Breaking

Post Top Ad

Your Ad Spot

শুক্রবার, ৭ মার্চ, ২০২৫

‌'ফেল'‌ করা ওষুধের তালিকা দীর্ঘ, ব্যবহারকারীর পাশ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা

'Failed'-medicine

সমকালীন প্রতিবেদন : কতগুলো 'ফেক' মেডিসিন চলে গেছে আপনার শরীরে? জানেন, এরপর ঠিক কি প্রতিক্রিয়া হতে পারে আপনার? কেন আরও আগে পদক্ষেপ করল না সেন্ট্রাল ড্রাগ রিসার্চ ল্যাবরেটরি, প্রশ্ন বিশেষজ্ঞদের। কোন কোন রোগের ওষুধ রয়েছে এই তালিকায়? আদতে কি কি সমস্যা রয়েছে এই ফেক মেডিসিনগুলোতে? বিস্তারিত থাকছে আজকের এই প্রতিবেদনে।

কেন্দ্রীয় ওষুধ সংস্থার তালিকা অনুযায়ী যেসব ওষুধ ব্যবহারে অযোগ্য বলা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে কোন কোন রোগের ওষুধ? প্রথমে ফোকাস করব সেদিকে।

১. রক্ত জমাট বাধা ঠেকাতে ব্যবহৃত হওয়া ওষুধ‌।

২. হাড়ের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হওয়া ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট।

৩. বাতের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হওয়া ইঞ্জেকশন।

৪. শরীরে আয়রনের ঘাটতি বাড়াতে ব্যবহৃত হওয়া ইঞ্জেকশন।

৫. অস্ত্রোপচারের সময় ব্যথা কমাতে ব্যবহৃত হওয়া ইঞ্জেকশন।

৬. ডায়াবেটিসের ওষুধ।

৭. ফুসফুসের অসুখে ব্যবহৃত হওয়া অ্যান্টিবায়োটিক ইঞ্জেকশন।

৮. প্যাকেটজাত খাবার দীর্ঘদিন একইরকম রাখতে ব্যবহৃত হওয়া ওষুধ।

৯. কাফ সিরাপ।

১০. চোখের সংক্রমণ, কর্নিয়ার সমস্যায় ব্যবহৃত হওয়া ওষুধ।

১১. ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ঠেকাতে ব্যবহৃত ওষুধ।

১২. সাধারণ স্যালাইন।

১৩. খিঁচুনি কমাতে ব্যবহৃত ওষুধ।

১৪. ভিটামিন বি-র ঘাটতি ঠেকাতে ব্যবহৃত ওষুধ।

১৫. খাদ্যনালীর সমস্যা সংক্রান্ত চিকিৎসার ওষুধ।

১৬. বসন্তের টিকা।

১৭. ক্ষুদ্রান্তের সমস্যার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধ।

১৮. ব্যাকটেরিয়া এবং পরজীবী সংক্রমণ ঠেকাতে ব্যবহৃত ইঞ্জেকশন।

১৯. ক্যালসিয়ামের ইঞ্জেকশন।

২০. ফোলা কমানোর ইঞ্জেকশন।

২১. বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন ট্যাবলেট।

ভাবতে পারছেন? একের পর এক এতোগুলো রোগের ওষুধ পরীক্ষায় ডাহা ফেল। সমস্যা হল, এইসব ওষুধের বেশিরভাগই মানুষের শরীরে চলে গিয়েছে। ঠিক এখান থেকেই শুরু হচ্ছে টেনশন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সেন্ট্রাল ড্রাগ রিসার্চ ল্যাবরেটরি মঙ্গলবার ১৪৪ টি ওষুধ, ইঞ্জেকশনের গুনগত মান নিয়ে প্রশ্ন তুলে বাতিল করে। সেই ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে আরও ১৩৪ টি ওষুধ, ইঞ্জেকশন এবং স্যালাইনের গুণগত মান সঠিক নয় বলে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। 

জানিয়ে দেওয়া হল, বাজার চলতি নামি সংস্থার, নামি ব্র্যান্ডের এই ১৩৪টি ওষুধ, ইঞ্জেকশন এবং স্যালাইনকে ব্যবহারের অযোগ্য বলে ঘোষণা করল কেন্দ্রীয় ড্রাগ কন্ট্রোল বিভাগ বা CDSCO। ঘটনা হল, এই ১৩৪টি ওষুধের মধ্যে কলকাতার বিভিন্ন ওষুধের দোকান অথবা উৎপাদক সংস্থার ডাহা ফেল করা ওষুধ রয়েছে ২৩ টি। গোটা বিষয়টা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। রোগীদের স্বাস্থ্য নিয়ে বাড়ছে দুশ্চিন্তা। কারণ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এইসব ওষুধ যাঁদের দেওয়া হয়েছে, তাঁদের শরীরে বিপরীত প্রতিক্রিয়া হতেই পারে। তাই বিষয়টা হালকা ভাবে নেওয়ার মতো নয়, বরং যথেষ্ট উদ্বেগজনক।

কারণ, যে ওষুধগুলো পরীক্ষায় ডাহা ফেল করেছে, সেগুলোর কোথাও প্যাকেটের গায়ে নাম লেখা এক, ভেতরে ওষুধ আছে আরেক। কোনও ট্যাবলেট খাবার পর শরীরে গিয়ে দ্রবীভূত হচ্ছে না। শক্তই থেকে যাচ্ছে। কোনটায় যে পরিমাণ ওষুধ আছে বলে দাবি করা হচ্ছে, তার মাত্রা কম। কোনও ওষুধ আবার গোটাটাই ভেজাল। কোনও ওষুধ নিম্নমানের। কোনও ওষুধে মিশে রয়েছে অপ্রয়োজনীয় পদার্থ। 

কোনওটা আবার সঠিকভাবে পরিশোধন করা তরল দিয়ে বানানো হয়নি। কোনও ট্যাবলেটের গায়ে কালো কালো ছোপ। কোনও ট্যাবলেট ক্যাপসুলের ল্যামিনেশনের ত্রুটি আছে। কোনও কোনও ওষুধ ড্রাগ কন্ট্রোলের গাইডলাইনের বাইরে গিয়ে বানানো হয়েছে। কোথাও একই স্ট্রিপে থাকা কিছু ট্যাবলেট এক রংয়ের, কিছু ট্যাবলেট আবার অন্য। 

কোনও কোনও ওষুধ নামী সংস্থার ব্র্যান্ড জাল করে বানানো। তাই, বিষয়টা সামনে আসার পরেই এবার সেই ‘ফেল’ করা ওষুধ নিয়ে আসরে রাজ্যের স্বাস্থ্যভবন। ‘ফেল’ করা ওষুধগুলিকে নিয়ে সর্তকবার্তা জারি করল তারা। বিজ্ঞপ্তি জারি করে রাজ্যের হোলসেলার ও খুচরো ওষুধ ব্যবসায়ীদের এই ‘ফেল’ করা ওষুধ বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্যসচিব। 

তবে শুধুই নোটিস দিয়ে কিন্তু ক্ষান্ত হয়নি তারা। জানা গিয়েছে, বিজ্ঞপ্তি জারির পরেও কোনও খুচরো ব্যবসায়ী বা হাসপাতাল এই ‘ফেল’ করা ওষুধ ব্যবহার করছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখতে পরিদর্শনে নামবে রাজ্যের ড্রাগ কন্ট্রোল। যদি কেউ সেই ‘বিক্রি বন্ধের’ নির্দেশিকা অমান্য করেন, সেক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানাচ্ছে স্বাস্থ্যভবন।‌

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন