিলেন বিজেপির অন্যান্য কর্মী ও স্থানীয় নেতৃত্ব। শিবিরে নাগরিকত্ব পেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের পরিচয়পত্র, পূর্বপুরুষের নথিপত্র এবং প্রয়োজনীয় বিবরণ যাচাই করে আবেদনপত্র পূরণে সহায়তা করা হয়। বিজেপি সূত্রের খবর, এই একদিনেই প্রায় শতাধিক মানুষ আবেদন করেছেন।

অনেকের মতে, তাঁরা দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের মাটিতে বসবাস করলেও নাগরিকত্ব সংক্রান্ত নথির জটিলতায় সমস্যায় পড়েছেন। সিএএ-র আওতায় তাঁদের নাগরিকত্ব নিশ্চিত হবে—এই আশায় তাঁরা আবেদন করছেন। আবেদনকারী স্থানীয় এক বাসিন্দা জানালেন, “আমার পরিবার ১৯৮৫ সাল থেকেই এই এলাকায় থাকছে। কিন্তু এখনও নাগরিকত্বের সুনিশ্চিত কাগজপত্র নেই। এই শিবির আমাদের অনেকটা ভরসা দিচ্ছে।”

বিজেপি নেতৃত্বের মতে, এ ধরনের শিবির শুধুমাত্র রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, এটি এক সামাজিক দায়িত্ব। বিরোধী দলনেতা সৌরভ গোয়ালী বলেন, “এই অঞ্চলে বহু মানুষ রয়েছেন, যাঁরা বছরের পর বছর ধরে নাগরিকত্ব সংক্রান্ত সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন। কেন্দ্র সরকারের উদ্যোগে তাঁদের স্থায়ী সমাধান মিলবে। আমরা শুধু তাঁদের পাশে দাঁড়াতে চাই।”

অন্যদিকে, এই শিবিরকে ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্কও তৈরি হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি ভোটের আগে সিএএ-কে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। তৃণমূল নেতা প্রসেনজিৎ ঘোষ জানান, “এটা বিজেপির রাজনৈতিক চমক। বিজেপির দ্বিচারিতা ভারতের মানুষ বুঝে গেছে। বাংলা তথা ভারতের নাগরিকদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে কেন্দ্র সরকার।”

নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (CAA) কার্যকর হওয়ার পর থেকেই রাজ্যজুড়ে এই নিয়ে রাজনৈতিক মতপার্থক্য চরমে। রাজ্য সরকার এই আইনকে বরাবরই বিরোধিতা করে এসেছে। অন্যদিকে বিজেপির দাবি, এই আইন বাস্তবায়িত হলে বহু মানুষ উপকৃত হবেন। ফলে গ্রামবাংলার রাজনীতিতে ফের নতুন করে উত্তাপ ছড়াতে শুরু করেছে সিএএ।‌



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন