সমকালীন প্রতিবেদন : চাকরিহারাদের জন্য সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশনের পাশাপাশি নতুন করে চাকরির পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করছে রাজ্য সরকার। ফলে চাকরি ফিরে পেতে চাকরিহারাদের ফের পরীক্ষাতেই বসতে হবে। এক্ষেত্রে বেশ কিছু শর্তও রাখছে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার বিকেলে নবান্ন থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী।
২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগে সরব হয় রাজ্যের বিভিন্ন মহল। দীর্ঘদিন ধরে মামলাজটের পর অবশেষে সুপ্রিম কোর্ট ঐতিহাসিক নির্দেশে বাতিল করে দেয় গোটা প্যানেল। সেই নির্দেশ অনুযায়ী, এবার নতুন করে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ার উদ্যোগ নিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার।
এদিন নবান্নে এক সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী জানান, সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল ৩১ মে-র মধ্যে নতুন নিয়োগের বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে হলফনামা পেশ করতে হবে। সেই নির্দেশ মেনেই রাজ্য সরকার ৩০ মে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে চলেছে।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশ মেনে ২৪,২০৩টি শূন্যপদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তবে সরকার আরও অতিরিক্ত কিছু নতুন পদও তৈরি করেছে। ফলে মোট ৪৪,২০৩টি শূন্য পদে নতুন করে নিয়োগ হবে। এর মধ্যে নবম-দশম শ্রেণির জন্য ১১,৫১৭টি এবং একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির জন্য ৬,৯১২টি নতুন পদ তৈরি করা হয়েছে।
নতুন নিয়োগের খতিয়ান অনুযায়ী :
নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক : ২৩,৩৪৪ জন
একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক : ১২,৫১৪ জন
গ্রুপ সি পদ : ২,৯৮৯ জন
গ্রুপ ডি পদ : ৫,৪৮৮ জন
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ৩০ মে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবে। ১৬ জুন থেকে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হবে এবং ১৪ জুলাই পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। এরপর, ১৫ নভেম্বরের মধ্যে পরীক্ষা গ্রহণ ও ফল প্রকাশের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হবে। এবং ২০ নভেম্বর থেকে শুরু হবে কাউন্সেলিং পর্ব।
উল্লেখ্য, এসএসসি কেলেঙ্কারির কারণে গত কয়েক বছর ধরে রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছিল। হাজার হাজার চাকরিপ্রার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তায় ঝুলে ছিল। এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় তারা স্বস্তি পাচ্ছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণায় অবশ্য এখনই সন্তুষ্ট হতে পারছেন না আন্দোলনরত চাকরিহারা শিক্ষক–শিক্ষিকারা। এদিন রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা রাজ্য সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জও বটে। কারণ এই নিয়োগে স্বচ্ছতা, দ্রুততা ও যথাযথতা বজায় রাখাই এখন মূল লক্ষ্য।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন