সমকালীন প্রতিবেদন : ভালোবাসা একসময় ছিল, সম্পর্কও ছিল গভীর। কিন্তু সময় বদলে গেছে, বদলে গেছে মানুষের মনও। উত্তর ২৪ পরগনার গোপালনগরের মেহেরপুর এলাকায় যা ঘটল, তা যেন কল্পনাকেও হার মানায়! বছর ২৮-এর যুবক হামজা মন্ডল হয়তো ভাবতেই পারেননি, একদিন যাকে ভালোবেসেছিলেন, তার হাতেই এমন ভয়ংকর পরিণতি অপেক্ষা করছে তার জন্য!
প্রেম, বিচ্ছেদ আর প্রতিহিংসার চরম পরিণতি!
দুই বছর আগে আসমাতারা বিবির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল হামজা মন্ডলের। কিন্তু সেই সম্পর্ক ভেঙে যায়। সম্পর্ক শেষ হলেও শেষ হয়নি হিসেব! আসমাতারার কাছে কিছু টাকা পাওনা ছিল হামজার। তাই ৭ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি যান আসমাতারার বাড়িতে, শুধুমাত্র পাওনা টাকা ফেরত নিতে। কিন্তু সেই রাতই তার জীবনের সবচেয়ে বড় অভিশাপ হয়ে উঠল!
ঘরের ভেতরে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিত আক্রমণ!
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হামজা মন্ডল আসমাতারার বাড়িতে পৌঁছাতেই শুরু হয় তর্ক-বিতর্ক। কথার লড়াই ক্রমশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অভিযোগ, হঠাৎই আসমাতারা ও তার স্বামী আব্বাস মন্ডল ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা কার্যকর করে! হামজার ওপর ছুড়ে মারা হয় অ্যাসিড!
চিৎকার করে ওঠেন হামজা। মুহূর্তের মধ্যে তার শরীরের একাংশ পুড়ে যায়। সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয় তার চোখে! একটি চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়, আরেকটি চোখও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়! বাঁচার জন্য ছুটে গেলেন, কিন্তু ঘোর অন্ধকারে তলিয়ে গেল ভবিষ্যৎ!
প্রতিবেশীরা ছুটে এসে তাকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করেন। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ফিরে এসেছেন হামজা, কিন্তু তার পৃথিবী আজ চিরতরে অন্ধকার! বিচারের জন্য থানায় অভিযোগ, কিন্তু কেন এত হিংসা? হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েই হামজা গোপালনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
হামজার দাবি, এটি নিছক টাকা-পয়সার বিষয় ছিল না, বরং পরিকল্পিত প্রতিশোধ! স্থানীয়দের একাংশের মতে, আসমাতারা বিবির স্বামী আব্বাস মন্ডল তাদের পুরনো সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহ করতো। আর সেই রাগের শিকার হতে হলো হামজাকে!
পুলিশ ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। গ্রামে এই ঘটনা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। একটা সম্পর্ক ভেঙে গেলে কি এভাবেই শেষ হয় সবকিছু? নাকি প্রতিশোধের আগুন এতটাই অন্ধ, যা মানুষের জীবনকেই গ্রাস করে নিতে চায়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন