Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

মঙ্গলবার, ২৭ মে, ২০২৫

বাংলাদেশে শক্তি বাড়ছে জামাতের? নজিরবিহীনভাবে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ‌জামাত নেতাকে মুক্তি দিল আদালত

 ‌

Jamaat-leader-released

সমকালীন প্রতিবেদন : বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে সুপ্রিম কোর্ট খালাস দেওয়ার ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তাঁকে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১,২৫৬ জনকে হত্যা, অপহরণ, ধর্ষণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেয়। 

সেই রায়ের বিরুদ্ধে তিনি দীর্ঘদিন ধরে আপিল করে আসছিলেন। অবশেষে ২০২৫ সালের ২৭ মে ‌অর্থাৎ আজ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের বেঞ্চ ঐতিহাসিকভাবে সেই সাজা বাতিল করে তাকে খালাস দিল।

রায় ঘোষণার সময় আদালতে জামায়াতের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম এবং সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খানও আদালতে ছিলেন। রায়ের পর জামায়াত নেতা আজহারুল ইসলামের মুক্তিকে 'ন্যায়বিচারের বিজয়' হিসেবে অভিহিত করে দলটি তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ফের সক্রিয় হওয়ার ইঙ্গিত দেয়।

তবে এই রায় নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ও সামাজিক পরিসরে প্রশ্ন উঠেছে। বিভিন্ন সূত্রের দাবি, সরকারের উচ্চপর্যায়ে প্রভাব খাটিয়ে জামায়াত নেতারা এই রায় আদায় করেছেন। একটি শীর্ষস্থানীয় বিচারপতির বিদেশ সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে এক সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে একান্ত বৈঠক এবং জামায়াত আমির শফিকুর রহমানের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক যোগাযোগ অনেকের সন্দেহকে আরও উসকে দিয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই রায় বাংলাদেশের বিচার বিভাগের বিশ্বাসযোগ্যতার ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় বাতিল করে এই প্রথমবারের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত একজন আসামি খালাস পেল, যা বিচার বিভাগের ইতিহাসে নজিরবিহীন।

মানবাধিকার কর্মী ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সংগঠনগুলো এই রায়ের কঠোর সমালোচনা করে বলেছে, এটি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আঘাত করেছে। সরকার পক্ষ যদিও আপিলের বিরোধিতা করেনি, তবু স্পষ্টতই রাজনৈতিক সমঝোতা ও প্রভাবের ইঙ্গিত মিলছে।

উল্লেখ্য, এর আগেও গুরুতর অপরাধে দোষী সাব্যস্ত, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির মুক্তি নিয়ে বাংলাদেশে জল্পনা তৈরি হয়। ইউনুসের জমানায় তা প্রবণতায় পরিণত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এই রায় ভবিষ্যতে যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রক্রিয়ায় কী প্রভাব ফেলবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে এটি যে বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা ও রাজনীতিতে নতুন বিতর্কের দ্বার খুলে দিয়েছে, তা নিয়ে কোনো সংশয় নেই।





কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন