সমকালীন প্রতিবেদন : আইপিএল মানেই নতুন নতুন তারকার উত্থান। হয়তো আইপিএল না হলে বুমরাহ বা বরুণ কিংবা রিঙ্কুর মতো তারকাকে এত তাড়াতাড়ি খুঁজে পাওয়া যেত না। এর মধ্যে অনেকেই আবার দারিদ্রতার বিরুদ্ধে লড়াই করে খুঁজে নিয়েছেন সাফল্যের সিঁড়ি। এবারের আইপিএল থেকেও এমন কিছু তারকার উত্থান ঘটেছে, যাদের লড়াইয়ের কাহিনী শুনলে যে কেউ অনুপ্রাণিত হবেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক এরকম কয়েকজন দেশীয় ক্রিকেটারের সম্পর্কে।
বৈভব সূর্যবংশী : মাত্র ১৩ বছর বয়সেই আইপিএলের মঞ্চে সুযোগ মিলেছে। মেগা নিলামে তাকে ১.১ কোটি টাকায় কিনে নিয়েছে রাজস্থান রয়্যালস। যদিও এই পথ পেরোতে অনেক লড়াই লড়তে হয়েছে এই 'বিস্ময় প্রতিভা'কে। তার বাবা একজন কৃষক। ছেলেকে ক্রিকেটার বানাতে নিজের জমিও পর্যন্ত বিক্রি করে দিয়েছেন।
ভিগনেশ পুথুর : ২৪ বছরের এই ক্রিকেটারকে ৩০ লক্ষ টাকার বেস প্রাইসে দলে নিয়েছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। তাঁর জীবনের লড়াইও অন্যের অনুপ্রেরণা হতে পারে। অটোরিকশা চালিয়ে জীবন গুজরান করেন তাঁর বাবা। আর্থিক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও ছেলেকে ক্রিকেটার তৈরি করতে তাঁদের ভূমিকা অনস্বীকার্য।
অঙ্গকৃষ রঘুবংশী : ২০ বছরের এই ক্রিকেটারকে ৩ কোটি টাকায় কিনে নিয়েছে কেকেআর। তাঁর মা-বাবা দু'জনেই ক্রীড়াবিদ। তাঁদের কাছ থেকেই ক্রিকেটের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। আইপিএলে ইতিমধ্যেই নজর কেড়েছে তাঁর ব্যাট।
সূর্যাংশ শেডগে : ২২ বছরের এই ক্রিকেটারকে ৩০ লক্ষ টাকার বেস প্রাইসে কিনে নিয়েছে পাঞ্জাব কিংস। নিলামের খবর পেয়ে তাঁর মা-বাবা ছিলেন একটা বিয়েবাড়িতে। নিলাম অনুষ্ঠান দেখার জন্য তাঁরা নির্জন কোনে চলে গিয়েছিলেন।
আয়ুষ মাত্রে : কিছু দিন আগে রুতুরাজ গায়কোয়াড়ের জায়গায় ৩০ লক্ষ টাকায় আয়ুষ মাত্রেকে দলে নেয় চেন্নাই সুপার কিংস। ১৭ বছরের এই ক্রিকেটারকে সবসময় মানসিকভাবে সমর্থন জুগিয়ে এসেছে তার মা-বাবা। দাদাও যথাসাধ্য করেছেন। যদিও কখনও আর্থিক কষ্টের কথা তাঁকে বুঝতে দেওয়া হয়নি। আয়ুষকে তার বাবা রোজ অনুশীলনে নিয়ে যেতেন।
অশ্বিনী কুমার : ২৩ বছরের এই ক্রিকেটারকে ৩০ লক্ষ টাকায় দলে নিয়েছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। রোদ-ঝড়-জল উপেক্ষা করে অনুশীলনে নিজেকে ডুবিয়ে রাখতেন। কখনও সাইকেল চালিয়ে আবার কখনও অটোতে মুলানপুরে নতুন স্টেডিয়ামে যেতেন অশ্বিনী। এমন কথা সংবাদমাধ্যমের সামনে তুলে ধরেছেন তাঁর বাবা।
দিগ্বেশ রাঠি : ২৫ বছরের এই ক্রিকেটারকে ৩০ লক্ষ টাকার বেস প্রাইসে কিনে নিয়েছে লখনউ সুপার জায়ান্টস। ক্রিকেটার ছিলেন তাঁর দাদাও। পরিবারকে সাহায্যের কারণে ক্রিকেট ছেড়ে দিতে হয়েছিল তাঁকে। অর্থ বা যশ কোনওটাই সেভাবে ছিল না। তাই অত্যন্ত প্রতিকূলতার মধ্যে কেটেছে দিগ্বেশের জীবন। সেখান থেকেই উঠে আসা। আইপিএলে তাঁর অসাধারণ বোলিং তো বটেই, নজর কেড়েছে তাঁর নোটবুক সেলিব্রেশনও।
হয়তো আগামীতে এভাবেই আরও তারকা উঠে আসবেন ভারতীয় ক্রিকেটে, যা থেকে লেখা হবে ভারতীয় ক্রিকেটের স্বর্ণযুগের সাফল্যের গল্প।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন