সমকালীন প্রতিবেদন : বিজয়া বা বিজয় দশমী হিন্দু ধর্মের অন্যতম প্রধান উৎসব যা ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং অন্যান্য দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে মহা ধুমধামের সাথে পালিত হয়।
বিজয় দশমী হলো সনাতন ধর্মের অন্যতম পবিত্র ও আনন্দের দিন, যেদিন মা দুর্গার দশমীতে বিজয় সূচিত হয়। এদিন দেবী দুর্গা মহিষাসুরের ওপর জয় লাভ করেছিলেন এবং অশুভ শক্তির বিনাশ করে শুভ শক্তির জয়গান গেয়েছিলেন।
মিষ্টি খাওয়ানো এবং বিজয়ের আনন্দ
বিজয় দশমী উপলক্ষে প্রধানত সবার মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। মিষ্টি খাওয়া বা খাওয়ানো আমাদের সংস্কৃতির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ, বিশেষ করে কোনো বিজয়ের আনন্দে।
এটি হলো আনন্দের বহিঃপ্রকাশের প্রতীক। মানুষ একে অপরের মধ্যে মিষ্টি বিনিময়ের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে সুখ ও সমৃদ্ধি কামনা করেন। মিষ্টি দেওয়ার মাধ্যমে সম্পর্কের উষ্ণতা বাড়ে এবং সামাজিক সম্পর্কগুলো দৃঢ় হয়।
প্রণাম ও বড়দের আশীর্বাদ
বিজয় দশমীর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো গুরুজনদের প্রণাম করা এবং তাদের কাছ থেকে আশীর্বাদ নেওয়া। প্রাচীনকাল থেকেই গুরুজনদের সম্মান প্রদর্শন আমাদের সংস্কৃতির একটি মূল অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। এদিন ছোটরা বড়দের প্রণাম করে এবং তাদের কাছ থেকে আশীর্বাদ লাভ করে, যা তাদের জীবনের সাফল্য ও সমৃদ্ধির পথকে সুগম করে।
বিজয়ার বিশেষ তাৎপর্য
বিজয় দশমীর দিনটি ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু একটি ধর্মীয় আচার বা উৎসব নয়, বরং এটি প্রতীকীভাবে নৈতিকতার বিজয়, সাহস ও ধৈর্যের প্রতীক।
মহিষাসুর নামক শক্তিশালী অসুরের বিরুদ্ধে দেবী দুর্গার বিজয় হলো মানুষকে প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর অনুপ্রেরণা দেয়। আজকের দিনে সমাজে যেসব অনৈতিকতা ও অন্ধকার রয়েছে, সেগুলো থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বিজয় দশমী আমাদের শিক্ষার বার্তা দেয়।
সমগ্র সমাজের মিলন
বিজয় দশমীর দিন শুধু ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি সমাজের সব শ্রেণি ও ধর্মের মানুষের মধ্যে বন্ধন তৈরি করে। মানুষজন একসাথে বিজয়ের আনন্দ ভাগাভাগি করে এবং এতে সকলের মধ্যে সমতা, সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বাতাবরণ সৃষ্টি হয়।
এই দিনে সামাজিক বিভাজন মুছে যায় এবং এক অনন্য উৎসবের রূপ ধারণ করে। বিজয় দশমী, এভাবে সনাতন সংস্কৃতির মধ্য দিয়ে মানুষকে অনুপ্রাণিত করে চলে আসছে যুগের পর যুগ, যা মানুষকে আশার আলো দেখায় এবং সমাজে নৈতিকতার গুরুত্বকে তুলে ধরে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন