Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শুক্রবার, ২৫ জুলাই, ২০২৫

বাগদায় শাশুড়িকে ‘মা’ পরিচয়ে ভোটার কার্ড! বাংলাদেশি জামাইয়ের নাগরিকত্ব নিয়ে চাঞ্চল্য

 

Bangladeshi-son-in-law

সমকালীন প্রতিবেদন : ভুয়ো ভোটারদের ধরতে প্রশাসন যখন তৎপর, ঠিক তখনই উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা ব্লক থেকে উঠে এল আরও এক বিস্ময়কর তথ্য। অভিযোগ, এক বাংলাদেশি নাগরিক শাশুড়িকে 'মা' পরিচয় দিয়ে ভারতীয় নাগরিকত্ব ও ভোটার কার্ড সংগ্রহ করেছে। প্রশাসনের ‌পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা এলাকায়।

ঘটনাটি ঘটেছে বাগদা থানার অন্তর্গত আশাঢ়ু গ্রাম পঞ্চায়েতের বাগি এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, রেজাউল মন্ডল নামে এক ব্যক্তি প্রায় তিন দশক ধরে ওই গ্রামে স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে বসবাস করছে। তার ভারতীয় পরিচয়পত্রও রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক এক ঘটনায় পুলিশি তদন্তে উঠে আসে রেজাউলের বাংলাদেশি পরিচয়। জানা গিয়েছে, রেজাউলের আসল বাড়ি বাংলাদেশের ঝিনাইদহ জেলায়। অভিযোগ, সে তার শাশুড়ি চেয়ার বানু মন্ডলকে নিজের ‘জৈবিক মা’ হিসেবে উল্লেখ করে ভারতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার তালিকায় নাম তুলেছে।

চাঞ্চল্য আরও বাড়ে, যখন রেজাউলের ছেলে ফিরোজ একটি মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, ফিরোজ ও তার বাবা রেজাউল–দু’জনেই বাংলাদেশের নাগরিক এবং ভারতের নাগরিকত্ব পাওয়ার কোনও বৈধ নথি তাদের নেই। রেজাউলের স্ত্রী জানিয়েছে, ৩০ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়েছে। তখন তিনি জানতেন না যে তার স্বামী একজন বাংলাদেশি। এখন তার ছেলে প্রেম করে এক মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে গিয়েছে বাংলাদেশে।

এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডল বলেন, "বাগদা ব্লকে এরকম কয়েকশো রেজাউল মন্ডল আছে। সবাই তৃণমূলের ভোটব্যাঙ্ক। অনুপ্রবেশকারীরা ভুয়ো নথি তৈরি করে নির্বিঘ্নে নাগরিকত্ব ও ভোটার কার্ড পেয়ে যাচ্ছে।" তবে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলেই উড়িয়ে দিয়েছে। 

তৃণমূল নেতা প্রসেনজিৎ ঘোষের বক্তব্য, "আমরা খবর নিয়ে জানতে পেরেছি যে, রেজাউলের ঘটনাটি বাম আমলের। সেই সময়েই সে টাকা দিয়ে অবৈধভাবে ভোটার তালিকায় নাম তুলে বাকি নথি তৈরি করিয়েছিল। বিজেপি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এলাকায় বিভ্রান্তি ছড়াতে চাইছে। আইন অনুযায়ী যেটা ঠিক, প্রশাসন সেটা করবেই।" প্রশাসন সূত্রে খবর, অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে রেজাউল ও তার পরিবারের নাগরিকত্ব সংক্রান্ত নথি ও ভোটার তালিকায় নাম তোলার পদ্ধতি।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী দলীয় নেতাদের ভুয়ো ভোটার চিহ্নিত করে প্রশাসনের কাছে তথ্য দিতে নির্দেশ দেন। এরপর থেকেই উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায় একাধিক সন্দেহভাজন ভোটারের খোঁজ মিলছে। এই ঘটনার পর আবারও প্রশ্ন উঠেছে, কীভাবে সীমান্ত পেরিয়ে এদেশে এসে দীর্ঘদিন ধরে অবাধে বসবাস করা এবং পরিচয়পত্র সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে? ভোটার তালিকা ও নাগরিকত্ব যাচাই প্রক্রিয়ার কার্যকারিতাও এবার নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে।‌









কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন